যেসকল মানুষ কোনো আবেগপ্রবণ রোমান্টিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলতে চায়, একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তারা সাধারণত সংবেদনহীন এবং অতিরিক্ত সংরক্ষণশীল পরিবার থেকে এসেছে।
অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যে মানুষেরা তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে অতিরিক্ত কম বা বেশি মনোযোগ পেয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সম্পর্কের ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখা গেছে।
গবেষণার প্রায় এক-চতুর্থাংশ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সম্পর্ক এড়িয়ে চলার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে অর্থাৎ তারা কোনো সম্পর্কে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া পছন্দ করছে না এবং এমন ধরনের সঙ্গীও পছন্দ করছে না।
একজন মানুষের মধ্যে এড়িয়ে চলার মানসিকতা গড়ে ওড়ে সাধারণত যখন তাদের জীবন পরিবারের কাছের সদস্য, বিশেষ করে তাদের বাবা-মায়ের দ্বারা কঠোরভাবে পরিচালিত হয়। অপরদিজে, এর বিপরীত আচরণ অর্থাৎ অতিরিক্ত উদাসীনতা এরূপ মানসিকতা তৈরি করতে পারে।
সংবেদনহীন বাবা-মা সম্পর্কের প্রতি কম উষ্ণতা প্রদর্শন করে থাকেন এবং এটা মানসিক দূরত্ব তৈরি করে থাকে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই সন্তানদের এড়িয়ে চলেন এবং সন্তানদের কাছে তাদের চাহিদাও কম থাকে। উভয় ধরনের আচরণ পরবর্তীতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে এড়িয়ে চলার মানসিকতা গড়ে তোলে।
এই গবেষণার মূল গবেষক জানান, এড়িয়ে চলার মানসিকতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তি তার জীবনে এমন ব্যক্তিকে আশা করেন যে তাকে সমর্থন জানাবে ও তাকে তার মতো করে গ্রহণ করবে এবং তার চাহিদাগুলোর সাথে পরিচিত হবে কিন্তু তার ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলো যেন ধরা না পড়ে যায় সেই আশা করবে।
এড়িয়ে চলার মানসিকতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তির মধ্যে “মা-শিশু” এর ঘনিষ্ঠতা তৈরির একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। অন্যভাবে বলা যায়, তারা মূলত এমন মানুষের সন্ধান করে না, যারা মানসিকভাবে পরিপক্ব। বরং তারা একজন “মা” অথবা “বাবা” চরিত্রের সন্ধান করে, যে তাকে যত্ন করবে।
এই গবেষকরা জানিয়েছেন, এড়িয়ে চলার মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তির তাদের সঙ্গীর নিকট থেকে শিশুর মতো মানসিক যত্ন দরকার। একজন মা অথবা বাবার মতো সমর্থন সে তার সঙ্গীর থেকে আশা করে।
এরূপ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যেকোনো ধরনের প্রত্যাখ্যানকে ভয় পায়, এজন্য আগে থেকেই যেকোনো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগেই কাছের সম্পর্ক সীমাবদ্ধ করে ফেলে।
এড়িয়ে চলার মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা গভীর সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তা এবং গভীর সম্পর্কের প্রতিরক্ষা এই দুইয়ের মধ্যে চলমান সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে।
তথ্যসূত্র: স্প্রিং ডট অর্গ ইউকে-তে প্রকাশিত এর রচনা অবলম্বনে লিখেছেন সুপ্তি হালদার।
লিংক: https://www.spring.org.uk/2018/06/commit-to-a-relationship.php