বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশান অন ডিজ্যাবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এডিডি) ইন্টারন্যাশনাল এর উদ্যোগে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘মেন্টাল হেলথ ফোরাম’ এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১০ ডিসেম্বর (সোমবার) এডিডি ইন্টারন্যাশনাল এর বনানী অফিসের মিটিং রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিআরপি, নাসিরউল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট, ডিআরআরএ, এসিড সার্ভাইভাল ফাউন্ডেশন, আইসিডিডিআরবি, সিবিএম ইন্টারন্যাশনাল, সিডিডি, উৎস-চট্রগ্রাম, ইনসেপ্টা ফার্মা সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে এজন্ডো তুলে ধরে এডিডি ইন্টারন্যাশনাল এর প্রোজেক্ট ম্যানেজার নাজমুন নাহার জানান, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে গ্রামীণ পর্যায়ে এখনও প্রচন্ড পরিমানে অসচেতনতা রয়েছে। এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বেশিরভাগই শহর কেন্দ্রিক। এই প্রেক্ষাপটে ২০০৯ সাল থেকে ঢাকাসহ ছয়টি জেলায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। আগামীতে এই সেবা আরো বেশি বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
নাজমমুন নাহার বলেন, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্তদের মধ্যে মানসিকভাবে অসুস্থরা সামাজিকভাবে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। সুষ্ঠ পরিবেশ ও সঠিক সেবা পেলে এইসব রোগীদেরকে স্বাভাবিক জীবনধারায় ফিরিয়ে উৎপাদনমুখী কর্মকান্ডে সংযুক্ত করা সম্ভব।
সংসদে মানসিক স্বাস্খ্যসেবা বিল পাশ হওয়ায় এই আইন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও এনজিওদেরকে ধন্যবাদ জানানো হয়। তবে দেশে নির্বাচন কালীন সরকার থাকায় এই আইনের অসংগতি ও অসামঞ্জস্য নিয়ে আপতত কোন পদক্ষেপ না নেওয়া গেলেও নির্বাচনের পরে সরকারের কাছে এবিষয়ে দাবি তোলা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় এসিড সার্ভা্ইভাল ফাউন্ডেশনের সাইকোথেরাপিস্ট ফারজানা শারমিন বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থতা ও আত্মহত্যা সংক্রান্ত ইস্যুতে শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে সামাজিক ও গণমাধ্যমের সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এ সংক্রান্ত ইস্যুতে শব্দ ব্যবহারে গণমাধ্যমগুলোকে সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে উদ্যোগী হওয়ার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতি প্রদান করা হবে বলে একমত হন অংশগ্রহনকারীরা।
এ প্রসংগে সিআরপি এর কো-অর্ডিনেটর রাজিয়া সুলতানা বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিদেশি শব্দ ব্যবহৃত হয়। এসব শব্দের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে কি ধরনের বাংলা শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে সে বিষয়টি নিয়েও সকলকে ভাবার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
সভায় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের তথ্য আদান প্রদানের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পেজ খোলার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ‘মেন্টাল হেলথ ফোরাম’ এর সভাগুলোতে সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্ট প্রকাশনাসমূহ একে অপরের সাথে বিনিময়ের সিদ্ধান্ত হয়।
সভার শুরুতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের পরিচয় প্রদান করেন। পরিচয় পর্বে চট্রগ্রাম থেকে আসা সংগঠন উৎস এর প্রতিনিধি সুমন সরকার জানান, তারা মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ে সাইকোথেরাপি ড্রামা করছে। সভায় অংশগ্রহণকারী সকলে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের জন্য উৎস এর প্রশংসা করেন।
সভার শেষে সকলের সাথে কুশল বিনিময় করেন এডিডি ইন্টারন্যাশনাল এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম। সভায় অংশগ্রহণের জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান।
Great initiative.