টানা দ্বিতীয়বারের মত স্যান ফ্রেইজার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে হাঁটবেন। গত বছর তিনি উত্তরপূর্ব কলাম্বিয়া এর ছেটওয়াইন্ড থেকে ডাওসন ক্রিক পর্যন্ত হেটেছিলেন। এই বছর তিনি বি সি থেকে ক্যালগেরি যাওয়ার পথে গ্র্যান্ড প্রেইরি পার হয়ে আলবার্তা পর্যন্ত হাঁটবেন।
ফ্রেইজার জুন মাসের ৩০ তারিখে ছেটওয়াইন্ড থেকে যাত্রা শুরু করেছেন। সেখান থেকে তিনি আগস্ট মাসের ৩ তারিখ ক্যালগেরি যাওয়ার আগে যাবেন ডাওসন ক্রিক, গ্র্যান্ড প্রেইরি, ভ্যালিভিউ, হোয়াইটকোর্ট, ড্র্যাইটন ভ্যালি, রকি মাউন্টেন হাউস, সান্ড্রে এবং কক্রেইন। তিনি জুলাই মাসে ৩ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে জি পি তে থাকার আশা করছেন।
ক্যালগেরি ফ্রেইজার এর জন্য খুবই বিশেষ জায়গা কেননা সেখানে তার মেয়ে বসবাস করে। এবং সে তার অতীতে উদ্বিগ্নতা এবং বিষণ্নতায় ভুগেছে। আর এটিই তার ‘ওয়াক উইদ মি’ যাত্রা শুরু করার কারণ। ফ্রেইজার বলেন, “তার বিষণ্ণতাটাকে আমি বুঝি নি, সে যখন বড় হতে লাগল আমি এই বিষণ্নতাকে তার বেড়ে উঠা এবং বয়ঃসন্ধিকালের অংশ হিসেবে ধরে নিলাম। আমি ওর সমস্যাটিকে আসলে যেভাবে দেখা উচিৎ ছিল সেভাবে দেখি নি”।
ফ্রেইজার তার হাঁটার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চান বিশেষ করে উদ্বিগ্নতা এবং বিষণ্ণতার ব্যাপারে। এবং এই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সামাজিক ভ্রান্তি আছে তা তিনি দূর করতে চান।
কানাডিয়ান মেন্টাল হেলথ এসোসিয়েশন এর গ্র্যান্ড প্রেইরিতে আয়োজিত মোবাইল এডিকশন আউটরিচ প্রোগ্রামে পেনি নিউহুক বলেন, “বিষণ্ণতা মানুষকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে পারে তাদের মনে নানা ধরণের চিন্তার সৃষ্টি করতে পারে যেমন নিজেদের মূল্যহীন মনে করা, আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করা, একাকীত্ব বোধ করা আর মাঝে মাঝে খুব উদ্বিগ্নতার সৃষ্টি করা। আর এসবের সাথে মানিয়ে চলার জন্য মানুষের মধ্যে নানা ধরণের আসক্তির দেখা দেয় বিশেষ করে মাদকাসক্তি”। তিনি আরও বলেন, “ একজন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার রোগীর সাথে যদি কেউ কথা বলে, তাকে সময় দেয়, তাকে বুঝে তাহলে তা তাকে অনেক সাহায্য করে। অনেক মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটি বুঝে না যার ফলে বিষয়টি যত টা না জটিল তার চাইতে অনেক বেশি জটিল করে ফেলে”।
ফ্রেইজার হাঁটার সাথে বিষণ্ণতা এবং উদ্বিগ্নতার যোগসূত্রটি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “আপনি ১০ কিলোমিটার রাস্তার দিকে তাকান যা আপনি গাড়ি চালিয়ে গেলে মাত্র ১০ মিনিট লাগবে। কিন্তু এতখানি রাস্তা হেটে যাওয়ার জন্য অনেক প্রচেষ্টার প্রয়োজন। পয়েন্ট এ থেকে বি তে যাওয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন আর এক বারে আপনি এক কদম এগুতে পারবেন। বিষণ্ণতা আর উদ্বিগ্নতার ক্ষেত্রেও এভাবেই কাজ করতে হবে আপনাকে এক বারে এক কদম করে আগাতে হবে। হুট করেই সব ঠিক হয়ে যাবে না সময় দিতে হবে”।
‘ওয়াক উইথ মি’ এর সংগঠকরা ফ্রেইজার যখন গ্রান্ড প্রেইরি তে পৌঁছাবে তখন তাকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন। তারা অত্র যাত্রার খরচ কমানোর জন্য স্পন্সর খুঁজছেন। যারা ২০ ডলারের বেশি দান করছেন তাদের অনুরোধের ভিত্তিতে ট্যাক্স রশিদ প্রদান করা হবে।
ফ্রেইজার মানুষকে উৎসাহিত করছেন যে কেউ চাইলেই তার সাথে হাঁটতে এবং কথা বলতে পারে। এবং সেই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার মাধ্যমে অন্যদের উৎসাহিত করতে পারে।
তথ্যসূত্র-
(http://www.dailyheraldtribune.com/2017/07/03/mental-health-focus-of-walk)
কাজী কামরুন নাহার, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম