মহামারীর সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের সহায়ক কৌশল

0
78
মহামারীর সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের সহায়ক কৌশল
মহামারী থেকে বাঁচতে সব সময় ঘরে আবদ্ধ থাকা আমাদের সবার জন্যই মানসিক পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই ঘরে আবদ্ধ থাকার সময়টাতে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে মানসিক পীড়ার মাত্রা বেশ কমানো যায় এবং সফলভাবে এই মহামারী প্রতিরোধ করাও সম্ভব হয়।

মানুষ সামাজিক জীব হওয়ায় কোভিড-১৯ এর জন্য এই গৃহবন্দী জীবন সবার জন্যই বেশ হতাশাজনক এবং চ্যালেঞ্জিং। প্রায় সারাক্ষণ ঘরে আবদ্ধ থাকা মানুষের জন্য শুধু শারীরিক চ্যালেঞ্জর কারণই নয় বরং মানসিক চ্যালেঞ্জের কারণও বটে। এই শারীরিক চ্যালেঞ্জগুলোর সাথে সাথে মানসিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মূল মন্ত্র হল শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপন করা এবং ইতিবাচক চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটানো। এখানে আমরা কিছু সহজ পরামর্শ সম্বন্ধে জানব যা আমাদের দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ কমিয়ে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করবে।

  • এই জোরপূর্বক গৃহবন্দী সময়ে শরীর চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার নিয়মিত ঘরে বসে শরীর চর্চার অভ্যাস পূর্বেই থেকে থাকে তাহলে সেগুলোর সাথে নতুন কিছু শরীর চর্চার অভ্যাসও গড়ে তুলতে পারেন। এতে আপনার সময় বেশ ভাল কাটবে। একই সাথে শরীর এবং মনও সুস্থ থাকবে।
  • বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা এবং অনুভূতি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার বেশ উপকারী এবং কার্যকরী উপায় হল নিজের ঘর, আসবাব পত্র সহ অন্যান্য সব কিছু গুছিয়ে পরিপাটি করে রাখা। এতে করে নিজের আত্ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়ে, মনোযোগ অন্য দিকে কেন্দ্রীভূত হয় এবং নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকেও দূরে থাকা যায়।
  • নিজের পেশাগত কাজে মনোনিবেশ করুন। ঘরে বসে করা যায় এমন কাজগুলো আপনার মস্তিষ্ককে কিছু স্পষ্ট এবং বাস্তব ধর্মী বিষয়ে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে সাহায্য করে। যখন এসব বিষয়ে আপনি আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেন, আপনার মধ্যে স্বভাবতই নেতিবাচক চিন্তাভাবনার পরিমাণ কমে যায় এবং আপনি অত্যধিক দুশ্চিন্তা মগ্ন অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।
  • এছাড়াও আপনি নিজের ও পরিবারের পছন্দসই খাবার রান্না করতে পারেন। এটিও আপনাকে দুশ্চিন্তামুক্ত সময় কাটাতে সাহায্য করবে। এতে আপনি যেমন নিজে মানসিক সন্তোষ খুঁজে পাবেন তেমনি আপনার পরিবারের মানসিক সন্তুষ্টির কারণও হয়ে উঠতে পারবেন।
  • মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে নিজ নিজ ধর্মীয় ক্রিয়া কর্ম গুলোর চর্চাও করতে পারেন। মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এমন মন্ত্র পাঠ করতে পারেন। এতে আপনার নিজের মাঝে আধ্যাত্মিক ভাব ধারার বিকাশ ঘটবে যা আপনার মাঝে  থাকা সব রকম নেতিবাচক ধ্যান ধারণা দূর করতে সাহায্য করবে।
  • একা একা না থেকে পরিবারের অন্য সবার সাথে যতোটা সম্ভব অধিক সময় অতিবাহিত করতে চেষ্টা করুন। এতে গৃহ বন্দী থাকার এই সময়টা অনেক ভাল কাটবে এবং সবার মাঝে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে, মানসিক চাপ হ্রাস পাবে এবং শরীর ও মন ভাল থাকবে।

যে কোন কাজে যখন বাধ্যবাধকতা জুড়ে দেওয়া হয় তখন  অতি স্বাভাবিকভাবেই সে কাজ মানসিক পীড়ার কারণ হয়ে ওঠে। এতে আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন অনেকটাই বেসামাল হয়ে ওঠে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী মহামারীর এই দুঃসময়ে সামাজিকতা বর্জন করে ঘরে থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই যখন একমাত্র করণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন আমাদেরকে নিজেদের ও অন্যান্যদের স্বার্থে ঘরে আবদ্ধ থেকেই স্বাভাবিক জীবন যাপন করার প্রচেষ্টা করতে হবে। শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হবে।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleবিষণ্ণতা একটি নিরাময়যোগ্য মানসিক রোগ
Next articleশিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here