জীবনে সফলতা চাইলে প্রাত্যহিক কাজে একাগ্রচিত্তে মনোনিবেশ জরুরী

0
169
জীবনে সফলতা চাইলে প্রাত্যহিক কাজে একাগ্রচিত্তে মনোনিবেশ জরুরী
মানসিক দৃঢ়তা কঠিন থেকে কঠিনতর কাজেও মানুষকে সফলতা এনে দেয়। লক্ষ্য স্থির রেখে প্রাত্যহিক চর্চা করে গেলে যে কোন কাজেই সফলতা আসে।

আমাদের জীবনে সফলতা, অসফলতা আমাদের মানসিক দৃঢ়তা এবং আমাদের কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে। আমরা কিভাবে আমাদের জীবনকে সাজাবো সেটি আমাদের ইচ্ছা এবং উদ্দ্যেশ্যই নির্ধারণ করে। তবে শুধু উদ্যেশ্য ইতিবাচক হলেই হয়না, বরং সেটি সাধন করতে আমাদের প্রয়াস ও প্রয়োজন। এই ইচ্ছে এবং প্রয়াসের যৌথ সন্নিবেশেই জীবনে সফলতা আসে। তবে জীবনের সব পর্যায় হয়তো একই ভাবে কাটেনা। কোন কোন পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে থাকে, আবার কোন কোন পরিস্থিতি আমাদের প্রতিকুলে থাকে।

অনুকূল পরিস্থিতিতে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখা সহজ হয়। চিত্ত বিচলিত হয়না। কিন্তু যখন আমাদের চারপাশের পরিবেশ প্রতিকূল হয়, আমরা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ি, তখন মনকে একাগ্র রাখা খুব কঠিন। অধিকাংশ মানুষই এ সময় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং সেখানেই তাদের স্বপ্নের ইতি ঘটে। তারা আর সামনে এগিয়ে যেতে পারেনা। তাই প্রথমত জীবনে সফল হতে হলে আমাদের মানসিকভাবে দৃঢ়তার পরিচয় দিতে হবে এবং লক্ষ্য বিচ্যুত হওয়া যাবেনা। এর সাথে চালিয়ে যেতে হবে প্রচেষ্টা। তবেই সব সমস্যা দূরীভূত হবে এবং জীবনে সাফল্য আসবে।

জীবনে লক্ষ্য যেমন জীবনকে সঠিক দিশা প্রদান করে তেমনি সেই লক্ষ্য সাধনের জন্য সঠিক দিশায় চলতে হলে আপনাকে সেই অনুযায়ী কর্মও করতে হবে। আপনি যে লক্ষ্য সাধনে সক্ষম সে বিষয়ে ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখতে হবে। করতে হবে কর্ম পরিকল্পনা এবং নিত্য চর্চা। ছোট হোক বা বড়, যে কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করতে হয়। ধৈর্য ধরে ধীরে ধীরে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। অনেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও ধৈর্য ধরে প্রতি দিন চর্চা করতে ব্যর্থ হয়। তারা লক্ষ্য ঠিক করলেও কর্ম পরিকল্পনা সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়। আর এটাই হয় তাদের জীবনের সব থেকে বড় ভুল। তারা কখনোই তাদের লক্ষ্য অবধি পৌঁছতে পারেনা।

বিশেষ করে প্রতিকূল পরিবেশে অধিকাংশ মানুষই বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দ্বারা তাড়িত হয়ে নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়। তারা তাদের লক্ষ্যকে মনোযোগের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে না দেখে সমস্যাগুলোর প্রতিই বেশী মনযোগী হয়।

জীবনকে এভাবে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে আর যে বিষয়টি অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেটি হল শৃঙ্খলা। বিশৃঙ্খল জীবনে কখনোই সুষ্ঠু মানসিক বিকাশ এবং ধৈর্য সহকারে নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে কাজ করলে প্রতি দিনের কাজ সহজে হয়ে যায় এবং প্রতিটি কাজের জন্যই প্রয়োজনীয় সময় বের করা যায়। কোন কাজই পড়ে থাকেনা এবং সব কাজই মনোযোগের সাথে করা যায়। যখন প্রতি দিনের কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আমরা আমাদের লক্ষ্যের দিকে আরও এগিয়ে যেতে থাকি আমাদের মনোবলও আরও বাড়তে থাকে। এতে আমাদের মাঝে বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হয়।

জীবনের লখ্য নির্ধারণে যেমন আমাদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হয়, তেমনি প্রাত্যহিক চর্চার মাধ্যমে, মনোবল অক্ষুণ্ণ রেখে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে চাই ইতিবাচক মানসিকতা, ধৈর্য এবং সুশৃঙ্খল জীবন যাপন। আত্মনিবেদন এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ, জীবনে সফল হতে এ দুটিই আমাদের চলার পথের পাথেয়।

সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/rethinking-mental-health/202009/are-you-willing-take-your-daily-practice-seriously

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleলক্ষ্য সাধনে সহায়ক মানসিক কৌশল
Next articleঅটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রতি মায়েদের সচেতনতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here