অবসাদ, ক্লান্তি বা কর্মজনিত ব্যস্ততা ও দুশ্চিন্তার কারণে মানুষের প্রতিনিয়তই ঘুমের ব্যঘাত ঘটছে। এর ফলে চিন্তাশক্তির অবনতি ও ব্রেইনের ক্ষতিসহ মানুষ হার্টের সমস্যা ও আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, কীভাবে ঘুমের স্বল্পতা আমাদের মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তিতে প্রভাব ফেলছে। গবেষকরা বলেন, ঘুমের ব্যঘাত হলে তা ব্রেইন নেটওয়ার্ক ও কিছু রাসায়নিক যেমন ডোপামিন এর প্রতিনিয়ত কাজে বাধা দেয় এবং এটা জটিল কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা দেয় ও নেতিবাচক আবেগজনিত স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় ।
দীর্ঘদিন যাদের ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে তারা আলজ্যাইমার রোগের সম্মুখীন হতে পারেন, যা ‘বেটা-আম্যলইদ’(beta-amyloid) নামক রাসায়নিক বৃদ্ধির কারণে হচ্ছে ।
ঘুম অনেকটা রাস্তা পরিষ্কারকের ন্যায়, যা সারা রাত ধরে আমাদের ব্রেইন এর বিষকে পরিষ্কার করে। গবেষণায় এটাও দেখা যায় যে, যারা অল্প ঘুমায় তাদের বেটা-আম্যলইদের পরিমাণ বেশি ও স্মৃতিশক্তি দুর্বল ।
ভালো মানের ঘুম শুধু যে ব্রেইনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, তা নয়। এটা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানেও সাহায্য করে। ৭ ঘণ্টার কম ঘুম হার্টের সমস্যা ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে, অন্যদিকে ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুম হৃদরোগকে ত্বরান্বিত করে।
সুস্থ ও স্বাভাবিক ঘুমের জন্য কিছু নিয়ম হলো, ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করা, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বর্জন করা, প্রতিদিন একইসময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও নিয়মিত শরীরচর্চা করা। এছাড়াও কিছু থেরাপি যেমন সিবিটিআই (Cognitive Behavioral Therapy for Insomnia) বা চিন্তাশক্তি ও ব্যবহার উন্নতির জন্য থেরাপি এবং বিবিটিআই (Brief Behavioral Therapy for Insomnia) থেরাপি ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে-তে প্রকাশিত সুবীর দত্তের লেখা থেকে ভাবানুবাদ করেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/blog/home-base/201802/the-sleeper-s-dilemma