যখন একজন মহিলা গর্ভবতী হন, তখন তার শরীরে অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিকভাবে অনেক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিস্থিতিতে একজন নারীর সামনে নানা ধরনের সমস্যাও আসে। মানসিক চাপ এবং মেজাজ পরিবর্তনের মতো সমস্যাগুলিও গর্ভাবস্থার অন্যান্য সমস্যাগুলির মধ্যে একটি। মানসিক চাপের সাধারণত শরীরে হরমোনের পরিবর্তন বলে মনে করা হয়।
কিন্তু অনেক সময় মহিলারা প্রসব বেদনা এবং সন্তান প্রসবের সময় কীভাবে যত্ন নেওয়া যায় সেগুলি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করেন এবং এর কারণে একটি মানসিক চাপের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ ছাড়া গর্ভবতী মহিলা কাজ করলে, ঘর ও পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চিন্তাও তাকে মানসিক চাপ দেয়। কারণ যাই হোক না কেন, এই মানসিক চাপ মা ও সন্তান উভয়ের ওপরই খারাপ প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক চাপের কারণে গর্ভাবস্থায় অনেক সময় একাধিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ওই গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপ বেড়ে যায়, যার কারণে গর্ভপাতের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এছাড়া প্রি-ম্যাচিউর শিশুর জন্মের পরিস্থিতিও হতে পারে।
মানসিক চাপ নেওয়ার ফলে মহিলার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, তাঁর খিদে না হওয়ার সমস্যা দেখা দেয় এবং এটি শিশুর স্বাস্থ্যের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মানসিক চাপ গ্রহণকারী মহিলাদের শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য শিশুদের তুলনায় দুর্বল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের মানসিক চাপ শিশুর স্বভাবকেও প্রভাবিত করে। একারণে শিশুর প্রকৃতিতে রাগ, বিরক্তি ও মানসিক চাপ গ্রহণের অভ্যাস তৈরি হয়।
গর্ভাবস্থায় কীভাবে মানসিক চাপের সঙ্গে লড়াই করবেন-
- নিজেকে ব্যস্ত রাখুন
মানসিক চাপ এড়াতে সবচেয়ে ভালো উপায় হল নিজেকে ব্যস্ত রাখা। নিজেকে এতটা সময় দেবেন না যে আপনার মনে ভুল চিন্তা আসতে পারে। ব্যস্ত থাকার জন্য, আপনি আপনার অবসর সময়ে আপনার প্রিয় কাজ যেমন ছবি আঁকা, স্কেচিং, গান গাওয়া, পড়া ইত্যাদি করতে পারেন। আপনার এই কাজটি আপনার সন্তানের উপরও প্রভাব ফেলবে এবং আপনার সন্তানও শান্ত ও সৃজনশীল হয়ে উঠবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দরকার
নিজেকে ব্যস্ত রাখলে মন শান্ত থাকবে এবং ব্যস্ততার কারণে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়বে। এভাবে ভালো ঘুম হবে। গর্ভাবস্থায় ভালো নয় ঘণ্টা ঘুমালে আপনার মানসিক চাপও কমবে এবং শিশুর স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
- বই পড়ুন
গর্ভাবস্থায় বই পড়া খুবই ভালো বলে মনে করা হয়। এর ফলে আপনার সন্তানের আইকিউও বেড়ে যায়। বইকে স্ট্রেস বাস্টার বলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে সেই বইগুলি পড়ুন যা আপনাকে ইতিবাচকতা দেয় এবং আপনার চারপাশের ভাইবসকে ভালো রাখে।
- ধ্যান করার অভ্যাস করুন
নিয়মিত ধ্যান করার অভ্যাস করুন। ধ্যান আপনার মনকে নিবদ্ধ করে এবং শান্ত করে। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞের নির্দেশ অনুযায়ী কিছু সহজ ব্যায়াম করুন। এটি আপনাকে মানসিক চাপ কমাতে অনেক সাহায্য করবে।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে