প্রতিদিনের চিঠি – আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আপনিও লিখতে পারেন আমাদেরকে এই ইমেইলে monerkhaboronline@gmail.com। সেজন্য ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
প্রশ্ন- উত্তর পর্বে দেয়া উত্তরগুলো কেবলমাত্র প্রাথমিক দিকনির্দেশনা। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সাথে সরাসরি দেখা করে চিকিৎসা নিতে হবে।
প্রশ্ন- আমার নাম আবির, বয়স ২০, ঢাকায় থাকি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ছি। ছোটবেলা থেকেই চুপচাপ ও লাজুক প্রকৃতির, ঘরে বেশি সময় কাটাই। হাইস্কুলে বন্ধুরা আমাকে “হাফ লেডিস” বলে ডাকতো, কারণ আমার আচরণ পুরোপুরি পুরুষালী নয়।
১১ বছর বয়সে আমরা ঢাকা আসি, আর সপ্তম শ্রেণিতে আশিক নামে একজনের সাথে বন্ধুত্ব হয়। সে ছিল আমার একমাত্র বন্ধু, তার ওপর আমি নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। ক্লাস নাইনে বুঝতে পারি, আমি মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট নই, বরং আশিকের প্রতি সেক্সুয়ালি আকর্ষণ অনুভব করি। কিন্তু আশিক সমকামী ছিল না, তাই আমি আমার অনুভূতি গোপন রাখি। ধীরে ধীরে সে আমার থেকে দূরে সরে যায়, এবং ২০১৪ সালে আমাদের বন্ধুত্ব পুরোপুরি শেষ হয়। এতে আমি গভীর বিষণ্নতায় ভুগতে থাকি।
২০১৫ সালে বাসা পরিবর্তনের পর তুষার নামে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়, যা আমার বিষণ্নতা কিছুটা কমিয়ে দেয়। তবে সময়ের সাথে বুঝতে পারি, আমি তুষারকে ভালোবেসে ফেলেছি, কিন্তু সে আমাকে সেভাবে দেখে না। এখন সে আমার সাথে দূরত্ব বাড়িয়েছে, যা আবার আমাকে গভীর হতাশায় ডুবিয়েছে।
এই প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার দূরত্ব আমার জীনটা দূর্বিসহ করে তুলেছে। আমি সমকামী হয়ে থাকতে চাই না, আর সবার মতো সুখী সাধারণ জীবন চাই। মানসিক শান্তি চাই। এরজন্য আমি কি করতে পারি, অনুগ্রহ করে পরামর্শ দিবেন।
পরামর্শ – ভাই আবির আপনার সমস্যাটি আমি পুরোপুরি পড়লাম। ধন্যবাদ আপনাকে যে জটিল বিষয়টি আপনি সহজ সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। আপনার বর্ননা থেকে যা বুঝলাম আপনার সমস্যাটি সেক্সচুয়াল ওরিয়েন্টেশনের। আপনার যৌনতার বিকাশ হয়েছে সম সেক্সের প্রতি আগ্রহের মধ্যে দিয়ে। আপনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বিপরীত সেক্সের প্রতি কোন আকর্ষণ বোধ করেন না। স্কুলের বন্ধুরা আপনার মধ্যে মেয়েলি স্বভাবের কিছু খুঁজে পেতো বলে “হাফ লেডিস ” বলতো যা বর্ননা থেকে জানা যাচ্ছে।
আপনি নিজেকে সমকামী হিসেবে দেখতে চান না। তাই পরামর্শ চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো আপনাকে আপনার অপছন্দনীয় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে নিজেক বদলে ফেলতে হবে। মাইন্ডফুলনেস পদ্ধতি আপনাকে সহযোগিতা করবে। আশাকরি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য আপনি অর্জন করতে পারবেন। শুভ কামনা রইলো।
পরামর্শ দিয়েছেন-
ডা.এস এম আতিকুর রহমান
সহকারী অধ্যাপক, মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
- এপোয়েন্টমেন্ট নিতে যোগাযোগ করুন-Prof. Dr. Shalahuddin Qusar Biplob
- চেম্বার – MK4C -মনের খবর ফর কেয়ার
মগবাজার রেইল গেইট।
নাভানা বারেক কারমেলা, লিফটের ৩,
(ইনসাফ কারাকাহ হাসপাতালের বিপরীতে)।
চেম্বার সিরিয়াল – ০১৮৫৮৭২৭০৩০
আরও দেখুন-