চলমান আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২২’ এর ট্রফি তুলে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক ও ক্রীড়া সংগঠক ডা. আনিস আহমেদকে সম্মান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল -আইসিসি।
রীতি অনুযায়ী প্রদর্শনের জন্য খেলার মাঠে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া গৌরবের। এবার এই গৌরব অর্জন করেছেন এই প্রবাসী বাংলাদেশি।
জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর দক্ষিণ আফিকা ও নেদারল্যান্ডের মধ্যকার সুপার টুয়েলভের ম্যাচের আগে অ্যাডিলেড ওভালে ট্রফি নিয়ে প্রবেশ করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক মেডিক্যাল কো অর্ডিনেটর ডা. আনিস আহমেদ।
আজ বুধবার (৯ নভেম্বর) মনের খবর এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, খেলা চলাকালে ট্রফি নিয়ে ক্রিকেট মাঠে প্রবেশের সুযোগ পাওয়া সম্মানের। কমিউনিটি ক্রিকেটে অবদানের জন্য আইসিসি তাকে এ সম্মান জানিয়েছে।
- ‘আইসিসি এবার আমাকে এ সম্মান দিয়েছে। এজন্য আমি আইসিসির কাছে কৃতজ্ঞ। এ সম্মান বাংলাদেশের, বাংলাদেশ ক্রিকেটের’ বলছিলেন আনিস আহমেদ।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মিশ্র পারফর্মেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্রিকেটকে আমরা শুধু মাঠের খেলা হিসেবেই দেখি। কিন্তু এর মনস্তাত্বিক একটা দিক রয়েছে। মানসিকভাবে প্রস্তুত না থাকলে কোনো ক্রিকেটারই মাঠে তার সেরাটা দিতে পারবে না। কোনো কৌশলই তখন কাজে আসবে না।
ক্রিকেটারদের মনোবিদ দেখানো নিয়ে ওয়াসিম আকরামের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যখন বাংলাদেশ দলে কাজ করি তখন কোচ ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর। হোয়াটমোরই প্রথম বলেছিলেন, ক্রিকেটারদের জন্য মনোবিদ বা মনোচিকিৎসক লাগবে।
তারপর টিম ম্যানেজম্যান্টের পরামর্শে আমারই বন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লবকে যুক্ত করি। এরপর থেকে নিয়মিত গ্রুমিং হতো ক্রিকেটারদের নিয়ে।

বলা যায় তখন থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটার চেহারাই পাল্টে যায়। হোয়াটমোরের হাত ধরেই বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয় পায়। এমনকি ওয়ানডে ও টেস্ট স্টাটাস পাওয়ার পর প্রথম ওয়ানডে জয় তার হাত ধরেই। তিনিই মূলত বাংলাদেশকে জিততে শিখিয়েছেন। এই জিততে শিখায় মনোচিকিৎসকের ভূমিকা রয়েছে।
‘অতিসম্প্রতিও আমরা দেখেছি তাসকিন যখন দল থেকে বাদ পড়লেন তখন মনোবিদের শরানপন্ন হন। এরপর তো স্মরণীয় করার মতো মুহূর্ত নিয়ে তাসকিন ফিরে আসলেন। এবারও বিশ্বকাপে দুই দুইবার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়েছে তাসকিন’ বলেন আনিস আহমেদ।
- ডা. আনিস বলেন, ক্রিকেটারদের নিয়ে নানান সময় নানা সমালোচনা উঠে। এটা আসলেই মানসিকতার ব্যাপার। জাতীয় দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার সেলিব্রেটি। তাদের আচরণ হবে সংযত। মাঠে ও মাঠের বাইরে তারা নিজেকে একেবারে গুটিয়ে রাখবে না আবার অতি উৎসাহীও হবে না।
উল্লেখ্য, ডা. আনিস আহমেদ ২০০২-২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের চিকিৎসক দলে সম্পৃক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে থিতু হয়েছেন। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন ক্রিকেটের সঙ্গেও।
তিনি ‘সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন’র সদস্য। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার এ ক্রিকেট সংস্থার বোর্ড অব গভর্নমেন্টে নির্বাচনেও তিনি অংশ নিয়েছেন। ২০০৭ সালে অ্যাডিলেটে ‘হারমোনি ক্রিকেট’ (সম্প্রীতি) সংগঠিত করেন।
/এসএস/মনেরখবর/