প্রতি বছর ১০ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এ দিবসের মূল লক্ষ্য হলো মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, মানসিক রোগ নিয়ে সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার দূরীকরণ এবং মানসিকভাবে সুস্থ একটি সমাজ গঠনে সহায়ক হওয়া।
এ উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ম্যাস হেলথ অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড সোশাল অ্যাডভান্সমেন্ট (মাশা) ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আয়োজন করে একটি মানববন্ধন ও সচেতনতামূলক পথযাত্রা। এ বছরের কর্মসূচির প্রতিপাদ্য ছিল: “মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নীরবতা ভাঙুন, চলুন কথা বলি”।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার হাতে নিয়ে র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ও সেবার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়।
মাশার পক্ষ থেকে জানানো হয়, শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো মানসিক স্বাস্থ্যও প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব, অর্থনৈতিক চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে মানুষের মানসিক ভারসাম্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। উদ্বেগ, হতাশা, মানসিক ক্লান্তি এবং আত্মহত্যার প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, নারী, শিশু এবং কর্মজীবী মানুষের মাঝে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার না দিলে একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ জাতি গঠন সম্ভব নয়। সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার এবং সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়— যেন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হয় উম্মুক্ত, সহজলভ্য এবং দৃষ্টিভঙ্গিভিত্তিক নয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করার আহ্বান জানান এবং বলেন, “একজন মানসিকভাবে সুস্থ মানুষই একটি মানবিক ও প্রগতিশীল সমাজ গঠনের ভিত্তি। তাই আমাদের সবার উচিত নিজেদের ও আমাদের প্রিয়জনদের মানসিক সুস্থতার প্রতি সচেতন হওয়া, সাহায্যের প্রয়োজন হলে তা খোলাখুলি বলা এবং পাশে থাকা।” বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫-এর এই আয়োজন সমাজে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়েছে— “নীরবতা ভাঙুন, কথা বলুন, পাশে থাকুন।”
আরও পড়ুন-