সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুর্ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) জরুরি হটলাইন সেবা চালু করেছে।
এক শোকবার্তায় বিএপি জানিয়েছে, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী মানসিক প্রভাব শুধু দুর্ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যেই নয়, বরং দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, উদ্ধারকর্মী এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন দৃশ্য দেখার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও মানসিক আঘাত ও ট্রমা দেখা দিতে পারে। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএপি ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট সম্মিলিতভাবে নিম্নোক্ত বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এই সেবার আওতায় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তিনটি ভাগে প্রশিক্ষিত মনোরোগ চিকিৎসক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিনামূল্যে পরামর্শ দিচ্ছেন।
হটলাইন নম্বরসমূহ ও সেবা সময়সূচি:
-
সকাল ১০টা – দুপুর ২টা:
০১৮৩৫১৫৪৩৪১ / ০১৮৩৫১৫৫৫২১ -
দুপুর ২টা – বিকাল ৬টা:
০১৮৩৫১৫৩২৬২ / ০১৮৩৫১৫৪৩৪০ -
বিকাল ৬টা – রাত ১০টা:
০১৮৩৫১৫৩০০৫ / ০১৮৩৫১৫৬২৬২
বিএপি’র গৃহীত তাৎক্ষণিক পদক্ষেপসমূহ:
- জরুরি মানসিক সহায়তা হেল্পলাইন চালু:
দুর্ঘটনাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পরিবারদের দ্রুত মানসিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। - হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের জন্য বিশেষজ্ঞ টিম:
দুর্ঘটনায় আহত ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম সরেজমিনে সেবা দিচ্ছে। - বিশেষ আউটডোর সেল:
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আলাদা একটি আউটডোর সেল চালু করা হয়েছে, যেখানে বিশেষায়িত সেবা দেওয়া হচ্ছে। - আবাসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা:
মানসিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অন্তঃবিভাগে বেড সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। - দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন পরিকল্পনা:
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য পরবর্তীতে পুনর্বাসন ও থেরাপিউটিক রিহ্যাব কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। - গণসচেতনতামূলক প্রচার:
জনসাধারণের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য টেলিভিশন, সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মনোরোগ সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া, ২৪ ঘণ্টা জরুরি সহায়তার জন্য যোগাযোগ করা যাবে: জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।বিএপি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানসিক আঘাত, ট্রমা ও উদ্বেগে ভুগছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানসিক সহায়তা সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয়। হটলাইন সেবার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রাথমিক মানসিক সহায়তা ও ট্রমা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দিকনির্দেশনা পাবেন। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস-এর এই উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক পদক্ষেপ যা জাতীয় সংকটকালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
আরও দেখুন-