প্রশ্ন: আমার ছোটো ভাই একজন সিজোফ্রেনিয়া রোগী। আমি এই রোগটা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি। এই রোগ থেকে কখনো মুক্তি পাওয়া সম্ভব কি? ওর জন্য চিন্তা করার কারণে আমি আমার পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছি না। আমি বিসিএস পরীক্ষার্থী। এদিকে হলে থাকার কারণে ওকে সময়ও দিতে পারছি না। নিজেকে বড়ো অসহায় এবং জীবনটাকে দুর্বিষহ মনে হচ্ছে। শুধু মনে হয়, ও যদি কোনোদিনও সুস্থ না হয় তাহলে কেমন হবে! আমাকে কিছু পরামর্শ দিন যাতে আমি পড়াশুনা চালাতে পারি। প্লিজ, ওর সুস্থতার ব্যাপারেও কিছু বলবেন। কীভাবে তাকে আরো ভালো রাখা যায় জানাবেন।
—নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন্নাহার : সিজোফ্রেনিয়া রোগের বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। আপনার ভাইকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে থেকে নিয়মিত ঔষধ খাওয়াতে হবে। সাধারণভাবে বলতে গেলে এক তৃতীয়াংশ রোগী পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়, এক তৃতীয়াংশ ঔষধ ও সামাজিক সহায়তায় ভালো থাকে, এক তৃতীয়াংশ অসুস্থ ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়। অর্থাৎ বেশিরভাগ রোগীই ঔষধ এবং পারিবারিক ও সামাজিক সহায়তার দ্বারা আত্মনির্ভরশীল জীবনযাপন করতে পারে। এটা মনে রাখতে হবে যে, আমাদের রোগীদের রোগ সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি না থাকার কারণে তারা ঔষধ খেতে চান না। সেজন্য অন্য কেউ যেন ঔষধ খাওয়াটা নিয়ন্ত্রণ করেন। পরিবারের সবাই যদি সহযোগিতা করেন তবে তাড়াতাড়ি উন্নতি সম্ভব। আমি আপনাকে পরামর্শ হিসেবে বলবো যে, আপনি নিজে রোগীকে বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। তিনি কী বলেন সেটা মনোযোগ দিয়ে শোনা ও বোঝার চেষ্টা করুন। পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে ঔষধ খাওয়ানোর দায়িত্বে রাখুন। নিয়মিতভাবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। উল্লেখ্য যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের বহির্বিভাগে সকাল ও বিকাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়মিত সেবা প্রদান করে থাকেন।