ডা. সাঈদ এনাম
এমবিবিএস ডিএমসি, এম ফিল সাইকিয়াট্রি
বিসিএস হেলথ
সহকারী অধ্যাপক
সাইকিয়াট্রি
ব্রেইন স্নায়ু ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
ফেলো, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন
এই বঙ্গদেশে ১৯ কোটি মানুষের কত কোটি মানুষ তাদের হাতে, গলায়, কোমরে তাবিজ নিয়ে ঘুরেন কারো আইডিয়া আছে, বলতে পারেন কেউ? দেখুনতো আপনার অবস্থা? যারা হাতে, গলায়, কোমরে তাবীজ নিয়ে ঘুরেন সন্দেহ নেই তাদের শতভাগই নিউরোসিস বা স্বল্পতর মানসিক রোগের রোগী এবং সাইকোসিস বা ঘোরতর মানসিক রোগের রোগী। হতাশা, উদ্বেগ বা আচার-আচরণগত ব্রেইনের সমস্যা ছাড়া কেউ ফুর্তি করতে বা অলংকার হিসেবে লৌহের তৈরি এই গুল্লিটি গলায়, হাতে, কোমরে রাখবেন এটি অবিশ্বাস্য! যাহোক যা বলছিলাম, বঙ্গদেশের মানসিক রোগীর এই বিশাল অংশ কিন্তু মানসিক রোগের আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার আওতার বাহিরে থেকে তাবিজ আর কবজ নিয়ে কষ্ট করছেন কেবলমাত্র অসচেতনতা, অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার এর জন্যে। একটা স্ট্যাটাসে বলেছিলাম যদি মাদ্রাসা শিক্ষায় মানসিক রোগ সম্পর্কে একটি চ্যাপ্টার থাকে, সামান্য অ,আ,ক,খ ধারণা দেবার ব্যবস্থা থাকে, তাহলে দেশের লাখ লাখ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মানসিক রোগ নিয়ে সচেতন হবে। কারণ তারাই একদিন আলেম-উলামা হয়ে সবাইকে সুপরামর্শ দেবেন। সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করতে পারবেন। তারা দ্ব্যর্থহীন চিত্তে বলতে পারবেন, তাবিজ দিয়ে মানসিক রোগের উপশম হয়না। আর এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন মানসিক রোগীরাই। এছাড়া আলেম সমাজ যদি জ্বীন-জাদু আর মানসিক রোগের মধ্যে সুস্পষ্ট তফাত করতে সমর্থ হন তাহলে মানসিক রোগীদের জন্যে হবে এ এক বিশাল কল্যাণের। তারা মানসিক রোগের জন্যে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার আওতার আসবেন। পরিশেষে বলছি, অনেকে মনে করেন তাবিজ বোধহয় কেবল মুসলিম সম্প্রদায় পরেন। কিন্তু তা নয়। ইন্টারেস্টিং হলো, আমার চেম্বারে আগত অনেক নও মুসলিম আছেন যাদের দেখেছি মানসিক রোগের জন্যে তাবিজ পরতে। আশার কথা হলো, ইদানীং অনেক মৌলভী সাহেব মানসিক রোগীকে তাবিজ পরান না বরং রেফার করেন সাইকিয়াট্রিস্টদের কাছে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা নেবার জন্যে। এটা অবশ্যই সাধুবাদ দেবার বিষয়।