বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে দেশের ৮ বিভাগীয় শহরে ৮টি মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন।
ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত ‘চতুর্থ গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ সামিটে’ অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে এ তথ্য তুলে ধরেন।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা যায়, ১৩ ও ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্বের ৫২টি রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশগ্রহণ করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরেনজা বক্তব্য দেন।
দূতাবাস থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা জনগণের দোরগোড়ায় নিতে সক্ষম হবে।
করোনা মোকাবিলা এবং টিকাদানে বাংলাদেশের অনন্য সাফল্যের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের জনগণের মানসম্মত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নীতি ও কর্মকৌশলের বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক এ মানসিক স্বাস্থ্যসম্মেলনে দেশের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বৃদ্ধির কথা জানিয়ে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের অবহিত করেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগীয় শহরে নতুন আটটি মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং জেলা উপজেলা পর্যায়ে এনসিডি কর্নারে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য স্কুল মেন্টাল হেলথ কার্যক্রম, এমএইচগ্যাপ প্রশিক্ষণসহ সরকার নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
কমিউনিটি বেইজড মেন্টাল হেলথ সার্ভিস প্রদানে দেশের বিদ্যমান প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা অবকাঠামো যেমন, ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, ৪ হাজার ফেমিনি ওয়েলফেয়ার সেন্টার, ৫০০ উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার কথা উল্লেখ্য করেন জাহিদ মালেক।
এসময় কমিউনিটির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য ব্যক্তি নির্বাচন, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, অর্থায়ন ইত্যাদির ওপর গুরুত্বারোপ করে এসব বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা কামনা করেন মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ সীমিত এবং মানসিক স্বাস্থ্য যাতে দক্ষ জনবলের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ই-মেন্টাল হেলথ, অ্যাপভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবাসহ নানা উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেরা বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়া চলমান। এই প্রক্রিয়াগুলোকে আরো বেগবান করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় মানসিক স্বাস্থ্যকে অন্তর্ভূক্ত করতে স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলায় কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করায় মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
সম্মেলন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দেশে দক্ষ জনবল সৃষ্টির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি কোভিড মোকাবিলা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
/এসএস/মনেরখবর/