শারীরিক সুস্থতা, পরিবেশ ও খাদ্যাভাস মনের সুস্থতায় প্রভাব ফেলতে পারে। নেতিবাচক হলে খারাপ হবে মানসিক স্বাস্থ্য। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এসব বিষয়েও নিজের সঠিক যত্ন নিতে হবে।
আজকে আমরা জানবো মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার বিশেষ কিছু খাবার নিয়ে। চুল জেনে নেয়া যাক কী কী খাবার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চিয়া সীড
চিয়া সীড আমাদের কাছে একটি অপরিচিত খাদ্যবীজ। তবে স্বাস্থ্য সচেতনদের খাবারের তালিকায় নিয়মিত থাকে পুদিনা জাতীয় এই চিয়া সিড। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা ডিপ্রেশন তথা হতাশা থেকে স্বস্তি দিতে সহায়তা করে।
এছাড়াও এতে রয়েছে কোয়েরসেটিন (Quercetin) কেম্পফেরল (Kaempferol) ক্লোরোজেনিক এসিড (Chlorogenic acid) এবং ক্যাফিক এসিড (Caffeic acid) নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট; পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশ (ফাইবার)।
অনেকে তোকমা বীজকে ভুল করে চিয়া সীড মনে করেন। চিয়া সীড তোকমার চেয়ে সাইজে ছোট, তবে এ দু’টোর পুষ্টিগুণ প্রায় একই। তোকমার ইংরেজি নাম ব্যাসিল সীড (Basil seed)।
এতে দুধ, কলা, পালং শাক ও কলার থেকে কয়েকগুন বেশি স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। চিয়া সীড ভিজিয়ে খেলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমে। তাই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চিয়া সিড ভীষণ উপকারী।
ডিম
ডিম উপকারী খাবার এ বিষয়ে সবারই কম-বেশি জানা। ডিমে কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টি থাকে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এতে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড, বায়োটিন এবং কোলিন মস্তিষ্কের কোষ ও স্নায়ুর বিকাশের জন্য বেশি প্রয়োজনীয়। তাই প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খেতে পারেন।
দই
দুধ না খেলেও অনেকেই এমন আছেন যারা দই খেতে পছন্দ করেন। যারা দই খেতে ভালোবাসেন তাদের জন্য রয়েছে সুস্থ থাকার উপায়। দই আমাদের পাচনতন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য পরিচিত। গবেষণা বলছে, দই খেলে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কম হয়। এটি সরাসরি ব্যক্তির মুড-কে প্রভাবিত করে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত দই খেতে পারেন।
ব্রকলি
ব্রকলি একটি শীতকালীন সবজি। দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো। তবে ফুলকপির চেয়ে অধিক ফোলাইট এবং ক্যালোরি সম্পন্ন। এটিও আমাদের অনেকের জন্য একটি অপরিচিত খাদ্য। তবে আমাদের দেশেও এটি পাওয়া যায়। যশোরে এটি ভালো চাষ হয়। এছাড়া, বরিশাল, মাগুরা, কুড়িগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এটি চাষ হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সবুজ এই সবজি রাখতে পারেন আপনার খাদ্য তালিকায়।
হার্ট ভালো রাখতে প্রয়োজন হয় লোহিত কনিকার যা তৈরিতে ফোলাইট সাহায্য করে। অন্যদিকে ব্রকলিতে থাকা স্বাস্থ্যকর ক্যালসিয়াম বাড়তি চর্বি কমায় এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও এতে এমন কয়েকটি যৌগ রয়েছে, যা মস্তিষ্ক স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পটাসিয়াম রয়েছে, যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে।
এতে আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। এতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস (Phytonutrients) থাকায় এটি হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। বর্তমানে এটি আমাদের দেশেও এটি উৎপাদন হয়।
বাদাম
ঘুরতে গেলে সবাই বাদাম খেতে পছন্দ করেন। অবসরে কোথাও বসে থাকলেও বাদাম হয় সময়ের সঙ্গী। বাদামে রয়েছে বিভিন্ন রকম খনিজ এবং পুষ্টিগুণে। বাজারে বিভিন্ন প্রকার বাদাম পাওয়া যায়। চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, পোস্ত বাদাম, আখরোট সবগুলোই উপকারী। তবে কাজু বাদাম অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়ে।
বাদামে উচ্চ পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং তামা রয়েছে। এগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং মানসিক অসুস্থতা উপশম করতে সহায়তা করে। এছাড়াও শারীরিক সুস্থতার জন্য রয়েছে বাদামে অনেক পুষ্টিগুন।
ডার্ক চকোলেট
চকলেটে অন্যান্য চকলেটের তুলনায় বেশি কোকো এবং কম চিনি থাকে, তাই এটি দুধ এবং সাদা চকোলেটের চেয়ে অধিক স্বাস্থ্যকর। এতে কোকো থাকার কারণে, এটি ব্লাড সার্কুলেশন উন্নত করতে বিশেষভাবে পরিচিত। এর ফলে স্মৃতি শক্তিরও উন্নতি হয়। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েডস মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে এবং মস্তিষ্ককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
চা
চা আমাদের অনেকেই পছন্দের পানীয়। চা পান করেন না এমন মানুষ খুব কম আছে। নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে চায়ের মধ্যে। চা-এ থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন উপাদান শরীর সতেজ রাখে, মন ভাল রাখে, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
শুধু সবুজ চায় বা গ্রীণ টি-ই নয় বরং লাল চায়েও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন গড়ে চার কাপ ব্লাক, রং বা সবুজ চা খেলে ভালো থাকবে আপনার হার্ট। ডায়বেটিক রোগীরা বেশি করে সবুজ চা খেতে পারেন।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে
/এসএস