অনেক সময় অনেক মানসিক সমস্যা থেকে বেশ সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আবার এমন অনেক সমস্যাই আছে যা সময় সাপেক্ষ। আবার অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোন সমস্যা নিয়ে একবার চিকিৎসা গ্রহণের পর পুনরায় সেই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এত সব কিছুর পরেও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সমাধানের লক্ষে চিকিৎসা গ্রহণ করলে , প্রথম বার কিংবা এর পরবর্তীতে, অবশ্যই সুফল পাওয়া যাবে। ধৈর্য রাখতে হবে এবং সময় নিয়ে এর চিকিৎসা করলে অবশ্যই আপনি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় উদ্বিগ্নতা বা বিষণ্ণতা প্রতিকারের ক্ষেত্রে অনেক বেশী সময় লেগে যায়। এবং অনেক ক্ষেত্রে এমনও হয়, সমস্যা নিয়ে মনস্তত্ত্ববিদদের শরণাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও আপনি আশানরূপ ফল নাও পেতে পারেন। এমন বিষয় একেবারে অস্বাভাবিক বলা উচিৎ হবেনা। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৩০-৪০% ক্ষেত্রেই মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রথম প্রয়াসে বিষণ্ণতা বা উদ্বিগ্নতার মত মানসিক সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
যখন একজন চিকিৎসক এটা দেখেন যে তার চিকিৎসা বিফল হয়েছে বা প্রথম প্রয়াসে তার চিকিৎসাধীন ব্যক্তির আশানরুপ উন্নতি হয়নি তখন অনেকেই বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তিনি এই অবস্থায় অনেক সময় তার চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে এর প্রতিকার করার চেষ্টা করেন আবার কখনো চিকিৎসাধীন ব্যক্তিকে অন্য কোন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ প্রদান করেন। আবার অনেকে ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করেও এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেন। অন্য দিকে, একজন মানসিক সমস্যায় পতিত হওয়া ব্যক্তিও বেশ চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তিনিও ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন। অনেকে এই অবস্থায় চিকিৎসক বা পরামর্শ দাতা বদল করেন আবার অনেকে হতাশ হয়ে চিকিৎসা স্থগিত করে দেন।
দূর্ভাগ্যবশত অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসক এবং চিকিৎসাধীন ব্যক্তি উভয়ই ধৈর্যহীন এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। বিষণ্ণ বা দুশ্চিন্তামগ্ন একজন ব্যক্তি এ সময় নিরূতসাহিত এবং অসহায় বোধ করেন এবং নিজেদেরকে চিকিৎসা পদ্ধতি বিফল হওয়ার জন্য দায়ী করে এক সময় মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা করাই বন্ধ করে দেন। শেষ পর্যন্ত তারা এই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন যে মানসিক এসব সমস্যা চিকিৎসা বা পরামর্শের দ্বারা আর নিরাময় হওয়া সম্ভব নয়।
প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেকটি মানুষ যেমন ভিন্ন ভিন্ন তেমনি তাদের মানসিক স্থিতি, সমস্যার মাত্রাও ভিন্ন ভিন্ন হয়। এ কারণে সবার জন্য একই প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহারে সমান ফলাফল নাও আসতে পারে। যদি প্রথম বার আপনি অসফল হন বা আপনার সমস্যার আশান্নরূপ মাত্রায় সমাধান না হয় তবে ধৈর্যহারা হয়ে যাবেন না। আপনার সমস্যা সময় নিয়ে এবং ধৈর্য সহকারে অগ্রসর হয়ে পরিত্রাণের চেষ্টা করুন। আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ বা চিকিৎসার সাথে সাথে আপনাকেও সেসব যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে চিকিৎসক থেকে আপনি স্বয়ং নিজেকে অত্যধিক সহায়তা করতে পারেন। সাহসের সাথে ধৈর্য সহকারে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
রাতারাতি কোন রোগের চিকিৎসাই সম্ভব নয়। তবে চিকিৎসা করলে আপনি অবশ্যই সুস্থ হয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য এবং বিশ্বাস রাখতে হবে। মানসিক রোগের ক্ষেত্রে মানসিক শক্তি কাজে লাগিয়েই সময় নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বিষণ্ণতা বা দুশ্চিন্তা থেকে চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি অবশ্যই এক সময় মুক্তি পাবেন এবং সুখী ও সুন্দর একটি জীবন উপভোগ করতে পারবেন।
সূত্র: সাইকোলজি টু’ডে-https://www.psychologytoday.com/us/blog/science-practice/202002/don-t-give-if-your-mental-health-treatment-didn-t-work
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে