সঙ্গী নির্বাচনে আপনি কি একটু বেশীই খুঁতখুঁতে? হ্যা আপনাকেই বলছি, খুঁতখুঁতে হওয়া খারাপ কিছু নয়। আসুন আপনার এই খুঁতখুঁতে স্বভাবের কিছু ইতিবাচক দিক জেনে নেই।
অনেক সিঙ্গেল মানুষেরা সঙ্গী নির্বাচনে তাদের অত্যধিক খুঁতখুঁতে স্বভাব নিয়ে প্রায়শই বেশ লজ্জা বোধ করেন। নিজের স্বভাব লুকিয়ে রাখতে চান এটা ভেবে যে তার এই স্বভাবটি হয়তো সবার কাছে ঠিক গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে খুঁতখুঁতে স্বভাবটি এতোটাও খারাপ কিছু নয় যা আপনি ভাবছেন। খুঁতখুঁতে স্বভাব বলতে এটি নয় যে একজন ব্যক্তি গুণাগুণের একটি লম্বা তালিকা তৈরি করে ফেলবে। বরং খুঁতখুঁতে স্বভাব একজন ব্যক্তিকে ভালো মন্দ ভাবতে উৎসাহিত করে। নিজের চাহিদা অন্য কারও মাধ্যমে পূরণ করা নয়, বরং খুঁতখুঁতে হবার অর্থ নিজের সঙ্গী, নিজের সম্পর্ক এবং নিজের আবেগ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আপোষ না করা।
সঙ্গী নির্বাচনে সতর্ক থাকা বা খুঁতখুঁতে স্বভাব থাকার অর্থ অনেক বেশী চাহিদা সম্পন্ন হওয়া বা সংকীর্ণ মানসিকতা সম্পন্ন হওয়া নয়। এর অর্থ হল নিজের ইচ্ছা, চিন্তা ভাবনা, এবং আগ্রহকে সম্মান করা যা আপনার কাছে সব থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষত তখন যখন বিষয়টি সঙ্গী নির্বাচনের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়। আর নিজের মনের কথা সঠিকভাবে অনুধাবন এবং বাস্তবায়ন দীর্ঘস্থায়ী এবং সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য সব থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজের এই খুঁতখুঁতে স্বভাব নিয়ে নিজেকে ছোট ভাবা থেকে বিরত থাকুন। কারণ আপনার স্বভাবটির কিছু বিশেষ ইতিবাচক দিক অবশ্যই রয়েছে।
১) আপনার অনুভব আপনার সব থেকে বড় শক্তি
আমি আগেই বলেছি , আপনিই আপনাকে সব থেকে ভালো করে চেনেন এবং বোঝেন। আপনার জন্য কোনটা সঠিক এবং কোনটা সঠিক নয় সেটি জানেন। নিজের এই আত্মবিশ্বাসকে সম্মান করুন এবং এটিকে বজায় রাখুন। যদি আপনার মনে হয় যে এটি আপনার জন্য সঠিক নয় বা সেটি করা আপনার উচিত নয়, তাহলে সেই সম্পর্ক বা সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা বা এড়িয়ে চলার অধিকার অবশ্যই আপনার আছে। এর একটি কারণও অবশিষ্ট নেই যা আপনাকে অযাচিত পরিস্থিতি বা সঙ্গীকে বেছে নিতে বাধ্য করবে। আর এসব নিয়ে আপনি কারও কাছে দায়বদ্ধ নন বা কারণ দর্শানোর ও প্রয়োজন নেই।
আমি আগেই বলেছি , আপনিই আপনাকে সব থেকে ভালো করে চেনেন এবং বোঝেন। আপনার জন্য কোনটা সঠিক এবং কোনটা সঠিক নয় সেটি জানেন। নিজের এই আত্মবিশ্বাসকে সম্মান করুন এবং এটিকে বজায় রাখুন। যদি আপনার মনে হয় যে এটি আপনার জন্য সঠিক নয় বা সেটি করা আপনার উচিত নয়, তাহলে সেই সম্পর্ক বা সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা বা এড়িয়ে চলার অধিকার অবশ্যই আপনার আছে। এর একটি কারণও অবশিষ্ট নেই যা আপনাকে অযাচিত পরিস্থিতি বা সঙ্গীকে বেছে নিতে বাধ্য করবে। আর এসব নিয়ে আপনি কারও কাছে দায়বদ্ধ নন বা কারণ দর্শানোর ও প্রয়োজন নেই।
২) নিজের জন্য নেতিবাচক কিছু মেনে নেওয়ার কোন কারণ নেই
কোন প্রকার চাপ বা বাধ্যবাধকতার ফলে মেনে নেওয়া সিদ্ধান্ত কখনোই একজন ব্যক্তির জন্য ভালো ফল বয়ে নিয়ে আসেনা। নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজ করলে সেটি যেমন মানসিক সন্তুষ্টি প্রদান করেনা তেমনি সেই সঙ্গী বা সম্পর্কও জীবনে ইতিবাচক কোন প্রভাব ফেলতে পারেনা। যিনি আপনার মনে ভয় উৎপন্ন করেন বা যে সম্পর্কে আপনার কোন সম্মান নেই সেই সম্পর্ক বা সেই সঙ্গীকে অবশ্যই এড়িয়ে চলা আবশ্যক। তাই, যদি আপনার সঙ্গী বা সম্পর্ক আপনার মনকে বিচলিত করে, আপনার মানসিক চাপের কারণ হয় বা ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে তাকে ত্যাগ করাই বাঞ্ছনীয়।
কোন প্রকার চাপ বা বাধ্যবাধকতার ফলে মেনে নেওয়া সিদ্ধান্ত কখনোই একজন ব্যক্তির জন্য ভালো ফল বয়ে নিয়ে আসেনা। নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজ করলে সেটি যেমন মানসিক সন্তুষ্টি প্রদান করেনা তেমনি সেই সঙ্গী বা সম্পর্কও জীবনে ইতিবাচক কোন প্রভাব ফেলতে পারেনা। যিনি আপনার মনে ভয় উৎপন্ন করেন বা যে সম্পর্কে আপনার কোন সম্মান নেই সেই সম্পর্ক বা সেই সঙ্গীকে অবশ্যই এড়িয়ে চলা আবশ্যক। তাই, যদি আপনার সঙ্গী বা সম্পর্ক আপনার মনকে বিচলিত করে, আপনার মানসিক চাপের কারণ হয় বা ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে তাকে ত্যাগ করাই বাঞ্ছনীয়।
৩) আপনার সংস্কার এবং ভালোলাগা-মন্দলাগা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ
কখনো নিজের মনের ইচ্ছা এবং নিজের নীতি নৈতিকতাকে কোন কিছুর মূল্যেই ত্যাগ করা উচিত নয়। অন্য যে কারও মান সম্মান, ইচ্ছা অনিচ্ছের মতো আপনার ইচ্ছে এবং ভাল্লাগা-মন্দলাগাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজেকে এবং নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছেকে গুরুত্ব দিন। কখনোই আপনার নীতি নৈতিকতার বিরুদ্ধে যাওয়া কোন বিষয়ে অস্বীকৃতি জানাতে দ্বিধা বোধ করবেন না। দীর্ঘস্থায়ী অটুট সম্পর্কের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কখনো নিজের মনের ইচ্ছা এবং নিজের নীতি নৈতিকতাকে কোন কিছুর মূল্যেই ত্যাগ করা উচিত নয়। অন্য যে কারও মান সম্মান, ইচ্ছা অনিচ্ছের মতো আপনার ইচ্ছে এবং ভাল্লাগা-মন্দলাগাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজেকে এবং নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছেকে গুরুত্ব দিন। কখনোই আপনার নীতি নৈতিকতার বিরুদ্ধে যাওয়া কোন বিষয়ে অস্বীকৃতি জানাতে দ্বিধা বোধ করবেন না। দীর্ঘস্থায়ী অটুট সম্পর্কের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪) অবশ্যই নিজের মতো করে বাঁচুন
আপনার জীবনের সব সিদ্ধান্ত অবশ্যই আপনি এবং একমাত্র আপনিই নেবেন। যদি আপনার মনে হয় আপনি একা থাকবেন, সেটি আপনার একান্ত সিদ্ধান্ত এবং আপনি সেটি করতে পারেন। আবার আপনার যদি মনে হয় কোন সঙ্গী নির্বাচন করে আপনি জীবনে এগিয়ে যাবেন, সেটিও আপনার একান্ত সিদ্ধান্ত। তাই অন্য যে কারও সিদ্ধান্ত, ইচ্ছে এবং মনকে গুরুত্ব দেবার আগে নিজের মনের কথা জানুন এবং নিজেকে গুরুত্ব দিয়ে নিজের মতো করে বাঁচুন। এতে কোন অন্যায় বা কুণ্ঠাবোধ নেই।
আপনার জীবনের সব সিদ্ধান্ত অবশ্যই আপনি এবং একমাত্র আপনিই নেবেন। যদি আপনার মনে হয় আপনি একা থাকবেন, সেটি আপনার একান্ত সিদ্ধান্ত এবং আপনি সেটি করতে পারেন। আবার আপনার যদি মনে হয় কোন সঙ্গী নির্বাচন করে আপনি জীবনে এগিয়ে যাবেন, সেটিও আপনার একান্ত সিদ্ধান্ত। তাই অন্য যে কারও সিদ্ধান্ত, ইচ্ছে এবং মনকে গুরুত্ব দেবার আগে নিজের মনের কথা জানুন এবং নিজেকে গুরুত্ব দিয়ে নিজের মতো করে বাঁচুন। এতে কোন অন্যায় বা কুণ্ঠাবোধ নেই।
মেনে নেওয়া এবং মানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনও জীবনে আছে কিন্তু সেগুলোর অবশ্যই সীমা ও রয়েছে। অবশ্যই পরিস্থিতি এবং সীমাবদ্ধতা অনুসারে নিজেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া খারাপ কিছু নয়। তাই একটু খুঁতখুঁতে স্বভাবের হওয়া যেতেই পারে।
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/modern-dating/202012/5-reasons-why-it-is-okay-be-picky
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে