ধর্ষণ সহ নারী নির্যাতনের ঘটনা যেন প্রতিনিয়ন বেড়েই চলেছে আমাদের দেশে। কোনোভাবেই যেন তা রোধ করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি জন দাবীর মুখে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করেছে রাষ্ট্র। শাস্তি নিশ্চিত হলেই কি ধর্ষণ কমে যাবে; তা জানতে অনলাইনে জনমত জরিপে করে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনলাইন পোর্টাল মনের খবর।
মনের খবর অনলাইনে পোর্টালে পরিচালিত ১০ দিনব্যাপি এই জরিপে ১০৫৬ জন পাঠক তাদের মতামত প্রদান করেন। আপনি কি মনে করেন শাস্তি নিশ্চিত হলেই কি ধর্ষণ কমে যাবে; এমন প্রশ্নের জবাবে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৯২ জন ”না” উত্তর দেন। এবং বাকী ৪৯২ জন “হ্যাঁ” উত্তর দেন।
এছাড়া এ বিষয়ে তাদের কোনো মতামত বা পরার্মশ থাকলে তা ব্যক্ত করার সুযোগ রাখা হয় জরিপে। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা যেসব মতামত প্রদান করেন; তার মধ্যে রয়েছে-
- অপরাধ বিজ্ঞান, আইনবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞান প্রমান করেছে, শাস্তির ভয় অপরাধীর মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে শাস্তির ভয়ে অপরাধ করতে একটু হলেও দ্বীধাবোধ করে। যেহেতু, এ পর্যন্ত যতোগুলো ধর্ষণ হয়েছে তার বেশিরভাগই সঠিক বিচার ও শাস্তি না হয়াতে অপরাধীর মনে বিষয়টি সহজ হয়ে গিয়েছে। তাই এ রকম আইন প্রয়োগ অপরাধকে ৯০ ভাগ কমাতে সাহায্য করবে। বাকি ১০ হলো নৈতিক শিক্ষা ও সুস্থ পরিবেশ।
- সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন সামাজিক জাগরণ এবং নারীর প্রতি দৃষ্টিতে পরিবর্তন আনা। এই পরিবর্তিত সামাজিক মানসিকতা নারী-নির্যাতন রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারবে।
- ধর্ষণের পেছনে অনেক গুলো সহায়ক কারণ বা নিয়ামক আছে, সেগুলোকে আগে চিহ্নিত করতে হবে, কেবলমাত্র শাস্তির ভয় মানুষকে ধর্ষণ বা অবাধ যৌনতা থেকে মুক্ত করতে পারবে না।
- ধর্ষণ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তাই এর উৎসমূল খুজেঁ বের করে সেখানে চিকিৎসা করাই শ্রেয়।
- নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে, নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে এবং ধর্ষণের ঘটনায় নারীকে দোষারোপ করার মানসিকতা বদলাতে হবে।
- বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও পারিবারিক, সামাজিক সচেতনতামূলক আচরণবিধিই পারে ধর্ষণসহ অপরাপর অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ করতে।
- শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের মানুষকে মানবিক হওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মৌলিক চাহিদা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, সুশিক্ষা ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে।
- ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
- শাস্তি নিশ্চিত হলে ধর্ষন কমার সম্ভাবনা ত্রিশ পার্সেন্ট। বাকি সত্তর পার্সেন্ট হচ্ছে সচেতনতা। মানুষকে মাথায় এবং মগজে, মননে সচেতন হতে হবে, করতে হবে। সেটা নানা উপায়ে। রাষ্ট্র সচেতন হলে, জনগণ সচেতন হবে।
- নিজেকে দুর্বল ভাবলে হবে না, হিংস্র সমাজে মেয়েদেরকে আত্মরক্ষার কৌশল শিখতে হবে।
- মানসিকতা পরিবর্তন দরকার।
- আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে পারার চিন্তাই ধর্ষকদের সুযোগ দেয়, এই সুযোগ বন্ধ করতে হবে।
- যৌন সুরসুরিতে সয়লাব মিডিয়া। পর্নগ্রাফির বিস্তার রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
- সমাজের ও রাষ্ট্রের অসুস্থতা – সন্ত্রাস, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতার শাসনের স্থলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক।
- ধর্ষণকারীকে যদি শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে সবাই শাস্তি পাওয়ার ভয়ে সতর্ক হয়ে যাবে এতে ধর্ষণ কমে যাবে।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে