করোনার প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউনের জেরে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তরুণদের নিঃসঙ্গতায় ভোগার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুন।
করোনার প্রভাবে সামাজিক দূরত্বই এখন নতুন স্বাভাবিক জীবন, সবাই মিলে হুল্লোড় করার দিন শেষ। আর তা থেকেই নিঃসঙ্গতার প্রভাব ক্রমেই ধারণ করছে ভয়াবহ রূপ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নিঃসঙ্গতার কুপ্রভাব সবচাইতে বড় আঘাত হানবে তরুণ-তরুণীদের ওপর।
টাইম অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে, যুক্তরাজ্যের ‘অফিস অফ ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস (ওএনএস)’য়ের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানানো হয়, “৫৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সিদের সঙ্গে তুলনা করলে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সি মানুষেরাই এই মহামারীতে সবচাইতে বেশি নিঃসঙ্গতা অনুভব করছেন।”
এই পরিসংখ্যানের জন্য ৫ হাজার ২৬০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দীর্ঘমেয়াদি একাকিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এরমধ্যে ২ হাজার ৪৪০ জনকে প্রশ্ন করা হয় বিগত সাতদিনের লকডাউনে তারা একাকী অনুভব করেছেন কি-না।
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত সময়ে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়, যা বয়সের সঙ্গে নিঃসঙ্গতার নতুন এক সম্পর্ক উন্মোচন করে।
তরুণদের পাশাপাশি ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ৫০ শতাংশ এই লকডাউনে স্বীকার করেছেন নিজেদের নিঃসঙ্গতার কথা।
মানুষ যে বয়সেরই হোক না কেনো, এই লকডাউনে একাকিত্ব সামলানোর ক্ষেত্রে সবারই কোথাও না কোথাও মিল থেকেই যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন মানুষের যতই ‘ভার্চুয়াল’ বন্ধু থাকুক না কেন, সেখানে প্রকৃত সম্পর্ক গড়ে ওঠে খুব কমই। আর বয়স্কদের ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় সমস্যা হল সঙ্গীহীন জীবন কিংবা পরিবার থেকে দূরে থাকা।
এই পরিসংখ্যানের তথ্য থেকে আরও জানা যায়, একাকিত্ব একজন মানুষের আর্থিক অবস্থার ওপর বেশি নির্ভরশীল, তার ব্যক্তিত্বের ওপরই বরং কম।
যারা জীবনে চলার পথে একা, থাকেনও একা এবং কোনো রোগে আক্রান্ত তারা সমাজ থেকে ছিকটে পড়েন এবং ভুগতে হয় প্রচণ্ড নিঃসঙ্গতায়। আর এই নিঃসঙ্গতার আরেকটি নির্মম বাস্তবতা হল এই মহামারীর সময়ে নিজের অনুভূতি জানানোর মতো কাউকে পাওয়া সম্ভব নয়।
তবে আমরা সবাই খারাপ সময় পার করছি। এসময় সমাজের অন্যান্য মানুষের প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। প্রতিবেশীর খবর নিন, সে হতে পারে বয়স্ক, স্বামীহারা একজন মা কিংবা স্ত্রী হারানো পুরুষ।
মনে রাখতে হবে, তারা শুধুই নিঃসঙ্গ নন, জীবনধারণে মৌলিক অনুষঙ্গগুলো সামাল দিতেই তারা হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ান সামাজিক দূরত্বে থেকেই।
তারা কেমন আছেন, কোনো কিছু তাদের দরকার কি-না জানতে চান। কিছু করতে না পারলেও আপনার কুশল বিনিময়টুকুই তাকে অনেকটা মানসিক শক্তি যোগাতে যথেষ্ট।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন