মহামারি এই করোনার প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে আজ শুধুই হাহাকার। চারিদিকে শুধু মৃত্যু, রোগ আর চাকরি হারানোর চিৎকার। করোনাভাইরাস মহামারি এমন এক সংকট তৈরি করেছে যা নজিরবিহীন। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর জন্য প্রায় পুরো বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন। লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় দিশেহারা বহু মানুষ।
সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসাস, মানুষ জনের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এই মহামারির প্রভাব ইতিমধ্যে খুবই উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিশ্বের বিপুল সংখ্যক মানুষ একইসঙ্গে এমন মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মুখোমুখি হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে সরকারগুলো এ সংকটের বিষয়টি আমলে না নিলে আরো বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর্মী ও শিশুরা এই মানসিক চাপের ‘ব্যাপক বিস্তার’ ঘটতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
জাতিসংঘ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলমান করোনাভাইরাস সংকটে কানাডায় ৪৭ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীর মানসিক সহায়তা লেগেছে। চীনে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে বিষণ্ণতায় ভোগার সংখ্যাটা ৫০ শতাংশ; আর পাকিস্তানে স্বাস্থ্যকর্মীদের হালকা মানসিক চাপ আছে ৪২ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীর, তীব্র মানসিক সংকটে আছেন ২৬ শতাংশ!
জাতিসংঘের ওই তথ্য-উপাত্তে আরও বলা হয়েছে, ইতালি ও স্পেনের বাবা-মায়েরা জানিয়েছেন, চলমান সংকটে ৭৭ শতাংশ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মনোযোগহীনতা দেখা গেছে। ৩৯ শতাংশ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে অস্থিরতা ও খিটখিটে মেজাজ। স্নায়বিক দুর্বলতা দেখা গেছে ৩৮ শতাংশ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এবং একাকীত্বে ভুগেছে ৩১ শতাংশ শিশু।
যুক্তরাজ্যে আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৩২ শতাংশ তরুণ-তরুণীর মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক অবনতি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
গবেষণায় করোনা ছাড়াও সার্স মহামারির সময়ের মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকটিও তুলে ধরা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, ২০০০ সালে সার্স মহামারির সময়ে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছিল। আর করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বের শত শত কোটি মানুষ ঘর-বন্দি হয়ে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকায় এসময় মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরো বেশি বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।
কোভিড-১৯ মোকাবিলার মতো মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসায়ও অবশ্যই জোর দেওয়ার গুরুত্বারোপ করেছেন আধানম, জাতিসংঘের সর্বাঙ্গীণ সহযোগিতায় এটা মোকাবিলা হবে সরকারগুলো এবং সুশীল সমাজের যৌথ দায়িত্ব। মানুষের মনোগত ব্যাপারটা গুরুত্বের সঙ্গে নিতে ব্যর্থ হলে এটা সমাজে দীর্ঘ সময়ের জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হবে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন