শৈশবের দীর্ঘ মেয়াদি রোগ থেকে হতে পারে মানসিক সমস্যা:গবেষণা

শৈশবে মানসিক আঘাতপ্রাপ্তরা বেশি সহানুভূতিশীল হন

দীর্ঘ মেয়াদি রোগ নিয়ে জন্ম নেওয়া কিংবা জন্মের পরই এমন রোগে আক্রান্ত হওয়া শিশুদের বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর মধ্যেই মানসিক অসুস্থতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা অন্যান্য সুস্থ শিশুদের তুলনায় বেশি বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।
‘ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাইকোপ্যাথলজি’ শীর্ষক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয় এই গবেষণা।
এতে বলা হয়, যেসব শিশুর মাঝে দীর্ঘ মেয়াদি রোগ দেখা গেছে, ১০ বছর বয়সের মধ্যেই তাদের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা দেখা দেওয়ার হার বেশি। আর এই অসুস্থতা ১৩ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত তাদের মানসিক বিকাশের পথে বাধা হয়ে থাকে।
গবেষণার লেখক, যুক্তরাজ্যের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন’য়ের ডা. অ্যান মেরি ব্র্যাডি বলেন, “শৈশবের শেষাংশ আর বয়ঃসন্ধিকালের প্রাথমিক দিনগুলো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচাইতে শক্তিশালী যুক্তি দেখিয়েছে এই গবেষণা। দীর্ঘ মেয়াদি রোগগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর যে প্রভাব ফেলে তা প্রকৃত অর্থেই উল্লেখযোগ্য। আর এর প্রাথমিক ক্ষতিকর প্রভাবগুলো দেখা দিতে পারে বয়ঃসন্ধিকালের আগেও।”
এই গবেষণার জন্য সাত হাজার শিশুর নমুনা পরীক্ষা করেন গবেষকরা, জানার চেষ্টা করেন মানসিক অস্থিরতা, হতাশাগ্রস্ততা ইত্যাদি মানসিক অসুস্থতার কারণ। দীর্ঘ মেয়াদি রোগে এত কম বয়সেই কেনো তারা আক্রান্ত হল সেটাও কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা।
শিশুর দীর্ঘ মেয়াদি অসুস্থতার মাত্রা নির্ণয় করা হয় তার মায়ের মতামতের ভিত্তিতে। যারা সন্তানের ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সে স্বাস্থ্যের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে মতামত জানিয়েছেন তারা। এই দীর্ঘ মেয়াদি রোগগুলো হল সেগুলো যার কোনো চিকিৎসা নেই, একমাত্র উপায় হলো ওষুধ, থেরাপি, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার মাধ্যমে রোগগুলো সামলে রাখা।
দেখা যায়, এমন রোগে আক্রান্ত শিশুদের ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সে মানসিক অসুস্থতার শিকার হওয়া সম্ভাবনা অন্যান্য সুস্থ শিশুদের তুলনায় দ্বিগুন।
১৫ বছর বয়সে দীর্ঘ মেয়াদি রোগাক্রান্ত শিশুদের মানসিক অসুস্থতার শিকার হওয়া আশঙ্কা বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ শতাংশে।
আরেকটু গভীর পর্যবেক্ষণের জন্য হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে বিস্তারিত গবেষণায় যান। এই রোগের উপসর্গগুলো সাধারণত হয় মৃদুমাত্রার এবং নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। তারপরও গবেষণায় দেখা যায় তাদেরও ১০, ১৩ ও ১৫ বছর বয়সে মানসিক অসুস্থতার শিকার হওয়া সম্ভাবনা একই মাত্রায়।
এই সম্পর্কের মাঝে অন্যান্য প্রভাবকের ভূমিকাও বিবেচনায় আনেন গবেষকরা। সেই গবেষণার জন্য নমুনা তথ্য নেওয়া হয় ৯০’য়ের দশকে জন্ম নেওয়া শিশুদের নিয়ে করা গবেষণা থেকে।
এই তথ্যাদির মধ্যে ছিল ওই শিশুদের পরবর্তী জীবনের পারিবারিক অবস্থা, বন্ধুমহল, তাদের সন্তানদের আচরণ, স্বাস্থ্যের অবস্থা, স্কুলে ‘বুলিইং’য়ের শিকার হওয়া, শারীরিক অসুস্থতার জন্য স্কুল কামাই দেওয়া মাত্রা ইত্যাদি তথ্য।
গবেষকরা জানার চেষ্টা করেন এগুলো মধ্যে কোন বিষয়গুলো মানসিক অসুস্থতার জন্য প্রভাবক হতে পারে। দেখা যায়, ‘বুলিইং’য়ের শিকার হওয়া ও শারীরিক অসুস্থতার জন্য স্কুল কামাই দেওয়া এই দুটি বিষয় পরবর্তীতে মানসিক অসুস্থতা গড়ে ওঠার পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। এরমধ্যে শারীরিক অসুস্থতার জন্য স্কুল কামাই দেওয়া ছিল অন্যতম প্রভাবক।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleকরোনাভাইরাস: বাইরে বেরিয়ে কীভাবে নিরাপদে থাকবেন?
Next articleহৃদরোগীদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস কতটা ঝুঁকির?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here