শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘র্যাগিং’ ঠেকাতে নজরদারির জন্য একটি স্কোয়াড গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। পাশাপাশি র্যাগিংয়ের নামে জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের হাতে নির্যাতিত নবীনদের সার্বিক সহায়তার জন্য একটি কমিটিও করতে বলা হয়েছে।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) এ বিষেয়ে একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়। রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত জাহান নিজেই শুনানি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
হাইকোর্টের আদেশের পর আইনজীবী ইশরাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত তিন মাসের মধ্যে র্যাগিংবিরোধী কমিটি ও স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। কমিটি র্যাগিংয়ের অভিযোগ নেবে, র্যাগিং বন্ধে সুপারিশ করবে। আর স্কোয়াড র্যাগিং প্রতিরোধে বন্ধে ব্যবস্থা নিবে বা প্রতিকার দেবে।’
দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিংয়ের নামে সিনিয়রদের হাতে জুনিয়ররা নির্যাতিত হন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে নবীন শিক্ষার্থীরাই র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে থাকে বেশি। সম্প্রতি র্যাগিংয়ের কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
এই উদাহরণ তুলে ধরে আইনজীবী ইশরাত বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নবীন শিক্ষার্থীরাই সাধারণত সিনিয়রদের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিং কালচারে পরিণত হয়েছে। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে।’
এসব বিষয় তুলে ধরে গত বছরের ৯ অক্টোবর র্যাগিং বন্ধ ও র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিস দেন হাইকোর্টের এই আইনজীবী। ওই নোটিসে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক সহায়তায় জন্য র্যাগিং বিরোধী কমিটি ও পর্যবেক্ষণের জন্য স্কোয়াড গঠনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
কিন্তু সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ওই নোটিসের কোনো সাড়া না পেয়ে গত ৮ জানুয়ারি তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়েই আদালত র্যাগিংবিরোধী কমিটি ও স্কোয়াড গঠনের নির্দেশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জীবন-সম্মান রক্ষায় র্যাগিং বন্ধে নীতিমালা প্রণয়নে বিবাদিদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে। স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।