শিশুদের নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, শিশুরা অনেক বেশি বই কাঁধে নিয়ে ঘোরে। এতে তাদের কষ্ট হয়। পরীক্ষা নিতে নিতে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে বাচ্চাদের। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি মিলনায়তনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভাশেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, শিশুদের নিয়ে যেন বেশি বাড়াবাড়ি না হয়, এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা করতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূল কথা হলো, তারা যেন খেলাধুলা করতে পারে। আনন্দে থাকতে পারে। বইয়ের ভার যেন বেশি হয়ে না যায়।
এম এ মান্নান জানান, পিইসি পরীক্ষা থাকবে কিনা, তা পর্যবেক্ষণে রয়েছে। পিইসি পরীক্ষা নিয়ে বিশেষজ্ঞরাও বিভক্ত। একাংশ ভালো বলছেন তো অন্যরা বলছেন ভালো নয়।
একই দিনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে রাজধানীর সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিননন্দন করার প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মহানগরের ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নতুনভাবে সাজানো হবে। আর পূর্বাচলে ১১টি এবং উত্তরায় ৩টিসহ মোট ১৪টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। এক হাজার ১৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি শুরু হবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্প শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে এক হাজার ১৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে রাজধানী ঢাকার ৩৪২টি স্কুলে নতুনভাবে সংস্কার কাজ করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় উত্তরা ও পূর্বাচলে ১৪টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে রাজধানীর সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দৃষ্টিনন্দন করতে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজধানীর যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ বা আধুনিক করার সুযোগ নেই, সেগুলোকে কাছাকাছি কোনও বড় পরিসরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হবে। সব বিদ্যালয়ে তৈরি করা হবে খেলার মাঠ। প্রতিটি বিদ্যালয়কেই পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়া হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর ১৫৪টি বিদ্যালয়ের ২ হাজার ৯৭৫টি কক্ষ নতুনভাবে নির্মাণ ও দৃষ্টিনন্দন করা হবে। আর ১৭৭টি বিদ্যালয়ের এক হাজার ১৬৭টি কক্ষের অবকাঠামো উন্নয়নসহ সৌন্দর্য বাড়ানো হবে। প্রকল্পের আওতায় মোট দুই লাখ শিশু শিক্ষার্থীর জন্য শিশুবান্ধব শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন