উদ্দেশ্যপ্রবণতা বৃদ্ধ বয়সেও মস্তিষ্ক সচল রাখতে সাহায্য করে- এবার এমন কথা বলছেন গবেষকরা।
সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের ওপর একটি গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, যারা বিশ্বাস করেন ‘প্রতিটি জীবনেরই একটি অর্থ ও লক্ষ্য আছে; মানুষের জন্ম কিছু করার জন্য’ তাদের মস্তিষ্ক হতাশাবাদীদের তুলনায় বেশি সচল।
এর কারণ হিসেবে বলা হয়, এ ধরনের ইতিবাচক ভাবনা মস্তিষ্কের মৃত টিস্যুর ভেতরে রক্ত সঞ্চালন ঘটায়, ফলে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মস্তিষ্ক সচল হয়ে যায়।
মনোবিজ্ঞানের মতে, টিস্যুর মৃত্যুই বৃদ্ধ বয়সে অচলাবস্থা, ডিমেনশিয়ার মতো রোগের কারণ, একইসঙ্গে মস্তিষ্ক মৃত্যুরও।
সিকাগোর দ্য রাস আলঝেইমারস ডিজিজ সেন্টারের নিউরোসাইকোলোজিস্ট ও এই গবেষণার প্রধান গবেষক পার্ট্রিসিয়া বয়লে বলেন, নেতিবাচক চিন্তা ও আবেগ মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য দায়ী। নিজেকে একা ভাবার কারণে প্রথম যে রোগটি দেখা দেয় তা হলো আলঝেইমার। এতে অকাল মৃত্যু ও প্যারালাইসিস হওয়ার ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং, দ্য ন্যাশনাল হার্ট, লাং অ্যান্ড ব্লাড ইনস্টিটিউট এবং দ্য ইলিনোইস ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ-এর অর্থ সহায়তায় গবেষণাটি সম্পন্ন হয়।
বয়লে বলেন, আমাদের গবেষণায় পাওয়া গেছে, যারা উদ্দেশ্যপ্রবণ, অর্থাৎ জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা রাখেন তাদের মস্তিষ্ক হতাশাবাদীদের তুলনায় বেশি সচল থাকে। কেননা মানসিক অবস্থার ওপর মস্তিষ্কের টিস্যু মৃত্যুর হার নির্ভর করে। তবে অতিরিক্ত রক্তপ্রবাহ আবার স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
রক্তচাপ, স্ট্রোক, কর্মক্ষমতা, ডায়াবেটিস, বিষণ্নতা ও আলঝেইমার সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার পরে ৮০ বছর বয়সী ৪৫৩ জনের মধ্যে এ গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত দেখা গেছে তাদের মস্তিষ্ক সচল থাকার পাশাপাশি তারা ডিমেনশিয়া রোগ মুক্ত রয়েছেন।
সুস্থতা কেবল রোগমুক্ত জীবনযাপন করাই নয়। বৃদ্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগ মুক্ত থাকার পাশাপাশি আনন্দিত থাকাও গুরুত্বপূর্ণ। স্বেচ্ছাসেবা, নতুন কিছু শেখা এবং সমাজ সেবায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমেও এ বিষয়টি আসতে পারে।