বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সামাজিক মাধ্যম একটি দারুণ জায়গা। অনেকদিন কথা না হলেও কে কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন সবই জানা যায়। ফলে দূরত্ব বোঝা যায় না। আবার সাম্প্রতিক সময়ের নানা খবরও পাওয়া যায়। কিন্তু এত সুবিধার মাঝেও আছে কিছু অসুবিধা। সামাজিক মাধ্যমের কারণে অনেক সময় মানসিক চাপ তৈরি হয়। এই মানসিক চাপ কমানোর কিছু পদ্ধতি জেনে নিন।
বন্ধুদের আপডেট জানতে কিংবা গ্রুপ চ্যাট খুলে প্ল্যান করে দেখা করার জন্য ফেসবুক দারুণ। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের কিছু খারাপ প্রভাব শরীর ও মনের ওপরে পড়ে। সামাজিক মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ঘরের বাইরে যাওয়া কমে যায়, বন্ধুদের আড্ডাতেও স্মার্ট ফোনে মুখ গুঁজে থাকতে দেখা যায় এবং রাতের ঘুম কমে যায়। এছাড়াও নিউজ ফিডে অন্যদের আপডেট দেখে নিজের জীবনের সঙ্গে তুলনা করার প্রবণতা বেড়ে যায়। অন্যের ঘুরতে যাওয়া দেখে, দামি গাড়ি দেখে কিংবা অভিজাত জীবনযাত্রা দেখে ঈর্ষা কাতর হয়ে থাকেন অনেকেই। এতে মানসিক চাপ, একাকীত্ব ও হতাশা বাড়ে। জেনে নিন সামাজিক মাধ্যমে আসক্তির কারণে তৈরি মানসিক চাপ কমানোর কিছু উপায়।
- এধরণের নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাচার একটাই উপায় আছে। আর তা হলো, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের সময় কমিয়ে দেয়া। সামাজিক মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় কাটানো নেশার মতো। এই নেশা থেকে বাঁচতে দূরে থাকতে হবে সোশ্যাল সাইটগুলো থেকে।
- মোবাইল ফোনের হোম স্ক্রিন থেকে সোশ্যাল অ্যাপগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। একটা ফোল্ডারে রাখতে পারেন অ্যাপগুলো। সহজেই ঢুকতে না পারার কারণে ব্যবহার কিছুটা হলেও কমবে।
- ফোন সাইলেন্ট করে রাখুন। এতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করার সময় নোটিফিকেশনের শব্দে মনোযোগ নষ্ট হবে না। এছাড়াও নোটিফিকেশন চেক করার জন্য সোশ্যাল সাইটে ঢুকে সময় কাটানোর অভ্যাস কমবে।
- সোশ্যাল সাইটে ঢোকার টাইম ঠিক করে নিন। নিজের সীমা নিজেই বেধে দিন। যেমন দিন শেষে ২০-৩০ মিনিট এর বেশী থাকবেন না সোশ্যাল সাইটে, এটা প্রতিজ্ঞা করুন মনে মনে।
- মাঝে মাঝে নিজেকে বিরতি দিন। নিজের একাউন্টে কয়েকদিন না ঢুকে সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরের জীবন যাপন করুন।
সামাজিক মাধ্যমের ইতিবাচক ব্যবহার: সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে ভালো থাকার উপায় আছে। যেসব ব্র্যান্ড কিংবা মানুষের পোস্ট দেখে ভালো লাগে তাদেরকে ফলো করুন। আর যাদের পোস্ট দেখতে ভালো লাগে না কিংবা মনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে, তাদেরকে আনফলো করে দিন। মজার মজার মিম, অনুপ্রেরণার বাণী শেয়ার করে এমন পেজ লাইক দিয়ে রাখুন। এতে মানসিক চাপ কমবে। সামাজিক মাধ্যমে আড্ডা না মেরে প্ল্যান করুন সামনাসামনি দেখা করার। এছাড়াও ভিডিও চ্যাটিং করতে পারেন। ফেস-টু-ফেস কন্টাক্ট করলে সম্পর্ক ভালো হয়।
মনে রাখবেন, অন্যদের যেসব আপডেট দেখছেন সেটা তাদের জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো। তাদেরও দুঃখ আছে, না পাওয়ার হতাশা আছে। তাই এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে পৃথিবীতে শুধু আপনারই কষ্ট আছে, আর কারও নেই।
সূত্র: মেডিকেল এক্সপ্রেস