সাইবার সাইকোলজি, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ও আচরণ নিয়ে করা নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে একটানা অনলাইনে থাকা ও ক্রমাগত মোবাইলের ব্যবহার মানব মনের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
গবেষকরা জানতে পেরেছেন, ক্রমাগত মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকলে মনোনিবেশ নষ্ট হয় এবং মানুষ এটি নিয়ে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে মানুষের মধ্যে অনলাইন নজরদারি বাড়ানোর মনোভাব সৃষ্টি হয় এবং তারা বার বার অনলাইনে ঢুকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মের নোটিফিকেশন, ইমেইল, টেক্সট ম্যাসেজ ইত্যাদি চেক করে। এতে করে মানুষের মন শান্ত হওয়ার সুযোগ পায় না এবং মনকে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর স্থির রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
গবেষণায় জানা গেছে, যেসব মানুষ স্মার্টফোনে বেশি সময় অনলাইনে থাকে তাদের মনোনিবেশ পুরনো কোনো ইমেইল, ম্যাসেজ বা অতীতের কোনো লেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এছাড়া তারা পরবর্তী কোনো ইমেইল বা ম্যাসেজ নিয়ে ভাবতে থাকে যা তাদের প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডের ওপর স্বাভাবিক মনোনিবেশ নষ্ট করে বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। এর ফলে মানুষের স্বাভাবিক অনুভূতি ও চিন্তাশক্তি বিঘ্নিত হয়।
স্মার্টফোন বা ট্যবলেট কম্পিউটারে অনলাইনে সংযুক্ত থাকার উপকারিতা থাকলেও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার মানব মনকে সমূহ ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়। অনলাইনে থেকে বারংবার মোবাইলে ইমেইল, টেক্সট ম্যাসেজ নিয়ে পড়ে থাকলে মানুষের মধ্যে পরিবারকে সময় দেয়ার প্রবণতা কমে যায়, বন্ধুত্বে দূরত্ব সৃষ্টি করে। এছাড়া এটি ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটায় এবং মনকে বিষিয়ে তোলে। কোনো টেক্সট ম্যাসেজের রিপ্লাই পাওয়ার জন্য মানুষের মনে উদ্বিগ্নতা ও নেতিবাচক চিন্তার উদ্রেক হয়। এর ফলে মানসিক চাপের জন্ম নেয় যা মনকে উদ্বেলিত করে তোলে এবং মন অস্থির হয়ে পড়ে।
নিউ ইয়র্কের বিশিষ্ট মনোবিদ মার্লিন উই বলেছেন, ক্রমাগত অনলাইনে থেকে স্মার্টফোনের ব্যবহার মানসিক চাপের জন্ম দেয় এবং মানুষকে অমনোযোগী করে তোলে। তাই একজন মানুষকে অবশ্যই স্মার্টফোনে অনলাইনে থাকার সময় সীমিত করে মানুষের সাথে মুখোমুখি যোগাযোগ স্থাপন বাড়ানো উচিত।
অনুবাদ করেছেন: তৌহিদ সোহান
তথ্যসূত্র : সাইকোলজি টুডে
ওয়েব লিংক : https://www.psychologytoday.com/intl/blog/urban-survival/201812/study-finds-being-your-phone-constantly-can-be-harmful