প্রত্যেক ধর্মই সুষ্ঠুভাবে জীবন যাপনের নির্দেশনা প্রদান করে। বয়ঃসন্ধিকালে ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতিপালন মানুষের মনকে নানাবিধ খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমোলজি’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক কিংবা প্রতি সপ্তাহে ধর্মীয় প্রার্থনা বা ধ্যান করা মানুষরা ২০ বছর বয়সের পর বেশ ইতিবাচক ও পরিতৃপ্ত জীবন যাপন করতে পারেন। কিশোর বয়সে বা বয়ঃসন্ধিকালে ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিপালনকারী মানুষদের নিয়ে এ গবেষণা করা হয়।
গবেষণা থেকে জানা গেছে, বাল্যকাল ও কৈশোরে ধর্মীয় বিধি-নিষেধ অনুশীলনকারীরা ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছেন। তারা তাদের পরবর্তী জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ পরিতৃপ্তি অনুভব করেন। এসব মানুষরা ধর্ম পালন না করা মানুষদের চেয়ে অনেক সুখী থাকেন। এদের মধ্যে বিষন্নতা, ধূমপানের প্রবণতা, অবৈধ যৌনাচারের প্রবণতা অনেক কম থাকে।
গবেষক ইং চেন বলেন, এই গবেষণা প্রতিটি সন্তানের মা-বাবা ও আমাদেরকে ধর্মপালনের ইতিবাচক দিকগুলো বুঝতে সাহায্য করবে। অনেক শিশুই ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিপালনের মধ্য দিয়েই বেড়ে ওঠে। এটা তাদের জীবনকে প্রভাবিত করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি তাদের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, সামগ্রিক সুখানুভূতি ও পারিপার্শ্বিকতার ইতিবাচক প্রভাবক।
গবেষকরা ধর্মীয় অনুশাসনে বেড়ে ওঠা এবং ধর্ম প্রতিপালন ছাড়াই বেড়ে ওঠা শিশুদের মায়েদের নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিপালনের ফলাফল দেখতে গবেষকরা মাতৃস্বাস্থ্য, পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, বিষন্নতার লক্ষণ ও এর ইতিহাস ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় রাখেন। ফলাফলে দেখা গেছে, বাল্যকাল কিংবা কৈশোরে ধর্মীয় বিষয়ে যোগ দেয়া মানুষরা ২৫-৩০ বছর বয়সে ১৮ শতাংশ বেশি সুখে থাকেন। সাধারণের চেয়ে এদের মধ্যে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা ২৯ শতাংশ এবং মাদকাসক্তি থেকে দূরে থাকার প্রবণতা ৩৩ শতাংশ বেশি। বেড়ে ওঠার সময় যারা প্রতিদিন প্রার্থনা বা ধ্যান করেছেন তারা যুবক বয়সে ১৬ শতাংশ বেশি সুখ অনুভব করেন। এদের মধ্যে অল্পবয়সে যৌনাচারে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ৩০ শতাংশের কম এবং যৌনরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ কম থাকে।
গবেষকদের একজন- ভ্যান্ডার ওয়েলি জানান, ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিপালনের মাধ্যমে কৈশোরের বিভিন্ন বিপদ যেমন : হতাশা, মাদকে আসক্ত হয়ে পড়া, অমূলক ঝুঁকি গ্রহণ ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকা যায়। আরো ভালোভাবে বলতে গেলে- ধর্ম পালন সুখী জীবন যাপনে, সামাজিকতা, জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।
তথ্যসূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস।
অনুবাদটি করেছেন তৌহিদ সোহান।