মাদকাসক্ত ব্যক্তির নিজের জীবনের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাই জীবনের সুশৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যক্তির মাদক বর্জন অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, একই দলের বন্ধুদের মধ্যে কেউ একজন মাদকাসক্ত কিন্তু অন্যেরা নয় কেন?
পারিবারিক নৈতিকতার অভাবে মানুষ মাদকাসক্ত হয়। এটা অনেক পুরাতন মতবাদ। কিন্তু এই মতবাদের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাই, এই মতবাদকে ঝেড়ে ফেলে বৈজ্ঞানিকরা অন্য দুটি মতবাদের কথা বলেছেন। একটি হল, যে ব্যক্তি মাদকাসক্ত সে কোন না কোন শারীরিক দুর্বলতার শিকার। আর অন্যটি হল, মাদক গ্রহন গ্রহীতাকে আনন্দ দেয় এবং এজন্য সে বারবার এটি গ্রহণ করতেই থাকে।
রোগের ধরণ অনুযায়ী, মাদক নেবার আগেই কোন ব্যক্তির শারীরিক দুর্বলতা থাকে এবং সে জন্য সে এটা গ্রহন করে। কিন্তু আমরা জানি মাদক গ্রহণ করার ফলেই মানুষের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক বা মানসিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু রোগীর মতবাদ যে, মানুষ তার শারীরিক দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠার জন্যই মাদক নেয়। কিন্তু এটা সঠিক নয়।
অন্য মতবাদটি বলছে, মানুষ মাদক নিয়ে আনন্দ পায়। তাই বারবার এটি গ্রহণ করে। যে মাদকে যত দ্রুত আনন্দ পাও্য়া যায়, সেটা গ্রহণের প্রবণতা মানুষের বেশি। এই মতবাদটি আরও বলে যে, মাদক আমাদের ব্রেইন এর ডোপামাইনকে সক্রিয় করে তুলে। যার ফলে মানুষের কিছু কাজ যেমন খাওয়া বা প্রজনন এগুলো করার প্রবণতা বাড়ে।
যারা মাদক নেয়, তারা হয়তো প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সাধারণভাবে কোন আনন্দ বা মজা পায় না। তাই জীবনকে আরো একটু রোমাঞ্চকর করার জন্য মাদক নেয়। এই ধরনের মানুষ তাদের কাজে, ব্যক্তিগত জীবনে বা পারিবারিক জীবনে সুখি নয়। এমন মানুষের জিনগত সমস্যাও থাকতে পারে। যে কারণে তাদের ডোপামাইন ঠিকমতো কাজ করে না, তাই ডোপামাইনের অকার্যকারিতাও মাদক সেবনের জন্য দায়ী। এজন্য কিছু মানুষ মাদক নেয় আর অন্যরা নেয় না। এছাড়াও মূলত রোগ তত্ত্ব ও আমাদের ব্রেইনে মাদকের প্রভাব, দুটিই মাদক সেবনের জন্য দায়ী।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।
অনুবাদটি করেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস।