শরীর অবশ ও নার্ভাস হয়ে আসে কেন?

0
444

প্রশ্ন: এটা আমার জীবন মরনের প্রশ্ন।দয়া করে ভালভাবে পড়ে দেখবেন। আমি ছেলে। বয়স ১৮-১৯ হবে। ওজন ৫৪ কেজি। ২ মাস আগে এক মেডিসিন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে Retin-A ক্রিম ‘Timex 25 mg’ ও ‘Ecovit-S 200 mg’ ১৮ দিন খাই। ১৮ টি ওষুধ খাওয়ার পর হঠাৎ করে বাদ দেই। যেদিন ট্যাবলেট টা খাওয়া বাদ দেই, সেদিন রাতে (১টায়) ঢাকায় যাবার সময় গাড়ির মাঝে হঠাৎ ১. বমি-বমি মনে হয় ও মাথা ঘোরে। ২. শরীর অবশ ও নার্ভাস হয়ে আসে। ৩. পুরো শরীর আগুনের মত গরম হয়ে আসে ও জ্বলে (যা সহ্য করার মত নয়)। ৪. ভিতর-মুখ, গলা একদম শুকিয়ে আসে, মনে হচ্ছিল আমি মরে যাচ্ছি। আর বাঁচবোই না।
সেদিন রাতেই আবার ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসি। আগে কোনদিন গাড়ির মাঝে আমার এমন টা হয়নি। রংপুরের ভালো মেডিসিন ডাক্তারের কাছে (প্রফেসর অমরেশ চন্দ্র সাহা/Popular ডায়াগনস্টিক) বিভিন্ন পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে কোন অসুখ ধরা পাড়েনি। ‘Alben ds’ ১দিন, ‘Bost ও Finix’ ১৫ দিন খেয়ে মোটামুটি ভালই সুস্থ হয়েছিলাম। ডাক্তার বলেছে তোমার কোন অসুখ নেই।
কিন্তু এখনো সমস্যা হয়| মাথার ভিতর সামান্য চাপ-চাপ মনে হয়। হঠাৎ করে সারা শরীর খুব গরম হয়ে আসে, প্রচুর জ্বালা-পোড়া করে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ও দুপর বেলা জ্বালা -পোড়া টা বেশি মনে হয়। কিছুই ভাল লাগেনা। অস্থির-অস্থির লাগে। ভেতরে কেমন-কেমন অশান্তি মনে হয়। হস্তমৈথুন করলে ২-৪ মিনিট পর ভিতর ও মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসে, মুখে একটুও লালা থাকেনা (এই সময় খুবি ভয় লাগে)। ৭-৮ গ্লাস পানি খেলেও ভিতর শুকিয়ে আসে। স্বপ্ন দোষ বা বির্যপাত হলে সমস্যা গুলো আরো বেড়ে যায়। আবার মাঝে-মাঝে একটু ভাল লাগে। সেই ২ মাস থেকেই সমস্যা গুলো। এখন ডাক্তার পরিবর্তন করেছি। নতুন ডাক্তারও বিভিন্ন পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে কোন অসুখ পায়নি। উনি ‘Tab. Esoral 20 mg, Epiclon 0.5mg ও Nexito 5’ দিয়েছেন। এক দিন মাত্র খাইছি। বুঝতেছিনা এগুলো কি সমস্যা? Timex খাবার ফলে কি এমন হয়েছে? দয়া করে বলেন এগুলো কি সমস্যা? আর কোন ডাক্তার কে দেখাবো (হরমোন/মেডিসিন/যৌন/মানসিক) দেখাবো কিনা? আশা করছি, সঠিক সমাধান দিবেন।খুবই সমস্যার মাঝে আছি।
ডা. জিল্লুর কামাল: তোমার জিজ্ঞাসাকে দুটো ভাগ করে উত্তর দিচ্ছি।
১. টাইম্যাক্স ছাড়ার পর সমস্যা: হঠাৎ ওষুধটা ছাড়ার কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক ঔষধ আছে যেগুলো হঠাৎ করে ছাড়া যায় না। তাই যে কোন ওষুধ বন্ধ করতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
২. উপসর্গগুলো শুনে মনে হচ্ছে তুমি বিষন্নতায় আক্রান্ত। বর্তমানে যে ওষুধগুলো খাচ্ছো সেসব চালিয়ে যাও। সুযোগমত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নাও।
যে কোনভাবে বীর্যপাতের পর অনেকে দূর্বল বোধ করেন। এটা অধিকাংশ সময়েই মানসিক চাপ থেকে উদ্ভূত। কারণ, আমাদের দেশে ছেলে/পুরুষরা বীর্যকে অনেক দামী- শরীরের “রাজা” মনে করে। তাই শরীর থেকে বীর্য বের হয়ে গেলে তারা “রাজা” হারানোর কষ্টে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। অথচ বাস্তব বিষয় হচ্ছে বীর্য হচ্ছে কফ-থুথুর মতই একটা বস্তু যা শরীর থেকে বের হবার জন্যই তৈরী হয়।
বেশী দূর্বলতা বোধ করলে বীর্যপাতের পর এক গ্লাস ওরস্যালাইন খেতে পারো।
ধন্যবাদ,
ডা. মো. জিল্লুর কামাল
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ।

Previous articleবর্তমান তরুণ প্রজন্মের একাকীত্বতা
Next articleমানসিক অত্যাচারের লক্ষণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here