আত্মহত্যা প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব পরিবার ও সমাজ থেকেই

আত্মহত্যা কি?- আমরা সবাই কম বেশি জানি এর উত্তর। আত্মহত্যা মানে নিজেকে খুন করা। কিন্তু চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষাতেও কি এর উত্তর একই? আত্মহত্যা নিয়ে বর্তমানে বহু দেশেই চলছে বিভিন্ন কার্যক্রম। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে হতাশা, বিষণ্নতাসহ বহু কারণ। প্রতিকারের জন্যও চলছে সেমিনার, কর্মশালা ও আরো নানাবিধ কর্মকান্ড। শুধু মনোরোগ বিশেষজ্ঞগণই নন এর সাথে আরো কাজ করছেন অনেক সমাজকর্মীরাও। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে ‘সুইসাইড প্রিভেনশন ক্লিনিক (এসপিসি)। আত্মহত্যা ও তার প্রতিরোধ নিয়ে নিরসল কাজ করে যাচ্ছে এই ক্লিনিক। তাছাড়াও প্রতি শনিবারে থাকছে ক্লিনিকের বিশেষ কার্যক্রম। এ বছর আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসেও ছিল ক্লিনিকের পক্ষ থেকে রাজধানী জুড়ে পোস্টারিংসহ অন্যান্য কার্যক্রম। ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মহসিন আলী শাহ্‌ আত্মহত্যা ও এর প্রতিরোধের ব্যাপারে দিলেন বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মহসিন আলী শাহ্‌ মনে করেন, আত্মহত্যা মানে নিজেকে হত্যা করা ঠিকই কিন্তু পাশাপাশি এর সাথে থাকতে হবে নিজেকে খুন করার প্রগাঢ় ইচ্ছাশক্তি। আত্মহত্যার কারণ অনেক কিছুই হতে পারে, কিন্তু নিজেকে শেষ করে দেয়ার যে গভীর বাসনা, মূলত সেটাকেই আত্মহত্যা বলা যায়।
প্রতিটি মানুষের ভেতরে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি আর সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে বিবেক বা মস্তিষ্ক। মানুষের জীবনে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রকৃতপক্ষে, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিকেই ধরা যায় আত্মহত্যার মূল কারণ। এর মধ্যে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রোগ যেমন ম্যাসিভ ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার, এপিলেপসি, সিজোফ্রেনিয়া, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার ইত্যাদি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য ও গবেষণা অনুযায়ী, পৃথিবীতে আত্মহত্যা করে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগের কারণ বিষণ্নতা রোগ। “আমাদের বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যজনিত রোগের মধ্যে ৮০ ভাগই ম্যাসিভ ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারের শিকার, সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ শতাংশ” বলেন, ডা. মহসিন আলী শাহ্‌।
“আত্মহত্যা প্রতিরোধে সবার আগে যা করণীয় তা হলো এর কারণগুলো খুঁজে বের করা। শুধুমাত্র চিকিৎসক নয়, পাশাপাশি আত্মহত্যা প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব পরিবার এবং সমাজ থেকেই”, আত্মহত্যা প্রতিরোধে করণীয় বলে ঠিক এমনটাই মনে করেন ডা. মহসিন আলী শাহ্‌। 
উল্লেখ্য গত ১০ সেপ্টেম্বর পালিত হলো বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস।
অভ্র আবীর, প্রতিবেদক
মনেরখবর.কম


লক্ষ্য করুন- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খবর বা প্রেস রিলিজও আমাদের পাঠাতে পারেন। বৈজ্ঞানিক সেমিনার, বিশেষ ওয়ার্কশপ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনো খবর পাঠাতে news@www.monerkhabor.com এই ইমেইলটি ব্যবহার করতে পারেন আপনারা।

Previous articleআমার মেয়ে অল্পতেই রেগে যায়, সারাক্ষণ ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখে
Next articleআত্মহত্যার ব্যাপারে সচেতনতা আগের চাইতে এখন অনেক বেশি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here