পর্নোগ্রাফীতে যে সহজতা থাকে, যে উত্তেজনার মাত্রা থাকে বাস্তব জীবনে তা থাকে না। কারণ অভিনয়ে বাড়াবাড়ি রকমের কিছু না থাকলে মানুষের মনে তা ধরে না। কিন্ত সমস্যা হল যৌন শিক্ষার সামাজিক স্বীকৃত কোনো মাধ্যম না থাকাতে এবং পর্নোগ্রাফীর সহজলভ্যতার কারণে পর্নোগ্রাফীই যৌন শিক্ষার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কয়েক দশক আগে যেমন ছিল বিভিন্ন দাওয়াখানার লিফলেট বা প্রচার পত্র। এই দুটি উৎসই বলা যায় তরুণদের যৌন জ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে।
সাধারণত পর্নোগ্রাফীতে যে ধরনের পুরুষদের অভিনয়ের জন্য কাস্ট বা বাছাই করা হয় তাদের সবারই পুরুষাঙ্গের আকার বড় থাকে। সুবিধা হল এই যে এতে ক্যামেরায় দৃশ্য ধারণ করাটা সহজ হয়। কিন্ত ছবি দেখার সময় দর্শকের এ কথাটা মনে থাকে না। অনেকে হয়ত সত্যি কথাটা জানেনও না। ফলে পারফরম্যান্স নিয়ে দুশ্চিন্তা আসে। যারা হিউম্যান এনাটমি বা অঙ্গসংস্থান বিদ্যা না জানেন তাদের জন্য এ ধরনের দুশ্চিন্তা আসাটা স্বাভাবিক। কারণ মুভিতে যতজন পুরুষ দেখছেন তাদের সবার পুরুষাঙ্গই তুলনামুলক ভাবে বড়। ফলে এ ধরনের একটা বিশ্বাস সহজেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠতে দেখা যায় যে পুরুষাঙ্গ বড় হলে ভাল সেক্স করা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন হারবাল ও ইউনানি চিকিৎসা কেন্দ্রের বিতরনকৃত লিফলেটে এধরনের কথা প্রায়ই দেখা যায় যে তাদের ঔষধ ব্যবহার করলে পুরুষাঙ্গ সবল দৃঢ় মোটা ও তেজী হয়। রোগীদের মুখে যৌন সমস্যা শুনতে গেলে বোঝা যায় কে কোনটা দ্বারা আক্রান্ত। লিঙ্গের আকার আকৃতি নিয়ে উভয় দিক থেকেই কিছু ভুল ধারণা তরুণদের সংক্রামিত করে। পরবর্তিতে ঐ ভুল ধারণাগুলোই সময়ের পরম্পরায় প্রচলিত বিশ্বাসে রূপ নেয়। ধারণা যখন বিশ্বাসে রূপ নেয় তখন সেখান থেকে একজনকে বের করে আনা কঠিন। তার আবেগ অনুভূতি ও আচরণ ঐ বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হতে শুরু করে।
তারা নিজেদেরকে ছোট ভাবতে শুরু করে। আত্মবিশ্বাস কমে যায়। শুরু হয় পারফরম্যান্স এ্যাংজাইটি। এ্যাংজাইটির সাথে যৌন উত্তেজনার সম্পর্কটা বিপরীতমুখী। এ্যাংজাইটি বাড়লে যৌন উত্তেজনা কমে যায়। কারণ মনোযোগ তখন যৌন কামনা থেকে সরে এ্যাংজাটির বিষয়ের উপর চলে যায়। মজার বিষয় হল এখানে মনোযোগের বিষয় কিন্ত যৌনাঙ্গের সাথে জড়িতই থাকে। কিন্ত সে ধরনের চিন্তা যৌন কামনার মত মনকেও নাড়া দেয় না শরীরকেও জাগায় না। সমস্য সংক্রান্ত চিন্তার মধ্যে হারিয়ে যায়। এটাতো গেল মনের ব্যাপার যা ব্রেইনের হায়ার ফাংশন সেন্টারে ঘটতে থাকে।
শরীরেও তখন আরেকটি ঘটনা ঘটে। এ্যাংজাইটিতে ইপিনেফ্রিন নরইপিনেফ্রিন নিসরন বেড়ে যায়। যা পেরিফেরাল বা প্রান্তীয় রক্তনালীকে সংকুচিত করে। ফলে লিঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। লিঙ্গে রক্ত প্রবাহ কম হলে লিঙ্গের উত্থান সন্তোষজনক হয় না।
তাহলে দেখা যাচ্ছে একটি ভ্রান্ত বিশ্বাস কিভাবে যৌন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। আর একারণেই সেক্স্যুয়াল পারফরম্যান্স এ্যাংজাইটি না কমিয়ে বা তার সমাধান না করে দিনের পর দিন রোগীকে ভায়াগ্রা খাইয়ে কাজ হয় না ।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে