হার্ট রেট ১২০ হয়ে গিয়েছিল

প্রশ্ন: আমার ২৩ বছর বয়স। আমার মা মারা যাবার পর থেকে আমি একরকম সমস্যায় ভুগছি। সবসময় মনে খারাপ করা চিন্তা আসত। মনে হতো আমি মরে যাব, বুকের মধ্যে চাপ চাপ লাগত, বুক ধড়ফড় করত। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কোনো হার্টের সমস্যা ধরা পড়েনি। কিন্তু আমার হার্টবিট এখন এত বেড়ে গেছে যে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলেও আমি আমার হার্টবিট শুনতে পাই। হার্ট রেট ১২০ হয়ে গিয়েছিল। তখন ভয় পেয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। উনি আমাকে  Betacap tr 40  নামে একটি ওষুধ দেন। আমি গত দু-বছর এই ওষুধটি খাচ্ছি। রাতে শোয়ার পর বালিশে কান পাতলে নিজের হার্টবিট শুনতে পাই। আমার সমস্যাটা কি হার্টের নাকি মানসিক? -রিয়া দেব।
উত্তর: রিয়া প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সমস্যা হলো বুক ধড়ফড় করে, বুকে চাপ অনুভব হয়, সবসময় মৃত্যুভয় কাজ করে। আর এসব কারণে আপনার একটাই দুশ্চিন্তা যে, আপনার হার্টের অসুখ হলো কিনা? আমরা আপনার সমস্যাগুলোকে এভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি- এগুলো শারীরিক কারণে যেমন হতে পারে তেমনি মানসিক কারণেও হতে পারে। যেমন ধরুন আপনার বুক ধড়ফড় করে। মানুষ যখন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়, ভয় পায়, মনে অস্থিরতা অনুভব করে তখন শরীরের প্রতিটা অঙ্গে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এর ফলে হার্টবিট বাড়ে এবং বুকে চাপ অনুভব করাসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত লোকের ঘুম সহজে আসে না। এমতাবস্থায় বিছানায় বাঁ কাত হয়ে শুয়ে থাকলে হার্টবিটের শব্দ বিছানা বালিশ দ্বারা পরিচালিত হয়ে কানে আসবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং এতে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। আমি মনে করি আপনার উপসর্গগুলো মানসিক কারণেই হচ্ছে।
কারণ হিসেবে বলা যায়- প্রথমত, উপসর্গগুলো আপনার মা মারা যাবার পর (একটা মানসিক আঘাত) থেকে শুরু হয়েছে । আর দ্বিতীয়ত, অনেক ডাক্তার আপনি দেখিয়েছেন যারা বলেছেন আপনার হার্টের কোনো সমস্যা নেই। তাই আমার মনে হচ্ছে আপনি ‘এংজাইটি ডিজঅর্ডার’ নামক মানসিক রোগে ভগুছেন। এজন্য আপনি নিচের ঔষধগুলো ব্যবহার করতে পারেন: ১।  Tab Esita 10mg  সকালে ১টা করে (১ মাস) ২। Tab Telazine 1mg সকালে অর্ধেক ও সন্ধ্যায় অর্ধেক (১ মাস) ৩। Tab Propanol 10mg  সকালে ১টা এবং সন্ধ্যায় ১ টা (১ মাস) ৪। Tab Rivotril 0.5mg ১ টা করে সন্ধ্যায় (১ মাস) আর সবচেয়ে ভালো হয় আপনার নিকটস্থ কোন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক বহির্বিভাগে দেখালে। অথবা আপনার পরিচিত কোনো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে। কারণ ঔষধের সাথে সাথে কিছু সাইকোলজিক্যাল পরামর্শ নেয়ারও প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।

Previous articleসিলেটে ঘুম বিষয়ক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত
Next articleপাবনা মানসিক হাসপাতাল: রোগীদের জন্য রয়েছে যেসব সুবিধা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here