স্মৃতিভ্রংশের কারণে আলঝেইমারস ডিজিজ হয়। আর এর জন্য ওষুধের চেয়ে সচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে ‘আলঝেইমারস ডিজিজ : রিসেন্ট আপডেট’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলে তারা। আর এতে আলঝেইমারস ডিজিজ বিষয়ে মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ডা. ফাতেমা মারিয়া খান।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. ফারুক আলম। আর সভাপতি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রি’র (বিএপি) সভাপতি অধ্যাপক মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী। এছাড়াও ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম, অসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম মুস্তাফিজুর রহমান, সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল, হাসপাতালটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকারসহ আরো অনেকে।
এসময় অধ্যাপক মো. ফারুক আলম বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বেড়ে যাচ্ছে। যত আয়ু বাড়ছে তত আলঝেইমারসের রোগী বেড়ে যাচ্ছে। এই রোগীর যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা একটা সার্ভে করেছিলাম। ২০০৫ সালে সার্ভেতে দশমিক ৫ ভাগ ডিমেনসিয়ার রোগী পেয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘দাবা খেলা, সুপারি খাওয়া, বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে ব্রেনকে চালু রাখলে ডিমেনসিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। প্রেসার, ডায়াবেটিস, অবেসিটির কারণে আমাদের মাল্টি ন্যাশনাল ডিমেনসিয়া বেড়ে যাচ্ছে। তবে, এটা ভালো দিক মাল্টি ন্যাশনাল ডিমেনসিয়ার চিকিৎসা করা সহজ। ডিমেনসিয়ার বেশিরভাগ অংশই আলঝেইমারস। এর ডায়াগনোসিস করা কঠিন।’
অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে আয়ু কম থাকায় এই রোগের হারও কম ছিল। এখন তা বাড়ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মন মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। অন্তত পক্ষে বাবা-মায়ের যত্ন নিতে হবে।’
অসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘৬০-৮০ বছরে বয়সে স্মৃতিভ্রংশের কারণে আলঝেইমারস ডিজিজ হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই রোগ সহজে ধরা যায় না। কিন্তু, এখন খুব অল্প বয়সের এই রোগী পাওয়া যাচ্ছে। তাদের এই বয়সে এটা হওয়ার কথা না।’
অধ্যাপক মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘বয়স্কদের জন্য এই রোগ রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। প্রাচীনকাল থেকেই প্রবীণরা অবহেলিত। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য রোগটি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। এই রোগ সম্পর্কে জানানো এবং এই রোগীদের পাশে থাকা।’
আলোচনা সভাটি আয়োজনে সহযোগিতা করেছে জিসকা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।