প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় শুধু অন্যের মনযোগ আকর্ষণের জন্য। একটি আকর্ষণীয় এবং অদ্বিতীয় সেলফির আশায় মানুষ নিজের জীবনও বিপন্ন করতে পিছপা হয় না। সম্প্রতি ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত জার্নাল অব মেডিসিন এন্ড প্রাইমারি কেয়ারেরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতীতের তুলনায় বর্তমানে এই সংক্রান্ত মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
মধ্যপ্রদেশে আগাম বানসালের নেতৃত্বাধীন একটি গবেষক দল বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সেলফি সংক্রান্ত মৃত্যু সংবাদের উপর গবেষণা চালায়। তাদের এই গবেষণায় উঠে এসেছে যে, অক্টোবর ২০১১ থেকে নভেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত প্রায় ২৫৯ জনের মৃত্যু সেলফি সংক্রান্ত কারণে হয়েছে। এই হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০১১ সালে যেখানে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল,সেখানে ২০১৫ সালে ৫০ জন এবং ২০১৭ সালে ৯৩ জনের মৃত্যু সেলফি তোলার সময়ে হয়েছে।
সেলফি সংক্রান্ত মৃত্যু কাদের বেশি হয়?
সেলফি সংক্রান্ত কারণে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের অধিকাংশই তরুণ এবং বয়স ২৯ এর মধ্যে। প্রায় ৩৬ ভাগ মৃত্যু ১০ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে এবং প্রায় ৫০ ভাগ মৃত্যু ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সের মাঝে হয়। মাত্র ১৪ ভাগ মৃত্যু হয় ৩০ এর বেশি বয়সীদের মাঝে। মজার বিষয় হল, নারীদের থেকে পুরুষের মাঝে এই হার অনেক বেশি। ঝুঁকি গ্রহণ এর একটি প্রধান কারণ।
এর ফলাফল?
দেখা গেছে, বছরে নারীদের মাঝে ৩১টি মৃত্যু হয় ঝুঁকিবিহীন কারণে, এবং ২৭টি মৃত্যু হয় ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রমের কারণে। সে তুলনায় পুরুষের মাঝে এই হার প্রায় চার গুণ। তাদের মাঝে ৩৮টি মৃত্যু হয় ঝুঁকিবিহীন কারণে, এবং ১১৫টি মৃত্যু হয় ঝুঁকিপূর্ণ সেলফির কারণে।
কোন কোন দেশে সেলফি সংক্রান্ত মৃত্যুর হার বেশি?
সেলফি সংক্রান্ত মৃত্যুর হার সর্বাধিক রয়েছে ইন্ডিয়ায়(বছরে ১৫৯ জন)। পর্যায়ক্রমে রাশিয়া ( ১৬ জন) এবং ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকায় ( ১৪ জন)। সারা বিশ্বেই এটি এখন একটি সাধারণ সমস্যায় রুপ নিয়েছে।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
সেলফি সংক্রান্ত মৃত্যুর পেছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করে। যার মধ্যে রয়েছে, পানিতে ডুবে মৃত্যু, পরিবহনে মৃত্যু, পতন, দহন, তড়িতাহত, আগ্নেয়াস্ত্রের অপপ্রয়োগ এবং পশুপাখির আক্রমণ।
নিরাময়ে করণীয় কি কি?
বিভিন্ন শহরে, যেমন মুম্বাইয়ে, সরকারিভাবে বেশ কিছু বিপদজনক স্থানকে নো-সেল্ফি জোন ঘোষণা করা হয়েছে। যেহেতু তরুণদের মধ্যে সেলফি সংক্রান্ত মৃত্যু প্রবণতা সব থেকে বেশি। তাই তাদেরকে সচেতন করে তুলতে পারলে মৃত্যুর হার অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। কিছু কিছু সাধারণ সচেতনতামূলক পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে যাতে সব ধরণের মানুষ এ বিষয়ে সচেতন হয়। সব সময় মনে রাখতে হবে, একটি ছবির থেকে একটি জীবনের মূল্য অনেক বেশি।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে