সুস্থ সমাজ গঠনের জন্য প্রয়োজন সুস্থতার চর্চা: ফেরদৌস হাসান

[int-intro]তারকাদের তারকা তিনি। একাধারে তিনি একজন লেখক, নাট্যকার, পরিচালক ও নির্মাতা। শ্যাওলা, কাগজের বউ, ব্যথা, প্রজাপতি মন, অমানুষ, মেঘ বালকের গল্প সহ অসংখ্য জনপ্রিয় জননন্দিত নাটক ও টেলিছবির স্রষ্টা তিনি। তিনি খুঁজে ফেরেন একটি সহজ সাধারণ জীবন। তিনি ফেরদৌস হাসান। মনেরখবরের পাঠকদের মুখোমুখি এবার তিনি। জানাচ্ছেন তাঁর ভালো লাগার কথা, ভালো থাকার কথা, স্বপ্নের কথা, জীবনের কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাম্মদ মামুন। [/int-intro]

[int-qs]কেমন আছেন?[/int-qs]
[int-ans]জ্বী ভালো।[/int-ans]
[int-qs]কিভাবে ভালো থাকেন?[/int-qs]
[int-ans]বই পড়লে ভালো থাকি। ভালো থাকার জন্য পড়াশুনা করি।[/int-ans]

[int-quote] এখন আমাদের জন্য সময়টা ভালো না। বলা যায় বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কাছে আমরা প্রায় পর্যুদস্ত। একটা সময় ছিল বিশেষ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়টা ও তার পরবর্তী সময়টা। তখন আমাদের মধ্যে স্বকীয়তা ছিল, তখনকার সময় যে দেশপ্রেম ছিল, মানুষের মধ্যে যে নান্দনিকতা ছিল, এখন তো দেখছি সেটা সেভাবে নাই। এখনকার যারা মিডিয়া চালান এজেন্সি চালান তারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের অনুকরণে বাধ্য করছে। [/int-quote]

[int-qs]লেখালেখির অনুপ্রেরণা কিভাবে পেলেন?[/int-qs]

[int-ans]লেখালেখির ব্যাপারে পরিবারে মা বাবার থেকে, এছাড়া বন্ধুদের থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এখন অবশ্য লেখালেখি করি অনেকটা পেটের তাগিদে জীবিকার তাগিদে। [/int-ans]

[int-qs]প্যাশন থেকে প্রফেশন?[/int-qs]
[int-ans]অনেকটা তাই। লেখালেখি বা নাটক নির্মাণের প্রতি একটি ভালো লাগা থেকেই আস্তে আস্তে এটিকেই পেশা হিসেবে নিয়ে নেই।[/int-ans]
[int-qs]বাংলা টিভি নাটকের বর্তমান অবস্থা কি?[/int-qs]

[int-ans]এখন আমাদের জন্য সময়টা ভালো না। বলা যায় বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কাছে আমরা প্রায় পর্যুদস্ত। একটা সময় ছিল বিশেষ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়টা ও তার পরবর্তী সময়টা। তখন আমাদের মধ্যে স্বকীয়তা ছিল, তখনকার সময় যে দেশপ্রেম ছিল, মানুষের মধ্যে যে নান্দনিকতা ছিল, এখন তো দেখছি সেটা সেভাবে নাই। এখনকার যারা মিডিয়া চালান এজেন্সি চালান তারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের অনুকরণে বাধ্য করছে। [/int-ans]

[int-qs]এই পরিবর্তনটা কি সাধারণ মানুষদের চাহিদার প্রেক্ষিতে হচ্ছে?[/int-qs]

[int-ans]না, সাধারণ মানুষ এখানে ব্যাপার না। সমস্যা হচ্ছে এসব ক্ষেত্রে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা। আমাদের মানসে ঢুকে গেছে অর্থনৈতিক ব্যাপারটি। যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই আমরা চিন্তা করি কিভাবে ম্যাক্সিমাম প্রফিট আমরা বের করে আনতে পারি। শিল্প সাংস্কৃতিক কিংবা শোবিজ অঙ্গনেও এর প্রভাব লেগেছে। যেটা হওয়ার কথা ছিল না। শিল্প সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আপনি যদি লাভের অংকটা আগে হিসেব করেন তাহলে সেটা মানসম্মত কাজ কোনোভাবেই হবে না।[/int-ans]

[int-qs]রাগ হয়?[/int-qs]
[int-ans]হ্যাঁ রাগ হয়।[/int-ans]
[int-qs]রাগ নিয়ন্ত্রণ করেন কিভাবে?[/int-qs]

[int-ans]আমার রাগ হলে সেটি আমি বলে ফেলি। হয়তো অনেক সময় সুন্দর করে বলা হয় না। হয়তো সে আঘাত পায়, এটা আমার উচিত নয়। তবুও কাজের চাপে বিভিন্ন চিন্তায় অনেক সময়ই রাগটা আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না। [/int-ans]

[int-qs]হিংসা হয়?[/int-qs]

[int-ans]হয়। অনেক হিংসা হয়। সহজ সরল সাধারণ জীবন যাপন করে তাদেরকে আমার ভীষণ হিংসে হয়। মনে হয় কত সুন্দর তারা জীবনের জটিলতাকে দূরে ঠেলে রাখতে পারছে।[/int-ans]

[int-qs]স্বপ্ন দেখেন?[/int-qs]
[int-ans]হুমম, স্বপ্ন তো সবাই দেখে। [/int-ans]
[int-qs]স্বপ্ন দেখা কি জরুরি?[/int-qs]
[int-ans]মানুষের আশা যতদিন থাকবে স্বপ্নও ততদিন থাকবে। আর আশা তো থাকতেই হবে। [/int-ans]
[int-qs]মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়েছেন কখনও?[/int-qs]

[int-ans]না। সেভাবে হইনি। চেষ্টা করি আনন্দে থাকার। তবুও পারিপার্শিক ঘটনা দূর্ঘটনাগুলো মানসিক ভাবে বিষণ্ন করে তোলে। তাই এখন আর পত্রিকা পড়িনা, সংবাদ দেখি না। ব্যাঙ যেমন শীতনিদ্রায় যায় বলতে পারেন আমিও নিজেকে কিছুটা সেভাবে গুটিয়ে রেখেছি। এখন এটাকে একটা কৌশল বলবো নাকি স্বার্থপরতা বলবো নাকি অন্যকিছু সেটি মনস্তত্ত্ববিদগণ ভালো বলতে পারবেন।[/int-ans]

[int-img name=””]https://monerkhabor.com/wp-content/uploads/2016/04/হাসান-২.jpg[/int-img]
[int-qs]একটি সুস্থ সমাজ গঠনে কোন জিনিষটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?[/int-qs]

[int-ans]সুস্থ সমাজ গঠনের জন্য প্রয়োজন সুস্থতার চর্চা। সন্তান যদি বাবা মাকে দেখে সৎ সুস্থ মানসিক জীবন যাপন করতে তাহলেই সেটি তারা শিখবে। আমরা কি করি, নিজেরা ঘরে সুস্থতার চর্চা না করে বাচ্চার কাঁধে বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে ভাবি সে সুন্দর সুস্থ ভাবে বেড়ে উঠছে। একই সাথে আরেকটি ধারণা আমরা শিশুদের দিয়ে দিচ্ছি যে পড়াশুনার মুখ্য উদ্দেশ্য হলো একটা ভালো চাকুরি পাওয়া এবং টাকা আয় করা। শিক্ষিত হওয়ার জন্য শিক্ষালাভের যে ধারণাটা সেটা আমরা শিশুবেলাতেই নষ্ট করে দিচ্ছি। তাহলে জাতি শিক্ষিত মননশীল হবে কি করে।[/int-ans]

[int-qs]এখান থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কি?[/int-qs]

[int-ans]শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন। কারিগরি শিক্ষার দিকে জোর দেয়া। স্কুল লেভেলে বাংলা ইংরেজি আরবী বিভিন্ন মাধ্যমকে সমন্বয় করা।একই সাথে আমাদের নিজেদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করা, আমরা অসুস্থ জীবন যাপন করলে আমাদের সন্তানেরাও সেটাই শিখবে। [/int-ans]

[int-qs]মানুষের মানসিক উন্নয়নে নাটক কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন?[/int-qs]

[int-ans]নাটকে সুন্দর শুভর জয় থাকতে হবে। মহৎ চরিত্রগুলো গুরুত্বের সাথে দেখাতে হবে। আর অশুভ দিকগুলো পেছনে রাখতে হবে, একটি নেগেটিভ চরিত্রকে নায়কোচিত ভাবে না দেখানোই ভালো।[/int-ans]

[int-qs]অনেক সময় নাটকে মানসিক ভাবে অসুস্থদের নেতিবাচক চরিত্রে দেখানো হয়। এটি কতটুকু যৌক্তিক?[/int-qs]

[int-ans]মানসিক ভাবে অসুস্থ কোনো চরিত্রকে নেতিবাচক ভাবে না দেখিয়ে চরিত্রটি মানসিক ভাবে অসুস্থ এবং অন্যান্য রোগের মতো এটিও একটি রোগ এভাবেই দেখানো উচিত। পূর্বে নেতিবাচক ভাবে দেখানো হলেও এখন থেকেই নির্মাতাদের এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।[/int-ans]

[int-qs]ভাষার একটি মনস্তত্ত্ব রয়েছে। ভাব প্রকাশের সাথে সাথে ভাষা একটি শিল্পও। ভাষার মাধুর্য্য রয়েছে, ভাষার নান্দনিকতা রয়েছে। বর্তমানে অনেক নাটকে যে প্রমিত বাংলার বাইরে ভাষার ব্যবহার প্রচলন হচ্ছে এটির নান্দনিক গুরুত্ব কতটুকু রয়েছে বলে মনে করেন?[/int-qs]

[int-ans] এটি নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। হয়তো তারা এটিকেই ভালো মনে করেন অথবা হতে পারে প্রমিত বাংলার ব্যবহার তারা জানেন না। তবে আমার নাটকগুলোতে সব সময় প্রমিত বাংলারই ব্যবহার হয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতেও সেটি অব্যাহত থাকবে।[/int-ans]

[int-qs]অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মনেরখবরে সময় দেয়ার জন্য।[/int-qs]
[int-ans]মনেরখবরকেও ধন্যবাদ[/int-ans]

[int-quote] মানসিক ভাবে অসুস্থ কোনো চরিত্রকে নেতিবাচক ভাবে না দেখিয়ে চরিত্রটি মানসিক ভাবে অসুস্থ এবং অন্যান্য রোগের মতো এটিও একটি রোগ এভাবেই দেখানো উচিত। পূর্বে নেতিবাচক ভাবে দেখানো হলেও এখন থেকেই নির্মাতাদের এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। [/int-quote]

Previous articleঅবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি-এর উপসর্গ
Next articleআপনার এই রোগটির নাম বিষণ্নতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here