সাময়িক মানসিক সমস্যা কী?
দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারানোর পর টিনা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। সে অবশ হয়ে যায়, কাঁদতেও পারে না, তাঁর চোখমুখে হতবাক ভাব ফুটে ওঠে। ঘন্টার পর ঘন্টা কোনও এক জায়গায় বসে থাকে, নড়াচড়া করে না বা কথাও বলে না। প্রায় দুসপ্তাহ এই অবস্থায় থাকার পর ধীরে ধীরে ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে থাকে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। (বাস্তব জীবনে সমস্যার বিষয়টি বোঝানোর জন্য কাহিনিটির অবতারণা।)
সাময়িক মানসিক সমস্যা এক ধরনের তাৎক্ষণিক অসুস্থতা, যার বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন মানসিক বিভ্রান্তি বা ভুল ধারণার বশবর্তী হওয়া। এলোমেলো কথাবার্তা বা আচরণ এবং ক্যাটানিক বা দীর্ঘ সময় গতিহীন হয়ে পড়া (এক জায়গায় স্থির থাকা)।
অনেক সময় কোনও নিদারুণ দুঃখজনক বিষয় বা দুর্ঘটনায় প্রিয়জনের মৃত্যু বা আর্থিক ক্ষতির কারণে মানুষের এক ধরনের মোহভঙ্গের অভিজ্ঞতা হয়। সেই ব্যক্তি তখন বাস্তব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং এর ফলে সাময়িক মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থা কিছুদিন চলার পর ওই ব্যক্তি সম্পূর্ণ সেরে ওঠে।
দ্রষ্টব্য – সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কোনও ব্যক্তি, যার কোনও মানসিক অসুস্থতা নেই, সে-ও কিছু সময়ের জন্য এই সমস্যায় পড়তে পারে।
সাময়িক মানসিক সমস্যা এক ধরনের তাৎক্ষণিক অসুস্থতা, যার বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন মানসিক বিভ্রান্তি বা ভুল ধারণার বশবর্তী হওয়া। এলোমেলো কথাবার্তা বা আচরণ এবং ক্যাটানিক বা দীর্ঘ সময় গতিহীন হয়ে পড়া (এক জায়গায় স্থির থাকা)।
অনেক সময় কোনও নিদারুণ দুঃখজনক বিষয় বা দুর্ঘটনায় প্রিয়জনের মৃত্যু বা আর্থিক ক্ষতির কারণে মানুষের এক ধরনের মোহভঙ্গের অভিজ্ঞতা হয়। সেই ব্যক্তি তখন বাস্তব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং এর ফলে সাময়িক মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থা কিছুদিন চলার পর ওই ব্যক্তি সম্পূর্ণ সেরে ওঠে।
দ্রষ্টব্য – সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কোনও ব্যক্তি, যার কোনও মানসিক অসুস্থতা নেই, সে-ও কিছু সময়ের জন্য এই সমস্যায় পড়তে পারে।
ছোটখাটো মানসিক সমস্যার লক্ষণগুলি কী?
নীচের লক্ষণগুলি এই অসুখের অন্তর্গত –
- অসংলগ্ন কথাবার্তা বা অন্যের সঙ্গে আলাপে অনীহা।
- মানসিক ভ্রান্তি, যা ঘটেছে সেই সম্বন্ধে ভুল ধারণা।
- হ্যালুসিনেশন বা চিত্তবিভ্রম। অবাস্তব বিষয় দেখতে বা শুনতে পাওয়া।
- অযৌক্তিক, বিভ্রান্তিকর চিন্তা ও ক্রিয়াকলাপ।
- স্বাভাবিক আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন।
- ক্যাটাটোনিয়া, একভাবে বা এক জায়গায় দীর্ঘদিন বসে থাকা।
- আবেগের দ্বন্দ্ব বা মানসিক দ্বিধা।
উপরের লক্ষণগুলি কোনও পারিবারিক সদস্য বা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে কখনও দেখা গেলে তাকে একজন হিতাকাঙ্ক্ষী হিসেবে সাহায্য করা উচিত।
সাময়িক মানসিক সমস্যার কারণ কী?
বড় ধরনের কোনও মানসিক আঘাত বা ট্রমাটিক ঘটনা মানুষকে এই অবস্থায় ফেলে দেয়। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ অনুসারে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি মোকাবিলার দুর্বলতা অথবা ব্যক্তিত্বের সমস্যাই প্রধান। মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রসবের পর অনেক সময় অবসাদ থেকে সাময়িক মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
ছোটখাটো মানসিক সমস্যার চিকিৎসা
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই অসুস্থতার মেয়াদ এক থেকে দু-সপ্তাহ। যদি অসুখের লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা গুরুতর হয়ে ওঠে, তখন একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বিশেষ পরীক্ষা ও আলোচনা করে অবস্থার গুরুত্ব বিচার করা দরকার।
থেরাপি, কাউন্সেলিং, মেডিকেশন বা এই সবের মিলিত প্রয়োগে চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। যদি রোগীর বিশেষ ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেয়, তাহলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো দরকার। সেরে ওঠার পর পুনরায় সমস্যা যাতে না হয় সেই জন্য কাউন্সেলিং প্রয়োজন।
থেরাপি, কাউন্সেলিং, মেডিকেশন বা এই সবের মিলিত প্রয়োগে চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। যদি রোগীর বিশেষ ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেয়, তাহলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো দরকার। সেরে ওঠার পর পুনরায় সমস্যা যাতে না হয় সেই জন্য কাউন্সেলিং প্রয়োজন।
সাময়িক মানসিক সমস্যার পরিচর্যা
পরিবার ও বন্ধুরা একজন রোগীর সহায়তা ও পরিচর্যায় বড়ো ভূমিকা নিয়ে থাকে, যাতে অসুস্থ ব্যক্তি অবস্থার মোকাবিলা করে দ্রুত সুস্থ হতে পারে। যখন কোনও পরিচিত ব্যক্তি কোনও দুঃখজনক ঘটনার কারণে মানসিক সমস্যায় পড়েছে, তখন তাকে সাহায্য ও পরিচর্যা করে সারিয়ে তোলা জরুরি।
বন্ধু বা আত্মীয়কে সাহায্য করা জন্য কী করবেন?
- সাময়িক মানসিক সমস্যার বিষয়ে বিশদ জ্ঞান দরকার যা, আপনাকে রোগীর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে।
- রোগীর প্রতি সহমর্মিতা, মানসিক আবেগে সহায়তা এবং সমস্যার গুরুত্ব তার কাছে শুনে বোঝা দরকার। লক্ষণগুলি জেনে তাকে বড়ো ধরনের অসুবিধা থেকে মুক্ত করতে হবে।
- সম্ভব হলে ওই বন্ধু বা আত্মীয়ের হাঁটাচলা বন্ধ রাখা উচিত।
- তাঁদের সঙ্গে থাকতে হবে, কিন্তু কোনও জোর খাটানো চলবে না।
- কোনও বক্তব্য থেকে রোগীর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে সচেতন হোন এবং দরকার হলে চিকিৎসককে জানান।
ছোটখাটো মানসিক সমস্যার ধরন
এই অসুখের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যক্তিত্ব জনিত সমস্যা বা বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার এবং স্কিৎজোফ্রেনিয়া।- সাময়িক মানসিক সমস্যায় চূড়ান্ত অবসাদে আক্রান্ত – যখন স্বামী-স্ত্রী বা ঘনিষ্ঠ কারও মৃত্যুতে শোকাহত, শারীরিক অবমাননা, ডাকাতি বা বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনও ব্যক্তি চূড়ান্ত ভুগতে থাকে, তখন সচরাচর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যায়, চিকিৎসার দরকার পড়ে না।
- সাময়িক মানসিক সমস্যায় চূড়ান্ত অবসাদগ্রস্ত না হলে – যখন কোনও ব্যক্তির মানসিক সমস্যার কোনও আপাত কারণ থাকে না, তখন অসুখটি অল্প সময় স্থায়ী হয়, সাধারণত মাসখানেকের মধ্যেই সেরে যায়।
- প্রসব পরবর্তী সাময়িক মানসিক সমস্যার ফলে মহিলা অনেক আক্রান্ত হন। এক্ষেত্রে সাধারণত এক মাস সমস্যাটি থাকে।