সম্পর্কে আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা ইতিবাচক না নেতিবাচক?

সম্পর্কে আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা ইতিবাচক না নেতিবাচক?

যে সম্পর্কে দুজন মানুষই সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে সেই সম্পর্কই অধিক সফল।

আধিপত্য বিস্তার বা কর্তৃত্ব ধরে রাখার মানসিকতা সম্পর্ক এবং দম্পতীদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে সেই বিষয়গুলো নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন নতুন বেশ কিছু গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।

এসব গবেষণায় দেখা গেছে যে, দম্পতীদের মাঝে এ ধরণের মানসিকতা থাকলে সম্পর্কে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর এই ক্ষমতা প্রদর্শনের চর্চা শেষ পর্যন্ত সম্পর্কে বিচ্ছেদ ডেকে আনে।

এছাড়াও এই গবেষণাগুলোতে উঠে এসেছে, সেই সম্পর্কই সফল ও দীর্ঘস্থায়ী এবং সেই সম্পর্কেই দম্পতীরা সুখী যেখানে তারা উভয়ই যে কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করে। একে অপরকে প্রতিপক্ষ মনে করে একে অপরের উপর ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রচেষ্টা করে না।

সাধারণত আমাদের সমাজ পুরুষতান্ত্রিক। অর্থাৎ পরিবারে প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা পরিবার পরিচালনা সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণ সব ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত পুরুষেরা নেয়। তবে আধুনিক সমাজে এই ভাব ধারার পরিবর্তন এসেছে।

এখন সমাজে সমান অধিকার নিয়ে প্রায় সবাই সচেতন এবং আগ্রহী। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনো বিভিন্ন পরিসরে পুরনো ও সংকীর্ণ মানসিকতার প্রচলন দেখা যায়। আর সেসব ক্ষেত্রেই সম্পর্কে অসামাঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়।

এসব পরিবার ও সম্পর্কে সাধারণত সৌহার্দ থাকে না এবং দম্পতীদের মাঝে মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়াও থাকে নগণ্য। এ ধরণের সম্পর্ককে সুসম্পর্ক বলা কিংবা এ ধরণের দম্পতীদেরকেও সুখী দম্পতী হিসেবে বিবেচনা করা যায়না।

অর্থাৎ ক্ষমতার অসম প্রদর্শন বা আধিপত্যে অসাম্য সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং দাম্পত্য জীবনেও অশান্তি ডেকে আনে।

সম্পর্কে যখন দুজন ব্যক্তি স্বাধীন স্বত্বা নিয়ে জীবন যাপন করে অর্থাৎ দুজনেই যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে তখন সম্পর্কে একটি সামাঞ্জস্যতা বিরাজ করে।

অর্থাৎ সম্পর্কে দুজন মানুষের মধ্যে যদি আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা না থাকে বা একে অপরের প্রতি সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখে তাহলে সেটি সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এ ধরণের সম্পর্কে বিবাদ কম হয় এবং দম্পতীদের একে অপরের প্রতি কোনরূপ প্রতিযোগিতা পূর্ণ মনোভাবও থাকেনা। সাধারণত যে সব সম্পর্কে দম্পতীদের মাঝে আধিপত্য বিস্তারের মতো মানসিকতা থাকে সেখানে যে কোন ধরণের বিবাদ সহজে নিষ্পত্তি হয় না।

এক্ষেত্রে কেউই কাউকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখেনা এবং একে অপরের প্রতি ক্ষমাশীল না হয়ে তারা নেতিবাচক চিন্তা ভাবনাকেই আঁকড়ে বসে থাকে। আর অন্যদিকে যে সম্পর্কে এ ধরণের মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ থাকেনা, সে সব সম্পর্কে দম্পতীরা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে ভূমিকা পালন করে এবং ইতিবাচক মানসিকতার বিকাশ ঘটায়। ফলে, তারা সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারে।

তাই সবশেষে বলা যায়, আধিপত্য বিস্তার বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব ধরণের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখার মানসিকতা কখনোই ভালো ফলাফল বয়ে আনেনা।

এ ধরণের স্বার্থপর মানসিকতা সম্পর্কে শুধু বৈরিতা সৃষ্টি করে এবং এতে দম্পতীদের মাঝে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এ ধরণের মনোভাব এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/the-new-resilience/202108/is-seeking-power-in-your-relationship-good-or-bad

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleস্বপ্ন দেখি মনের মতো কাজ করার: রওনক হাসান
Next articleসময়ের উত্থান-পতন মোকাবেলা করবেন যেভাবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here