সমস্যা: আমার নাম যাকি। আমি OCD তে ভুগছি অনেক দিন ধরে। ডা. আরকে এস রয়েল স্যারের পরামর্শ নিচ্ছি ২ বছর যাবৎ। এখন আলহামদুলিল্লাহ আমি সুস্থ আছি। আমার আরেক প্রবলেম হলো-সবার সামনে কথা বলতে গেলে আটকে যায়। আমি L .L.B honours এ পড়ালেখা করি। যেহেতু ল পড়ছি সেহেতু কথা বলতে হয়। আমি প্রায় অনেক প্রোগ্রাম যোগদান করি না কারণ আমার কথা আটকে যায়। এই প্রবলেম ছোটবেলা থেকে। আমি একটু লজ্জাবোধ করি বেশি মানুষের সামনে। ঠিকমতোত স্পিচ ডেলিভারি করতে পারিনা কোনো presentation এ। এই অবস্থায় আমি কী করতে পারি। জানালে উপকৃত হতাম, ধন্যবাদ।
পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মহাদেব চন্দ্র মন্ডল: আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ যাকি। আপনি এলএলবি অনার্সে পড়ছেন কিন্তু ছোটবেলা থেকেই মানুষের সাথে কথা বলেতে গেলে জিভ আড়ষ্ট হয়ে আসে বা লজ্জা বোধ করেন বা কথা বলতে গেলে আটকে যায়। সেজন্য আপনি অনেক প্রোগ্রামে অনুপস্থিত থাকেন এবং আপনার presentation বা স্পিচ ডেলিভারি করতে পারেন না। এ সমস্ত উপসর্গ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এটা Anxiety Disorder এর একটি Varity যার নাম সোশ্যাল ফোবিয়া। আবার এই সোশ্যাল ফোবিয়ার সাথে OCD -ও আছে এবং ডা. আরকে এস রয়েলের চিকিৎসায় এখন ভালো আছেন। সমস্যাগুলো বেশিদিন চলমান থাকলে Mixed Anxiety and Dispersion এ ভোগার সম্ভাবনা থাকে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে এবং সোশ্যাল ফোবিয়া শুরু থেকে বোঝা যায় না। কিছুদিন অতিক্রান্ত হলে আস্তে আস্তে সমস্যা বাড়তে থাকে। তবে সঠিকভাবে চিকিৎসা করালে ভালো হয়ে যায়। এই রোগের চিকিৎসা দুই ধরনের : সাইকোলজিক্যাল এবং ফার্মাকোলজিক্যাল। থার্মোকোথেরাপিতে কিছু অ্যাংজায়োটিক এবং কিছু এন্টি ডিপ্রেসেন্ট দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। আর সাইকোলজিক্যাল থেরাপিতে বিহেভিয়ার এবং ফ্লোডিং এর মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে, তবে সাথে মনে বল এবং সাহস আনতে হবে। বিহেভিয়ার থেরাপিটা হচ্ছে-কোনো নতুন পরিবেশে কম করে হলেও ৫-৭ জন বা তার বেশি লোক মিলিত হচ্ছে; সেখানে সাহস করে কথা বলতে হবে। রেগুলার এটা প্র্যাকটিস করতে হবে। প্রয়োজনে গ্রুপ ডিসকাস করতে হবে। আর ফ্লোডিং হচ্ছে এক ধরনের বিহেভিয়ায় থেরাপি যার ধরন হলো-ভয় লাগলে অল্প সময়ের মধ্যে সাহস করে সমস্যার মোকাবিলা করা। প্রয়োজনে অল্প অল্প করে মনে সাহস জুগিয়ে ধাপে ধাপে করতে হবে। এভাবে অভ্যেস করতে থাকলে মনে সাহস আসবে, মুখের জড়তা কমে যাবে। তখন চাইলে আপনি বক্তৃতাও দিতে পারবেন। অনেকের তাড়াতাড়ি উন্নতি হয়, অনেকের ধীরে ধীরে উন্নতি হয় এবং আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যায়।