দু’জন মানুষ একসঙ্গে থাকলে কখনও কখনও ভুল বোঝাবুঝি হতে বাধ্য। মানুষের স্বভাবই তাই। প্রশ্ন হল কীভাবে এই ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞেরা বলেন, দু’জন মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হলে তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিয়ে ফেলাই ভালো। না হলে ছোট ঘটনা থেকেই হয়তো কোনওদিন বড়ো বিস্ফোরণ ঘটে যেতে পারে। কাজেই সাবধান হোন আগেভাগেই। দাম্পত্য সম্পর্ক হোক অথবা প্রেম, ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিতে উদ্যোগী হোন।
আকাশকুসুম কল্পনা করে চাপ নেবেন না: একটু ভেবে দেখলে হয়তো বুঝতে পারবেন, অধিকাংশ ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত হয় নিজের মনে ভেবে নেওয়া কোনও কারণ থেকে, খতিয়ে দেখলে যার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। হয় আপনি, নয় আপনার সঙ্গী এরকম কোনও একটা মনগড়া কারণ ভেবে নেন। এমন পরিস্থিতিতে শান্ত হয়ে বসুন, বড় করে একটা শ্বাস নিন। এবার ভেবে দেখুন সমস্যাটা ঠিক কী কারণে হচ্ছে। যদি মনে হয়, আপনার সঙ্গী ঠিক করছেন না, সে ক্ষেত্রে শান্তভাবে তার সঙ্গে কথা বলুন। আর যদি মনে হয় দোষটা আপনারই, তা হলে ক্ষমা চেয়ে নিন। সব কিছু আবার আগের মতোই মসৃণ হয়ে যাবে।
ভিন্ন মত শোনার জন্য মন খোলা রাখুন: দু’জন পৃথক মানুষের মতামতেও পার্থক্য থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আপনার সঙ্গীর সঙ্গে আপনার মতের অমিল হচ্ছে মানেই উনি ভুল আর আপনি ঠিক, তা কিন্তু নয়। তার মতের পিছনের যুক্তিটা বুঝুন, নিজের মতের পেছনে যুক্তিটাও তাকে বুঝিয়ে বলুন। জোর করে নিজের মত মানতে বাধ্য করবেন না। তাতে আরও সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে।
সঙ্গীর জোরের জায়গা আর দুর্বলতার জায়গা সম্পর্কে সচেতন থাকুন: যেহেতু আপনারা একসঙ্গে থাকেন, তাই পরস্পরের জোর আর দুর্বলতার জায়গাগুলোও জানবেন, এটাই স্বাভাবিক। তার দুর্বলতার কারণে যদি কোনও সমস্যা তৈরি হয়, তা হলে সেটা নিয়ে বেশি জলঘোলা করবেন না। বরং সঙ্গীকে তার জোরের দিকগুলো মনে করিয়ে দিন। দুর্বলতা নিয়ে একেবারেই খোঁটা দেবেন না।
নিজের ইগো নিয়ে পড়ে থাকবেন না: ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে চাইলে ইগোকে গুরুত্ব দেওয়া চলবে না। নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন। শান্তভাবে, বন্ধুত্বপূর্ণ গলায় কথা বলুন যাতে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে সহজ হয়ে আসে। ‘কেন আমি আগে কথা বলব’, এ ধরনের গোঁয়ার্তুমি করলে পরিস্থিতি উত্তরোত্তর খারাপ হবে।
নিজেদের সমস্যায় তৃতীয় ব্যক্তিকে ডাকবেন না: স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে ঝগড়া হলে বেশিরভাগই তৃতীয় ব্যক্তির সাহায্য নেন। কোনও ক্ষেত্রে দু’জনের বাবা-মা বোঝানোর দায়িত্ব নেন, আবার কোনও ক্ষেত্রে বন্ধুরা ঢুকে পড়েন। কিন্তু এতে সমস্যা সমাধানের বদলে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তাছাড়া যেহেতু এটা একান্তই আপনাদের ব্যক্তিগত সমস্যা, তাই প্রাপ্তবয়স্কদের মতো নিজেদের সমস্যা নিজেরা মেটানোর চেষ্টা করাই ভালো।