সমস্যা : বয়স ২৩ বছর। আমি অল্পতে রেগে যাই। মা বাবা ছোট বেলা থেকে অতিরিক্ত বকা দিত, এখনো বকা দেয়, সব কাজে ভূল ধরে। এখন মা বাবা বকা দিলে অতিরিক্ত রাগ উঠে। কথা বলার সময় কটূক্তি করছে এরকম কথা শুনলে মনে হয় ওরা আমাকে নিয়েই কটূক্তি করছে। এরকম মনে হওয়ার কারণ কি? রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কী করতে পারি? -নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
পরামর্শ : ধন্যবাদ আপনাকে প্রশ্ন করার জন্য। আপনার কথাগুলো থেকে এটা বুঝা যাচ্ছে, যেকোনো কারণেই হোক আপনার মেজাজ খারাপ থাকে। যে কারণে অল্প কথাতেই আপনি রেগে যান। মেজাজ খারাপ হওয়াটা কি শুধুমাত্র বাসার ভিতরে আত্মীয়-স্বজন এবং কাছের মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নাকি সব জায়গায় হয় সেটা দেখতে হবে। যদি সব জায়গায় হয় তাহলে সেটার চিকিৎসা এক রকম আর যদি শুধুমাত্র বাসায় হয় তাহলে সেটার চিকিৎসা আরেক রকম। তবে যে কারণেই হোক মেজাজ হারিয়ে ফেলা বা বিরক্ত হওয়ার পেছনের কারণটা কি সেটা প্রথমে খুঁজে বের করতে হবে।
- মা বাবার চাহিদা কেন বেশি, আপনি কেন সেই চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে পারছেন না এটাও গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আপনার মনোযোগ বা কথা বুঝতে বা অন্য কোনো কিছুতে আপনার সমস্যা আছে কিনা অথবা মা-বাবার চাহিদা কি অতিরিক্ত কিনা সেটাও বুঝতে হবে। যদি বিষয়গুলো মোটামুটি বুঝা যায় এবং সেটার সমাধান নিজের কাছে থাকে তাহলে তো ভালো।
এর পাশাপাশি রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রথমে বুঝতে হবে রাগ হওয়ার পিছনের কারণ কি? সেটা যদি সঠিকভাবে নির্ণয় করা না যায় তাহলে এ সমস্ত টিপসে আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণ হবে না। তারপরও পরামর্শ হলো, যেকোনো বিষয়ে যখন কেউ কিছু একটা চায় তখন আপনার মেজাজ খারাপ হলে চেষ্টা করবেন ঠিক সাথে সাথে উত্তরটা না দেয়ার জন্য। কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে উত্তরটা দিবেন, দেখবেন যে এটা কয়েকবার করলে আপনার চাহিদা বা আপনি উত্তরে কী বলতে চান সেটা পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এতে করে বাস্তবতা কি সেটা বুঝতে আপনার জন্য সহজ হবে।
- উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আপনি দোকানে গিয়ে কোনো একটা জিনিস চাইলেন। দোকানদার দাম চাইলেন। আপনার কাছে বেশি মনে হয়। এখন আপনি যদি মেজাজ খারাপ করে গালাগালি করেন বা রাগারাগি করেন তাহলে কোনো লাভ হবে না। দোকানদার কেন দাম বেশি চাইলো? সে কি দুই নাম্বারি করলো নাকি আসলেই জিনিসটার দাম বেড়েছে? এটা ভাবতে হবে। এই ভাবনায় কিছু সময় নিয়ে আপনি উত্তর দিতে গেলে মেজাজ হারাবেন না।
অনেক সময় এমন হয় আমরা রেগে গিয়ে বাস্তবতাটা বুঝতে পারি না। সেজন্য বাস্তবতাটা বুঝতে হলে কিছুটা সময় নিতে হবে। কারো চাহিদা কখনো দোষ না, আবার কখনো কখনো দোষ হয়। সেজন্য আপনাকে বাস্তবতা বুঝতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন,
অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব- সম্পাদক, মনের খবর
অধ্যাপক– মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সেকশন মেম্বার– মাস মিডিয়া এন্ড মেন্টাল হেলথ সেকশন অব ‘ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন’।
কোঅর্ডিনেটর– সাইকিয়াট্রিক সেক্স ক্লিনিক (পিএসসি), মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক মেন্টাল স্কিল কনসাল্টেন্ট – বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিম।
এই বিভাগের অন্যান্য লেখা পড়তে ক্লিক করুন এখানে :
মাসিক মনের খবর প্রিন্ট ম্যাগাজিন সংগ্রহ করতে চাইলে কল করুন : 01797296216 এই নাম্বারে। অথবা মেসেজ করুন পেজের ইনবক্সে। লেখা পাঠাতে পারেন monerkhaboronline@gmail.com বা 01844618497 নাম্বারে।
প্রতিদিনের চিঠি : আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আপনিও লিখতে পারেন আমাদেরকে। সেজন্য ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
/এসএস/মনেরখবর/