যৌনজীবন: নানান দেশে নানান ভাবে

0
191
যৌনজীবন
সেক্স বা যৌনতা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো, এবং সার্বজনীন একটি ব্যাপার। কিন্তু সবচেয়ে সার্বজনীন হলেও, যৌনজীবন নিয়ে বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে গড়ে উঠেছে আলাদা আলাদা রীতি – যা কারো কাছে স্বাভাবিক, কিন্তু অন্যের চোখে রীতিমত আজব । সারা জীবন যৌনমিলন থেকে দূরে থাকা, কিংবা বগলে আপেল নিয়ে ঘোরা – এরকম অসংখ্য বিচিত্র রীতিকে একসাথে করা কঠিন কাজ – তবে সম্প্রতি সেরকমই একটি চেষ্টা করছে বিবিসি। বিবিসি অবলম্বনে তার কয়েকটি মনের খবর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল:

হাওয়াইয়ের আদিবাসীরা তাদের যৌনাঙ্গের আলাদা নাম রাখে
ঐতিহ্যগতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসীরা তাদের গোপন অঙ্গের উপাসনা করে এবং আলাদা একটা ‘আদুরে নাম’ দিয়ে থাকে। কিন্তু সেখানেই তারা থেমে থাকে নি। আদিবাসীদের রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ লোক পর্যন্ত অনেকেরই থাকতো ‘মেলে মা’ই’ অর্থাৎ নিজস্ব একটা মন্ত্র – যা রচিত বেশ কাব্যিক ভাষায়। এসব মন্ত্রে বেশ খোলামেলা কাব্যিক ভাষায় বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হতো তাদের গোপন অঙ্গের।হাওয়াইয়ানদের যৌন আচরণের একজন বিশেষজ্ঞ ড. মিল্টন ডায়মন্ড। বিবিসির কাছে তিনি বর্ণনা করেন তাদের রানি লিলি’উওকুলানি-র মন্ত্র।’উত্তেজিত’ নামের এই মন্ত্রে রানি তার যৌনাঙ্গের ‘ওঠানামার’ বর্ণনা দিয়েছেন।

জাপানিদের যৌনমিলনের পরিমাণ আগের চাইতে কমে গেছে
জাপানে এখন জন্মহার ক্রমাগত কমছে। তার সঙ্গে সঙ্গে কমছে কনডম ও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ব্যবহার, গর্ভপাতের সংখ্যা, এবং যৌন রোগের প্রকোপ। “এসবে ব্যাখ্যা একটাই, আর তা হলো জাপানের লোকেরা আগের চাইতে কম সেক্স করছে” – বলছিলেন দেশটির পরিবার পরিকল্পনা সমিতির প্রধান কুনিও কিতামুরা। সাম্প্রতিক এক জরিপে বলা হয়, জাপানের বহু দম্পতি যৌনসম্পর্কবিহীন বিবাহিত জীবন যাপন করছেন। এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ বলেছেন, তারা এত ক্লান্ত থাকেন যে এসব করতে ইচ্ছে করে না।এক-চতুর্থাংশ জাপানি নারী বলেছেন, সেক্স তাদের কাছে একটা সমস্যা বলে মনে হয়।

আরেক জরিপে দেখা গেছে – জাপানে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়স্কদের মধ্যে কুমার-কুমারীর সংখ্যা গত এক দশকে অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় ৪৫ শতাংশই বলেছেন তারা কখনো যৌনমিলন করেন নি।

দক্ষিণ কোরিয়ার নারীরা বাচ্চা চান না
দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের গড়ে ১.০৫টি সন্তান হয় । কিন্তু দেশটির জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে এ সংখ্যা ২ এর ওপর হওয়া দরকার। কিন্তু দেশটিতে বাড়ির উচ্চ মুল্য, সন্তান পালনের ব্যয়বাহুল্য, এবং দীর্ঘ কর্মঘন্টার কারণে চাকরিজীবী নারীরা সন্তান নিতে চান না। বাচ্চা নেবার জন্য সরকার তাদের উৎসাহিত করতে কোটি কোটি ডলার খরচ করছেন। কিন্তু তবুও সেখানে জন্মহার বাড়ছে না।

রাশিয়ায় গর্ভসঞ্চার দিবস বলে একটা দিনই আছে
রাশিয়ার একটি অঞ্চলে ক্রমাগত কমতে থাকার জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য এক অভিনব উপায় বের করেছে কর্তৃপক্ষ। মস্কোর পূর্বদিকে উলিয়ানভস্ক-এর গভর্নর ১ই সেপ্টেম্বরকে গর্ভসঞ্চার দিবস ঘোষণা করেছেন। বলা দেয়া হয়েছে, সেদিন দম্পতিরা বাড়িতে থাকবে শুধু সন্তান উৎপাদনের জন্য। সেই দিনটি থেকে নয় মাসের মাথায় যে দম্পতির সন্তান হবে, তাদের উপহার দেয়া হয়। এর মধ্যে থাকে ভিডিও ক্যামেরা, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি নানা কিছু।

ব্রাজিলের মেহিনাকু গ্রামে পুরুষরা নারীদের আকৃষ্ট করেন মাছ দিয়ে
মধ্য ব্রাজিলে মেহিনাকু গ্রামে নারীরা তাদের প্রণয়প্রার্থীদের মধ্যে একজনকে বেছে নেবার এক সহজ পন্থা বের করেছেন। একজন নারীর প্রেমপ্রার্থী যদি একাধিক হয়, তাহলে পুরুষদের সেই নারীকে উপহার দিতে হয় একটি মাছ। যার মাছ সবচেয়ে বড়, তিনিই জিতে নেবেন সেই নারীকে।

অস্ট্রিয়ায় গ্রামাঞ্চলে প্রেমপ্রার্থী পুরুষকে দেয়া হয় ‘বগলের গন্ধওয়ালা’ আপেল
গ্রামীণ অস্ট্রিয়াতে মেয়েদের একটা ঐতিহ্যবাহী নাচ আছে । যেখানে মেয়েরা নাচেন তাদের বগলে আপেলের টুকরো নিয়ে । সেই নারী হয়তো নাচের সময় সেখানে উপস্থিত কোন পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হলেন। তখন তিনি সেই ঘামে-ভেজা আপেলের টুকরো বাড়িয়ে দেবেন তার দিকে। যদি পুরুষটিরও সেই নারীকে ভালো লেগে থাকে, তাহলে তাকে সেই আপেল থেকে এক কামড় খেতে হবে । সেটার স্বাদ কেমন হবে সহজেই অনুমেয়।

নাচের সময় ফেলে দিয়ে পুরুষ-বিজয়
নাচতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেলে আপনার সুনাম বাড়বে না। কিন্তু অন্তত একটি দেশে এজন্য বরং আপনার পুরস্কার মিলে যেতে পারে। দেশটি হলো কলম্বিয়া।কলম্বিয়ার গুয়াজিরো উপজাতির এক ধরণের বিশেষ উৎসব নৃত্য আছে, যেখানে একজন নারী যদি নাচের সময় এজন পুরুষকে উল্টে ফেলে দিতে পারেন – তাহলে তাদের অবশ্যই যৌনমিলন করতে হবে।

ডেনিশরা বেশিরভাগ সন্তান নেন ছুটি কাটানোর সময়
ডেনিশরা ছুটির সময় অন্য দেশের লোকদের চাইতে ৪৬ শতাংশ বেশি পরিমাণে যৌনসম্পর্ক করে থাকেন। একটি ভ্রমণ কোম্পানি স্পাইজ ট্রাভেল এক জরিপের পর এ কথা বলেছে। শুধু তাই নয় । ডেনিশ শিশুদের ১০ শতাংশের ক্ষেত্রেই তাদের মায়েদের গর্ভসঞ্চার হয় তখনই – যখন তারা বাড়ির বাইরে কোথাও যান।

সবচেয়ে বেশি ‘যৌন-সক্রিয়’ হলেন গ্রীকরা
কনডম প্রস্তুতকারক ড্যুরেক্সের এক বৈশ্বিক জরিপে বলা হয়, গ্রীসের লোকেরাই সবচেয়ে বেশি বার যৌনমিলন করে থাকেন। পৃথিবীর ২৬টি দেশের ১৬ বছরের বেশি বয়স্ক ৩০ হাজার লোকের ওপর ওই জরিপ চালানো হয়। তাতে দেখা যায়, গ্রীসের লোকেরা গড়ে প্রতি বছর ১৬৪ বার যৌনমিলন করেন। এর কারণ কি সেদেশের আবহাওয়া, নাকি পানির গুণ, তা জানা যায় নি। তবে সবচেয়ে বেশি ‘যৌন-সক্রিয়’ হবার জন্যে কেউ তাদের দোষারোপ করছেন না।
সূত্র: বিবিসি

মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন ক্রয়ের বিশেষ অফার

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleনিয়মিত পর্নোগ্রাফী দেখি
Next articleডিসলেক্সিয়া (Dyslexia): পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে শিশুরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here