গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা দিবস উপলক্ষে মেডিক্যল কলেজ ফর উইমেন এন্ড হসপিটালের বিশেষ আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
মেডিক্যল কলেজ ফর উইমেন এন্ড হসপিটাল এর ডিপার্ট্মেন্ট অফ সাইকেট্রি থেকে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে শিশু কিশোর মনোরগ বিষয়ক উপস্থাপনা করেন শিশু কিশোর ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহবুবা রহমান এবং প্রাপ্ত বয়স্ক মনোরোগ বিষয় নিয়ে উপস্থাপনা করেন এসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ চিরঞ্জীব বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যাল ফর উইমেন এন্ড হসপিটালের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মেজর এস কে ফিরোজ কবির (অব.), মেডিক্যাল ফর উইমেন এন্ড হসপিটালের পরিচালক এবং আরো উপস্থিত ছিলেন সকল ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসক সহ সাধারন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ব আত্মহত্যা দিবসের এইবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ‘’চেঞ্জ দা নেরেটিভ , স্টার্ট দা কনভারসেশন’’। অর্থাৎ আত্মহত্যার গল্পকে পরিবর্তন করা।
অনুষ্ঠানটির বিষয়ে শিশু কিশোর ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহবুবা রহমান জানান ”আমরা চাইলেই আত্মহত্যার গল্পগুলোকে পরিবর্তন করে দিতে পারি ওপেন কনভারশেশন অথবা এই বিষয়ক খোলামেলা আলোচনা করার মাধ্যমে। আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষরাই আত্মহত্যার কথা বলতে চান না, তাদের মাথায় এমন চিন্তা আসলেও তারা কখনই কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয় না।কারন এই সমাজে অনেক ধরনের কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে আত্মহত্যার বিষয়ে অর্থাৎ, আত্মহত্যাকারীদের নিয়ে বা এই বিষয়ে চিন্তাধারীদেরকে এই সমাজে একটু অন্য দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয়। এই চিন্তাধারার মানুষদেরকে অনেকে নেতিবাচক কথা বলেন, তাদেরকে এই সমাজে ভিতু প্রকৃতির মানুষ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। তাই তারা সমাজের ভয়ে এই চিন্তাধারা নিজের মধ্যই লালন করেন।তারা ভয় পায় একজন বিশেষজ্ঞদের কাছে যেতে। বর্তমান সমাজে আত্মহত্যা বিষয়ক কথা হলে সকলেই মনে করেন যে বিষয়টিকে সমাজে আরো ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে আর তাই অনেকেই এই বিষয় নিয়ে কেউ সচেতনতাও তৈরী করতে চান না। এর ফলে প্রতিদিন বাড়ছে আত্মহত্যার সংখ্যা অনেকের মাঝেই তৈরী হচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা’’।
তিনি আরও জানান আচল ফাউন্ডেশনের ২০২৩ সালের এক জরীপে দেখা যায় ২০২২ সালে আমাদের দেশে আত্মহত্যায় মারা যান ৫১৩ জন শিক্ষার্থী এর মধ্য স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিলো ২২৭ জন যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আর তাই এই আত্মহত্যার গল্পগুলোকে পরিবর্তন করার লক্ষ্যই এই আয়োজন করা হয়।
আত্মহত্যা একটি সামাজিক ব্যাধি, আর এই ব্যাধি দূরীকরণে আমাদের সবাইকেই সতর্ক থাকা জরুরি।