বাজেট দিবসে সরকার মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্কটকে স্বীকৃতি দিয়েছে – স্বাস্থ্যসেবার দুর্বল দিক হিসেবে বিবেচিত বিষয় গুলোতে অর্থ বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এই পদক্ষেপটিকে বেশ কিছু কার্যরত শাখা দ্বারা স্বাগত জানানো হয়েছে, যদিও কিছু শাখা বলে শুধু এই পদক্ষেপটি যথেষ্ট নয়।
প্রতিদিন মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী অ্যান্ডি কোলওয়েল বুঝতে পারেন তিনি ভাবেন যে তাকে তার সাহায্যের প্রয়োজন এমন লোককে খুঁজে বের করতে হবে, তাদের সাহায্য করতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে পরিবারগুলি আসলে সত্যিই লড়াই করছে, এবং তারা মোটামুটি খুবই ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আছে এবং তাদের জন্য জরুরী ভিত্তিতে কোণ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে না”।
তিনি আরও বলেন, “ব্যাপারগুলো দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে এবং এটি আমার মতো মানসিক স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য সত্যিই দুঃখজনক”। তিনি বলেন এই শাখাটি সংকটপূর্ণ। তিনি বলেন, “মানসিক স্বাস্থ্য সেবা খাতে অর্থ বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে হবে বরং বাড়াতে হবে বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ, বর্তমানে যা বিনিয়োগ করা হয়েছে তা কোনভাবেই পর্যাপ্ত বিনিয়োগের ধারে কাছেও নেই। জনাব কোলওয়েল বলেন এই পরিসংখ্যান সরকারের নিজেদের জন্য কথা বলতে বলে।
মোট ২২৪ মিলিয়ন ডলার অর্থ এই স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ করা হবে-
– ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে যেন একদম প্রাথমিক অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাকে খুঁজে বের করা যায়।
– কিছু অর্থ যাবে সেদিকে যেন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্তরা চাকুরী পায়, যারা জেলখানায় আছে মানে যারা অপরাধী তারা যেন নিজেদের ক্ষতি না করে, এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে।
– ডিএইচবি তহবিলের ১০০ মিলিয়ন ডলার ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা খাতে ব্যবহৃত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিল ইংলিশ বলেন সরকার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তার লক্ষণগুলো ধরতে পেরেছে। তিনি বলেন, “যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে অথবা যাদের মধ্যে নুন্যতম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদের সাহায্যের ব্যাপারে সরকার আরও বেশি কর্মঠ হবে, বিশেষ করে এই কল্যাণকর সিস্টেমে সবাইকে সাহায্য করা হবে”।
মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন এর প্রধান নির্বাহী শন রবিনসন বলেন এটি একটি ভালো কাজের শুরু। তিনি বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ব্যাপারটিকে খুব অবহেলা করা হয়েছে, এটি যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার কেউ ভ্রুক্ষেপ করে নি। কিন্তু হঠাৎ করে সিস্টেমকে ব্যাপারটি নাড়া দিয়েছে যার কারণে সিস্টেম ব্যাপারটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। চাপে পড়ে সিস্টেম যে কাজ করবে তাতে মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে এই সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব”।
২১ বছর বয়সী ম্যাক সুইনী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার আপাদমস্তক সবকিছু জানেন। তিনি বিষণ্ণতা এবং উদ্বিগ্নতায় ভুগেছেন। মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় অর্থ বিনিয়োগে তিনি খুবই খুশি। তিনি বলেন, “আমাদের অ্যাম্বুলেন্স এর মত কাজ করতে হবে তবে তা দরকারের শুরুতে শেষে নয়। কেননা শেষে অ্যাম্বুলেন্স এর দরকার হয় না। তাই আমি দেখতে চাই যে ১০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ প্রতিকার মূলক সেবায় বিনিয়োগ করা হোক”।
সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার নগদ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই অর্থের ১.৫ বিলিয়ন ডলার টেরানোভা সেটেলমেন্ট নিয়ে গেছে আর বাকি অর্থ ডিএইচবিএস এর ঔষধ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা খাতে চলে যায়। ২০১৬ সালে ইলেক্টিভ সার্জারিতে ৩৫৬.২ মিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ ছিল এই বছর তা ১০ মিলিয়ন ডলার কমে গেছে।
কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়ন এর অর্থনীতিবিদ বিল রোজেনবার্গ বলেন শুধুমাত্র এই অর্থই উধাও না, এখানে সবসময় অর্থ কম থাকে। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা খাতে বিনিয়োগকৃত এত কম অর্থ নিয়ে বিশাল জনগোষ্ঠী যাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রধানে প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, “আমাদের যা দরকার তার জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত শ্রেণিভুক্ত করতে হবে”। সরকার হয়ত পারতপক্ষে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষতিকর দিকগুলোকে ঢেকে দিয়েছে। কিন্তু আস্তে আস্তে সমস্যা কোন না কোন দিক দিয়ে বাড়তে থাকবে।
তথ্যসূত্র-
(http://www.newshub.co.nz/home/politics/2017/05/budget-2017-more-funding-for-mental-health.html)
কাজী কামরুন নাহার, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম