স্কোপোলামিন (Scopolamine) নামের এই ভয়ঙ্কর ড্রাগটি মানসিক চিন্তা ধারণাকে ব্লক করে দেয়। এটির বৈজ্ঞানিক নাম হায়োসিসিন ছড়াও আরো কয়েকটি নাম রয়েছে যার মধ্যে বুরুন্ডাঙ্গা, কলম্বিয়ান ডেভিলস ব্রিদ, রোবট ড্রাগ, বা জম্বি ড্রাগ উল্লেখযোগ্য।
স্কোপোলামিন ভয়ংকর একটি ড্রাগ যা মাদক হিসাবে ব্যবহার হয়। উৎপত্তি ল্যাটিন আমেরিকার কলম্বিয়ায় তবে ইকুয়েডর ও ভেনিজুয়েলাতেও এই মাদকটির যথেষ্ট বিস্তার রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী দেশে এখন পর্যন্ত ২৫ ধরনের মাদকের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, চোলাই মদ, দেশি মদ, বিদেশি মদ, বিয়ার, রেক্টিফাইড স্পিরিট, ডিনেচার্ড স্পিরিট, তাড়ি, প্যাথেডিন, বুপ্রেনরফিন (টি.ডি. জেসিক ইঞ্জেকশন), ভাং, কোডিন ট্যাবলেট, ফার্মেন্টেড ওয়াশ (জাওয়া), বুপ্রেনরফিন (বনোজেসিক ইঞ্জেকশন), মরফিন, আইচ পিল, ভায়াগ্রা, সানাগ্রা, টলুইন, পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট ও মিথাইল-ইথাইল কিটোন৷ ,এলএসডি থেকেও ভয়াবহ মাদক হচ্ছে স্কোপোলামিন বা ডেভিলস ব্রিদ।
বাংলাদেশে যে ধুতরা ফুল পাওয়া যায় এটিও অনেকটা একই রকম দেখতে এবং একই প্রজাতিভুক্ত। ভয়ঙ্কর এবং সুন্দর স্কোপোলামিন মুলত নাইটশেড পরিবারভুক্ত ফুলের গাছ। একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই গাছের বীজ থেকে তৈরি করা হয় ভয়ংকর ড্রাগটি।
ড্রাগটি দেখতে হুবহু কোকেন পাউডারের মতই সাদা তবে এর ক্ষতির মাত্রা কোকেন থেকে বহুগুনে বেশি। মুলত এই ভয়ংকর ব্যাপারটা যুক্ত হয়েছে এর তীব্রতার কারণে। চামড়ার মাধ্যমে স্কোপোলামিন দেহে প্রবেশ করালে মাদকটির প্রতিক্রিয়া শরীরে শুরু হতে সাধারণত ২০ মিনিট সময় লাগে এবং তা ৮ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে যিনি স্কোপোলামিন গ্রহণ করলেন তিনি থাকেন গোধুলী ঘুম বা টুইলাইট স্লিপে। আর এই সময়ের মধ্যে তাকে দিয়ে সব কিছুই করানো সম্ভব। মাত্র ১ গ্রাম স্কোপোলামিন দিয়ে প্রায় এক ডজনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা সম্ভব!
স্কোপোলামিন বা ডেভিলস ব্রিদ শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথে মানুষের মস্তিস্কের প্রাথমিক স্মৃতি বা যাকে বলে ’ইনিশিয়াল স্টেইজ অব মেমোরি’ বলি সেটিকে ব্লক করে দেয়। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি আক্রমণকারীকে সামনে দেখতে পেলেও চিনতে পারেন না এবং কিছু মনে রাখতে পারে না।
একই সাথে এই ড্রাগটি মস্তিক্ষের চিন্তা করার ক্ষমতাকেও ব্লক করে দেয়। ফলে শরীরে কোন প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না বা বাইরের কোন আক্রমনে শরীর কোন প্রতিক্রিয়া দেখানোর মত অবস্থা থাকেনা। এ অবস্থায় ভিক্টিমের আচরন হয়ে যায় বশীভূত বা সুতায় বাঁধা পুতুলের মত।
এর থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে নিজের সাবধানতা । অপরিচিত সকলের থেকে সবসময় সতর্ক থাকুন।
লিখেছেনঃ মোজাম্মেল হোসেন নয়ন
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে