আধুনিক সময়ে টেলি সাইকিয়াট্রি সেবা চিকিৎসা ক্ষেত্রের জন্য একটি যুগোপযোগী উদ্ভাবন। ঘরে বসে অনলাইনে দেশ কিংবা বিদেশের যেকোনো জায়গা থেকে মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে মনের খবরের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রোজেক্ট MK4C তে। মানসিক রোগ, মানসিক সমস্যা, আচরণগত সমস্যা, শিশু সমস্যা, মাদকাসক্তি, যৌনস্বাস্থ্য, সম্পর্ক উন্নয়ন সহ যেকোনো ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সহায়তা দিচ্ছেন এই সেবার আওতায়। বাংলাদেশের প্রায় ৯২% মানুষ তার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা নিতে পারছে না এবং এই বিষয়ে সচেতনও নয়। শারীরিক অসুস্থতাকে তারা গুরুত্ব দিলেও মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে থাকে অবহেলা ও উদাসীনতা। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে এই অসচেতনতা কে দূর করতে মাঠ পর্যায়ে তথা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে হবে বলে মনে করছেন বেশিরভাগ মনোরোগবিদগণ। MK4C এর টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার সুবিধা ও সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
সুবিধা:
১। অনলাইনের মাধ্যমে দেশে অথবা বিদেশের যেকোনো জায়গা থেকে এই সেবা নেয়া যায়। ফলে সাধারণ মানুষদের কষ্ট করে জেলা শহর কিংবা বড় শহর গুলতে আসতে হয় না। অনলাইনের মাধ্যমে হওয়ায় এই সেবা বেশ সহজও।
২। টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার ফলে মানুষদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণের খরচ, সময়, ভোগান্তি অনেকাংশই হ্রাস পায়।
৩। হাসপাতাল এবং সেন্টার গুলতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না।
৪। রোগী তার সময় ও সুযোগ মতো নির্দিষ্ট একটি সময়ে খুব সহজেই এই সেবা নিতে পারে।
৫। প্রান্তিক অঞ্চলে বসেই দেশ বরেণ্য সাইকিয়াট্রিস্টস এবং সাইকোথেরাপিস্টদের চিকিৎসা নেয়া সম্ভব।
৬। প্রবাসীরা দীর্ঘদিন দেশে এবং পরিবারের বাইরে থাকার কারণে তাদের মধ্যে নানারকম মানসিক রোগে ভুগে থাকে। MK4C তাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তারা বিদেশে থেকে দেশের নামকরা সাইকিয়াট্রিস্ট ও সাইকোথেরাপিস্টদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারবেন।
সম্ভাবনা:
১। ডিজিটাল বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার সম্ভাবনা অনেক। এখন আমরা চাইলেই আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছি। কারণ আমাদের দেশের সব অঞ্চলগুলতেই ইন্টারনেট সেবা ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের সব ইউনিয়ন গুলতে রয়েছে তথ্যসেবা সেন্টার। যেখান থেকে সাধারণ মানুষ নানারকম তথ্য নিয়ে সচেতন হয়ে উঠছে।
২। মনের খবরের MK4C টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার প্রোজেক্ট তাদের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচার করছে। ফলে মানুষ টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে এবং সেবা নিচ্ছে। এভাবে করেই এক সময় এই সেবা এবং সেবা প্রদানকারী প্রোজেক্ট গুলোর প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
৩। টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার মাধ্যমে মানসিক রোগীদের মানসিক চিকিৎসা ভীতি দূর হবে। ফলস্বরূপ চিকিৎসক এবং রোগীর মধ্যকার দূরত্ব কমে আসবে।
৪। প্রবাসীরা এই সেবার আওতায় দেশের বাইরে থেকেই দেশের বরেণ্য সাইকিয়াট্রিস্টস এবং সাইকোথেরাপিস্টদের চিকিৎসা নিতে পারবে। প্রবাসীদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে টেলি সাইকিয়াট্রি সেবার প্রতি।
সম্ভাবনার সাথে সাথে এই সেবার বিষয়ে কিছু আশঙ্কাও আছে সংশ্লিষ্টদের। সাধারণত আমাদের দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিতে নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হয়।
যেমন-
১। আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলতে ইন্টারনেট সেবা এখনও ততো ভালো না। অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে না। ফলে তাদের সেবা বিঘ্নিত হতে পারে।
২। আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নানা রকম কু-সংস্কারে এখনো নির্ভর করে চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিশ্বাস করে না। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে অসচেতন থেকে যায়।
৩। অবৈধ ক্লিনিক অথবা সেন্টার গুলো মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার নামে রোগীদের সাথে নানা রকম প্রতারণা করতে পারে।
আশঙ্কা কাটিয়ে এই সেবাকে জন পরিসরে আরও পরিচিত করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
MK4C-এর সেবা এবং সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস এর সভাপতি এবং আমর্ড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ,মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাক্তন উপদেষ্টা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল. (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-
“MK4C-এর টেলি সাইকিয়াট্রি সেবা মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসায় দেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। প্রান্তিক অঞ্চল গুলোতে ভালোভাবে পৌঁছতে পারলে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়বে বলে আমি মনে করি। এই সেবায় আমাদের প্রবাসীরা অনেক বেশী উপকৃত হবেন। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে যারা নানারকম মানসিক রোগে ভুগছেন, তাদের কাছে ডিজিটাল মাধ্যমের এই সেবা হয়ে উঠবে প্রবাসীবান্ধব।”
MK4C-এর সেবা নিতে এখানে ক্লিক করুন
মনের খবর টিভির স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রোগ্রাম দেখতে ক্লিক করুন