গল্প, কবিতা, উপন্যাস, খেলা, নাটক বা সিনেমা এসব কিছুকেই আমরা মনের খোরাক বলে মনে করি। আবার কেউ কেউ এসবকে বলে থাকেন মানসিক বিকাশের মাধ্যম। সহজ কথায় এ সবকিছুই মনকে প্রফুল্ল রাখে, আরো উন্নত করে।
গল্প, কবিতা, উপন্যাস, খেলা, নাটক বা সিনেমা এসব কিছুকেই আমরা মনের খোরাক বলে মনে করি। আবার কেউ কেউ এসবকে বলে থাকেন মানসিক বিকাশের মাধ্যম। সহজ কথায় এ সবকিছুই মনকে প্রফুল্ল রাখে, আরো উন্নত করে। এমন আরো অনেক বিষয়ই আছে যা শরীরকেও সুস্থ রাখে বা রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো সুস্থতা বা অসুস্থতার হিসাব করতে গেলে মনের অবস্থানটি কোথায় থাকে? কেউ কি আমরা সুস্থতা অসুস্থতার সাথে যে মনেরও একটা সম্পর্ক আছে, তা ভাবি? না কেবল শরীরের হিসাবটিই করে থাকি?
সুস্থতা অসুস্থতা যেন সম্পূর্ণ শরীরেরই বিষয়। আমরা যখন কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করি- কেমন আছেন? উত্তর আসে- ভালো আছি বা ভালো নেই।
সত্যি হলো, আমরা যে উত্তরটা দিই তা শুধু শরীরের ভালো আর খারাপ থাকাকেই মনে রেখেই দেই। কিন্তু মনের খবর কতটুকুই থাকে সেখানে?
অপরপক্ষে মনের অসুস্থতা নিয়ে একধরনের বিশ্বাস আমাদের মধ্যে বিদ্যমান তা হলো–পাগলামি। একজন মানুষ যখন নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারায় বা নিজেকে বুঝতে না পারে কেবল তখনই তাকে আমরা মনের অসুস্থতা বলে ধরে নিই। বাস্তবে মনের উপর এ নিয়ন্ত্রণহীনতাই শুধু মানসিক অসুস্থতা বা রোগ নয়। নিয়ন্ত্রিত মনও অসুস্থ হতে পারে। এবং এদের সংখ্যাই বেশি। শুধু বেশি নয়। অনেক বেশি।
যদি শুধু নিয়ন্ত্রণহীনদের কথাও বলি, সেক্ষেত্রেও পরিণতি দাঁড়ায় আবার আরেক রকম, আর তা হচ্ছে চিকিৎসা নিয়ে। আমরা ভাবতে বসি এর চিকিৎসা কোথায় হবে? এটি কী ডাক্তার-ওষুধের বিয়য়! নাকি অন্য কিছু! কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, এসবের আবার চিকিৎসা কিসের! এসবতো অন্য বিষয়!
যদিও সাম্প্রতিককালে এসব বিশ্বাসের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবুও এসবকে ঘিরে অনেক সংস্কার এখনো বিশাল জায়গা দখল করে আছে। আর এতে সত্যিকারের সমস্যা হচ্ছে যারা রোগে ভুগছেন তাদের এবং তাদের পরিবারের।
প্রচলিত অনেক বিশ্বাসই আমাদের চারপাশে আছে। যেমন-জ্বিন, ভূত-প্রেতের আছর, তাবিজ- কবজ থেকে শুরু করে অনেক কিছু। অনেকেই আবার এসব বিষয়ের ভিত্তিহীনতা সম্পর্কেও অনেক কিছু জানেন। তবুও আমাদের চারপাশের সমাজ একেবারেই এথেকে মুক্ত নয়।
একটি ছোট্ট উদাহরণ দেওয়া যাক।আমার মতো অনেক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রায়ই রোগী বা রোগীর আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে একটি কথা শুনে থাকেন। তা হলো- “ওকে বা আমাকে প্রথমে জিনে ধরেছিল, একজন পীর বা হুজুর সাহেব অনেক কষ্ট করে জ্বিন ছাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জ্বিন যাওয়ার সময় মাথার বেশ কিছু ক্ষতি করে গেছেন। সেটিকে ঠিক করতে হলে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য লাগবে। তাই আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি।”
অর্থাৎ জ্বিনের নষ্ট করা অংশের চিকিৎসার দায়িত্ব এখন চিকিৎসকের! কিন্তু মজার বিষয় হলো চিকিৎসা দেওয়ার পর, সে চিকিৎসাপত্র নিয়ে আবার তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই জ্বিন হুজুরের সাথে দেখা করেন এবং তাঁর অনুমতি নিয়েই সে ওষুধ খান। কোনো কারণে যদি তিনি ওষুধ খেতে নিষেধ করেন তবে সেই ওষুধ রোগীরা খান না।
এথেকেই বোঝা যায় মানসিক রোগ বা এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা কোথায় আছি। হাস্যকর হলেও সত্য যে, আমরা এ বিষয়ে অনেকটাই এগিয়েছি। আগে যেখানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবাই হতো না, এখন অন্তত জ্বিন-হুজুর বা পীর সাহেবরাই বলে দিচ্ছেন, বাকি অংশের চিকিৎসা মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাই করবেন। একে নিশ্চয়ই অগ্রগতি হিসাবেই ধরা যায়।
মানসিক রোগীরা আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিগৃহীত। কী রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে, কী চিকিৎসার ক্ষেত্রে।
মন ছাড়া মানুষ হয় না আমরা জানি। তবুও মনের স্বাস্থ্যগত দিকটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত।
একটি বিষয় স্পষ্ট করে জানা থাকা ভালো, তাহলো শরীরের মতই মনেরও পরিচর্যা, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা এই তিনটি দিকই আছে। স্বাস্থ্য বলতে তাই শুধু শরীরের কথা মনে রেখে, মনের স্বাস্থ্যের অস্তিত্বকে ভুলে গেলে চলবে না। মনের অসুবিধার জন্য মানুষ শুধু নিয়ন্ত্রণহীনই হয় না, শরীরেরও বিভিন্ন রকমের অসুবিধা হয়। ভালো থাকার জন্য তাই মনের খবরটিও ভালো করে রাখা চাই।
সুস্থতা অসুস্থতা যেন সম্পূর্ণ শরীরেরই বিষয়। আমরা যখন কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করি- কেমন আছেন? উত্তর আসে- ভালো আছি বা ভালো নেই।
সত্যি হলো, আমরা যে উত্তরটা দিই তা শুধু শরীরের ভালো আর খারাপ থাকাকেই মনে রেখেই দেই। কিন্তু মনের খবর কতটুকুই থাকে সেখানে?
অপরপক্ষে মনের অসুস্থতা নিয়ে একধরনের বিশ্বাস আমাদের মধ্যে বিদ্যমান তা হলো–পাগলামি। একজন মানুষ যখন নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারায় বা নিজেকে বুঝতে না পারে কেবল তখনই তাকে আমরা মনের অসুস্থতা বলে ধরে নিই। বাস্তবে মনের উপর এ নিয়ন্ত্রণহীনতাই শুধু মানসিক অসুস্থতা বা রোগ নয়। নিয়ন্ত্রিত মনও অসুস্থ হতে পারে। এবং এদের সংখ্যাই বেশি। শুধু বেশি নয়। অনেক বেশি।
যদি শুধু নিয়ন্ত্রণহীনদের কথাও বলি, সেক্ষেত্রেও পরিণতি দাঁড়ায় আবার আরেক রকম, আর তা হচ্ছে চিকিৎসা নিয়ে। আমরা ভাবতে বসি এর চিকিৎসা কোথায় হবে? এটি কী ডাক্তার-ওষুধের বিয়য়! নাকি অন্য কিছু! কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, এসবের আবার চিকিৎসা কিসের! এসবতো অন্য বিষয়!
যদিও সাম্প্রতিককালে এসব বিশ্বাসের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবুও এসবকে ঘিরে অনেক সংস্কার এখনো বিশাল জায়গা দখল করে আছে। আর এতে সত্যিকারের সমস্যা হচ্ছে যারা রোগে ভুগছেন তাদের এবং তাদের পরিবারের।
প্রচলিত অনেক বিশ্বাসই আমাদের চারপাশে আছে। যেমন-জ্বিন, ভূত-প্রেতের আছর, তাবিজ- কবজ থেকে শুরু করে অনেক কিছু। অনেকেই আবার এসব বিষয়ের ভিত্তিহীনতা সম্পর্কেও অনেক কিছু জানেন। তবুও আমাদের চারপাশের সমাজ একেবারেই এথেকে মুক্ত নয়।
একটি ছোট্ট উদাহরণ দেওয়া যাক।আমার মতো অনেক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রায়ই রোগী বা রোগীর আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে একটি কথা শুনে থাকেন। তা হলো- “ওকে বা আমাকে প্রথমে জিনে ধরেছিল, একজন পীর বা হুজুর সাহেব অনেক কষ্ট করে জ্বিন ছাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জ্বিন যাওয়ার সময় মাথার বেশ কিছু ক্ষতি করে গেছেন। সেটিকে ঠিক করতে হলে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য লাগবে। তাই আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি।”
অর্থাৎ জ্বিনের নষ্ট করা অংশের চিকিৎসার দায়িত্ব এখন চিকিৎসকের! কিন্তু মজার বিষয় হলো চিকিৎসা দেওয়ার পর, সে চিকিৎসাপত্র নিয়ে আবার তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই জ্বিন হুজুরের সাথে দেখা করেন এবং তাঁর অনুমতি নিয়েই সে ওষুধ খান। কোনো কারণে যদি তিনি ওষুধ খেতে নিষেধ করেন তবে সেই ওষুধ রোগীরা খান না।
এথেকেই বোঝা যায় মানসিক রোগ বা এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা কোথায় আছি। হাস্যকর হলেও সত্য যে, আমরা এ বিষয়ে অনেকটাই এগিয়েছি। আগে যেখানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবাই হতো না, এখন অন্তত জ্বিন-হুজুর বা পীর সাহেবরাই বলে দিচ্ছেন, বাকি অংশের চিকিৎসা মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাই করবেন। একে নিশ্চয়ই অগ্রগতি হিসাবেই ধরা যায়।
মানসিক রোগীরা আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিগৃহীত। কী রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে, কী চিকিৎসার ক্ষেত্রে।
মন ছাড়া মানুষ হয় না আমরা জানি। তবুও মনের স্বাস্থ্যগত দিকটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত।
একটি বিষয় স্পষ্ট করে জানা থাকা ভালো, তাহলো শরীরের মতই মনেরও পরিচর্যা, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা এই তিনটি দিকই আছে। স্বাস্থ্য বলতে তাই শুধু শরীরের কথা মনে রেখে, মনের স্বাস্থ্যের অস্তিত্বকে ভুলে গেলে চলবে না। মনের অসুবিধার জন্য মানুষ শুধু নিয়ন্ত্রণহীনই হয় না, শরীরেরও বিভিন্ন রকমের অসুবিধা হয়। ভালো থাকার জন্য তাই মনের খবরটিও ভালো করে রাখা চাই।