প্রতিদিনের চিঠি – আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সেসবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন ‘প্রতিদিনের চিঠি’ বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আপনিও লিখতে পারেন আমাদেরকে এই ইমেইলে monerkhaboronline@gmail.com। সেজন্য ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
সমস্যা – আমার নাম জাহিদ মিয়া। আমার বন্ধুর নাম সাকিল। বয়স ৩০। কচুয়া, চাঁদপুর। আমরা সৌদি আরব প্রবাসী। দু’জন একই রুমে থাকি। সাকিল কয়েক মাস ধরে রাতে ঘুম থেকে চিৎকার করে ওঠে। আর ভয়ে কাঁপতে থাকে। জিজ্ঞেস করলে কিছুই বলতে পারে না।
আঙুল দিয়ে কী যেন দেখায়। আমি কিছুই দেখতে পাই না। পরের দিন সকালে জিজ্ঞাসা করলাম- ‘কিরে রাতে কী হয়েছিল, জোরে জোরে চেঁচিয়ে কান্নাকাটি করলি কেন?’। সাকিল বলল, ‘স্বপ্নে আজরাঈল! বিরাট ভয়ঙ্কর চেহারার দানব এসেছে জান কবজ করতে।’ এখন সে রুমে প্রচণ্ড ভয় পায়। রাতে ঘুমায় না। ওর চোখে ঘুম আসবে আসবে এ রকম হলে শরীরটা ঝাটকা দিয়ে শুরু করে কান্নাকাটি। সামান্য শব্দে চমকে ওঠে। ওর জন্য আমিও রাতে ঘুমাতে পারি না।
এখানে অনেক হুজুরের কাছ থেকে তেলপড়া, পানিপড়া এনে দিয়েছি কোনো কাজ হয়নি। পরে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার বললেন, এটা নাকি মানসিক রোগ। ডাক্তার বলেছিলেন বাংলাদেশে গিয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেবাতে। এদিকে সাকিল জমি বিক্রি করে সৌদি আরব এসেছে মাত্র ১ বছর। ডাক্তার বিস্তারিত ঘটনা বিবেচনা করে (ডাক্তারের নির্দেশমতো) মনের খবর এর শরণাপন্ন হলাম।
পরামর্শ – ধন্যবাদ প্রশ্নের জন্য। এই রোগীর সমস্যা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা দরকার ছিল। রোগীর আরো কোনো সমস্যা আছে কিনা, কোনো ধরনের বিচুনি হয় কিনা, তার মধ্যে কোনো ভয়-ভীতি কাজ করে কিনা, সে মানসিকভাবে কোনো টেনশন বা ডিপ্রেশনে ভুগছে কিনা, তার কোনো ধরনের মাথা ব্যথা আছে কিনা- এসব আরো অনেক তথ্য জানার প্রয়োজন ছিল। কারণ পরিপূর্ণ তথ্য জানা না থাকলে কোনো রোগেরই সঠিক ডায়াগনোসিস করা সম্ভব নয়।
যেহেতু রোগীর সম্পর্কে অনেক তথ্যই আমাদের অজানা, তাই প্রশ্নের মাধ্যমে যতটুকু জানা গেল তাতে বলা যাচ্ছে-সে সম্ভবত নাইট টেরর ডিজঅর্ডার নামে এক ধরনের রোগে ভুগছে। এই রোগে রোগী ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে, হাঁটাহাঁটি বা চলাফেরা করে, কথাবার্তা বলে, অনেক সময় ঘুমের মধ্যে মশারি বা অন্যকিছু ছিঁড়ে ফেলে। কিন্তু সকালে উঠে সে কিছুই বলতে পারে না।
অর্থাৎ এ ব্যাপারে তার কোনো স্মৃতি থাকে না। এটা একটা কারণ হতে পারে। এছাড়া তার মধ্যে কোনো কারণে ডিপ্রেশন আসতে পারে, কোনো ধরনের অ্যাংজাইটি থাকতে পারে বা কোনো পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারও হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, কেউ হয়তো কোনো ধরনের টেরর অ্যাটাকে পড়ে বা এমন কোনো ভীতিজনক এক্সপেরিয়েন্স হয় যেটা পরবর্তীতে ট্রমা হিসেবে দেখা দেয়।
অতএব বলা যাচ্ছে, তার সমস্যার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। আর সেটা বের করার জন্য তাকে স্পেসিফিক কিছু প্রশ্ন করতে হবে। যদি দেখা যায় তার অন্য কোনো সমস্যা নেই, তাহলে এটাকে আমরা নাইট টেরর ডিজঅর্ডার বলতে পারি।
এটা এক ধরনের স্লিপ ডিজঅর্ডার এবং অনেক সময় এই সমস্যাগুলোর সঙ্গে সঙ্গে রোগীর মধ্যে অনেক টেনশনও কাজ করে। তখন অল্প পরিমাণে ক্লোনালজিপাম বেলে এই সমস্যা কমে যায়। তবে সবচেয়ে ভালো হয়, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করে সমস্যাগুলো বিস্তারিত জানিয়ে চিকিৎসা নিলে।
পরামর্শ দিয়েছেন—
অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।
- আসুন জেনে নেই ভয়ের সীমানা কতটুকু? –
- এপোয়েন্টমেন্ট নিতে যোগাযোগ করুন-Prof. Dr. Shalahuddin Qusar Biplob
- চেম্বার – MK4C -মনের খবর ফর কেয়ার
মগবাজার রেইল গেইট।
নাভানা বারেক কারমেলা, লিফটের ৩,
(ইনসাফ কারাকাহ হাসপাতালের বিপরীতে)।
চেম্বার সিরিয়াল – ০১৮৫৮৭২৭০৩০
আরও দেখুন-