হুরে জান্নাত শিখা
সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ, ঢাকা
বুলিং এবং র্যাগিং বর্তমান সময়ে তরুণ বয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য একটি আতঙ্কের নাম। এর ভয়াবহতা এত বেশী যে এর জন্য অনেক তরুণ শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নেয়। এ বিষয়টি প্রতিহত করার দায়িত্ব প্রায় সকলের। তবে প্রধান দায়িত্বটি অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকবৃন্দের।
এই নির্যাতন রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে এবং লিফলেট, সেমিনার, পোস্টার ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এর কুফল সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। সকল ছেলেমেয়ে র্যাগিং বা বুলিং করে না। যারা করে তাদের গভীর মানসিক সমস্যা থাকে। এ তরুণ অংশটিকে চিহ্নিত করে তাদের বিশেষ নির্দেশনা, গাইডেন্স প্রদান করা দরকার। যারা বুলিং র্যাগিং এর সাথে জড়িত থাকে তাদের মধ্যে ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স থাকে। এদের ইতিবাচক নেতৃত্ব, সাংগঠনিক কার্যক্রম ও তাদের যোগ্যতার ইতিবাচক মূল্যায়ন করা হলে এ প্রবণতা কমবে।
অপরদিকে নবাগত শিক্ষার্থীদের মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাদের আত্নবিশ্বাস, গ্রহনীয়তা ও প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেবার কৌশল শেখাতে হবে। এ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠান মনোবিজ্ঞানী এবং অন্যান্য শিক্ষকের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে পারে। প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারে।
বুলিং এবং র্যাগিং মূলত নির্যাতন। প্রথমে প্রয়োজন আইনের দিক সম্পর্কে তরুণ শিক্ষার্থীদের সচেতন করা। এরপর আসছে এর জনসচেতনতা বৃদ্ধির দিক নিয়ে কাজ করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি মনোবিজ্ঞানী থাকেন তাহলে তিনি দু’পক্ষকে নিয়েই কাজ করবেন। যদি না থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠান মনোবিজ্ঞানী এবং সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় নিয়মিত মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম করবেন।
সবশেষে রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধ করি সবচেয়ে বেশি। এ সামাজিক ক্ষত সম্পর্কে রাষ্ট্র যখন সচেতন হবে তখন রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। কারণ কোন সরকারই নির্যাতনকারীর পক্ষে থেকে লাভবান হয় না।