দুশ্চিন্তা বা বিষণ্ণতা মানুষের শরীর আর মন দুটোই আচ্ছন্ন করে। অনেক সময় দুটো বিষয় একসাথে একই সময় মানুষকে আক্রান্ত করে।যখন এই বিষয় দুটি মানুষকে আচ্ছন্ন বা আক্রান্ত করে সে সময় মানুষের অনুভূতি কেমন হয়, সে বিষয় আজকে তুলে ধরা হলো।
দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষের অনুভূতিঃ
১. দুশ্চিন্তা হলে সবসময় মানুষের মাথায় চিন্তা ঘোরে। বিশেষত অসুখ বা অসুখের চিকিৎসা সংক্রান্ত চিন্তা।
২. দুশ্চিন্তা হলে সবচেয়ে খারাপ যা পরিনতি হতে পারে, মনে হয় যে সেটাই ঘটবে। যেমন: ধরুন মনে হতে পারে যে অসুখটা হয়েছে, সেটা খুব বাড়াবাড়ি হবে বা মারা যেতে পারি।
৩. দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষ বুকের ধুকপুকানি শুনতে পায় (বুক ধড়ফড় করা)।
৪. দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষ মাংসপেশিতে ব্যথা বা টানটান ভাব।
৫. রিল্যাক্স অনুভব না করতে পারা।অর্থাৎ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষ রিল্যাক্স অনুভব করতে পারে না।
৬. দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষ প্রচুর পরিমানে ঘামে।
৭. দ্রুত নিশ্বাস নেওয়া (ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া)।
৮. দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষের মাথা ঘোরে। মনে হয় যে এই বুঝি অজ্ঞান হয়ে যাব।
৯. গ্যাস অম্বল হওয়া বা বারবার পায়খানায় যাওয়া।
বিষণ্নতাগ্রস্থ মানুষের অনুভূতিঃ
১. মানুষ সবসময় বিষণ্ন বোধ করবে এবং মনে করবে যে এই বিষণ্নতা কোনোদিন কাটবে না।
২. জীবনে কোনো কিছুতে বা কোনো কাজেই উৎসাহ থাকবে না।
৩. বিষণ্নতাগ্রস্থ মানুষ কোনো কিছু উপভোগ করতে পারবে না।
৪. ছোটোখাটো ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
৫. সবসময় অসম্ভব বেশি ক্লান্ত লাগতে থাকে।অস্বস্তি বা অস্থিরতা বোধ করে।
৬. ক্ষুধা না লাগা এবং ওজন কমা (কিছু ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা হয়, ক্ষুধা আর ওজন দুটোই বাড়ে)।
৭. ঘুম না আসা আর সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া।
৮. বিষণ্নতাগ্রস্থ মানুষের সহবাসে অনীহা থাকে।
৯. আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং নিজেকে অপদার্থ বা অক্ষম ভাবতে শুরু করে।
১০. সময়ের সাথে সাথে অন্যের সঙ্গ বর্জন করতে থাকে।
১১. মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
১২. নিজের সম্বন্ধে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এবং পৃথিবী সম্পর্কেই সামগ্রিক হতাশা। মনে হতে পারে যে আমি কোনোদিন ভালো হব না, বা মনে হতে পারে আমি একেবারেই খরচের খাতায়।
১৩. আত্মহত্যার কথা মনে হতে পারে। বিষণ্নতায় এটা প্রায়ই হয়। এরকম মনে হলে মনের মধ্যে চেপে না রেখে সেটা নিয়ে কথা বলা ভালো ।
১৪. এর কিছু কিছু উপসর্গ যথা- অনিদ্রা, অক্ষুধা বা ক্লান্ত লাগা আপনার শারীরিক অসুস্থতা বা তার চিকিৎসার জন্য হতে পারে। আপনি যদি এ ব্যাপারে আপনার ডাক্তার বা নার্সের সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে তিনি নির্ণয় করতে পারবেন এর কারণ কী? বিষণ্নতা নাকি শারীরিক অসুস্থতা?