কেউ আত্মহত্যা করল কিংবা হত্যা মাঝে মাঝে মানসিক রোগীর অযুহাত দিয়ে আসল ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। মানুষের সাধারণ গতিবিধি থেকে একটু আলাদা কিছু হলেই তাকে বলে বসেন মানসিক রোগী।
বাংলাদেশেও ঘটেছে এরকম বেশকিছু ঘটনা। উদহারণস্বরূপ বলা যায়, যমেন বিকৃত যৌনাচার- ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের এক ডোমের সহকারীর কথা, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে নারীদের মরদেহের সঙ্গে ‘যৌন লালসা চরিতার্থ’ করতো। এই আচরণকে একটি মানসিক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করেছে মনরোগ বিশেষজ্ঞরা যাকে ‘নেক্রোফেলিয়া’ বলা হয়।
তবে দেশের এই ঘটনাই কিন্তু প্রথম নয়। বিশ্ব এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে বারবার। ২০১০ সালে ফিলিপাইনের জামবোয়াগনা শহরের একটি ঘটনা ছিল এমন, কবরস্থান থেকে একে একে বেশ কিছু লাশ চুরি হতে থাকে। লাশগুলোর বেশিরভাগই ছিল তরুণীদের। পরে পুলিশ সেসব মৃতদেহ কবরস্থানের পাশের কিছু খুঁটিতে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় ঝুলানো দেখতে পায়। মৃতদেহগুলোর সঙ্গে যৌনক্রিয়া ঘটার চিহ্ন পায় পুলিশ। কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে একদল নেক্রোফিলিয়ার কাজ বলে মনে করেন।
এরপর ২০১৮ সালের কামরুজ্জামান সরকার নামক পূর্ব বর্ধমানের কালনার এক বাসিন্দা এমনই এক ভয়ংকর কাজ করেন। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে ছিল তার পরিবার। তবে সংসারে তার একেবারেই মন ছিল না । তার টার্গেট ছিল নারীরা। ২০১৩ সাল থেকে ১১ জন নারীর উপর হামলা চালিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৭ জনই খুন হয়েছেন। এলাকায় একের পর এক নারীর উপর হামলা চালিয়ে পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল সে। শুধু খুন করেই ক্ষান্ত হত না সে। এসব নারীদের খুন করে তাদের সঙ্গে যৌনাচারও করত। তিনিও ছিলেই একই রোগের স্বীকার।
যুগে যুগে মানসিক রোগকে নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। প্রাচীনকালে মানুষ মনোরোগকে কখনো জীন ভূতের আছর, কখনো অশুভ আত্মা, কখনো কালো বা দূষিত রক্তের প্রভাব মনে করেছে। যেসব রোগীর আচরণ উচ্ছৃঙ্খল হতো, তাদের ওপর অশুভ আত্মা প্রভাব রয়েছে এবং যাদের আচরণে ধর্মীয় ও গূঢ়ভাব প্রকাশ পেত তাদের ওপর শুভ আত্মা ভর করেছে বলে মনে করা হতো। চিকিৎসা হিসেবে মানসিক রোগীদের মাথার খুলিতে ছিদ্র করা হতো এবং মনে করা হতো অশুভ আত্মা এই ছিদ্র পথে বের হয়ে যাবে।
প্রাচীনকালের এই ভুল ধারণা বর্তমানের ফোর জি যুগের অনেক মানুষ বিশ্বাস করে। এখনো মানসিক চিকিৎসার জন্য মানুষকে মানত করা বা ঝারফুকের ওপর নির্ভর করতে দেখা যায়। তবে সেই প্রাচীনযুগের মানুষ হয়েও হিপোক্র্যাটস মানসিক রোগের কারণ হিসেবে মস্তিস্কের আক্রান্ত হওয়াকে দায়ী করেছেন। হিপোক্র্যাটস অব কস ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের এক চিকিৎসক। বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি না হওয়ায় সে সময় তিনি তার মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। সেটি না পারলেও তার করা মানসিক রোগের তিনটি ধরন (ম্যানিয়া, বিষাদরোগ ও ব্যক্তিত্বের গোলযোগ) নিয়ে এখনো মানুষ চর্চা করে।
শুধু তাই নয় তার চিকিৎসা পদ্ধতির কিছু কিছু অংশ আরো বৈজ্ঞানিকভাবে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে। মধ্যযুগে মনোরোগীদের ডাইনি বা পিশাচ মনে করে তাদের নির্মূল করার অভিযান চালানো হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রে মানবিক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠলেও চিকিৎসা পদ্ধতির কিছুটা কমতি থেকেই যাচ্ছিল। রোগীদের অন্ধকার কারাকক্ষে বা ‘উন্মাদাগারে’ কাটাতে হতো। কিছুদিন আগ পর্যন্ত আমাদের দেশের মানসিক হাসপাতালকে বলা হতো ‘পাগলাগারদ’।
তবে কয়েকটি মানসিক রোগ রয়েছে। যেগুলো আক্রান্ত হলে মানুষ ধীরে ধীরে অপরাধের দিকে ধাবিত হয়। বিশেষজ্ঞরা এমনই সাতটি মানসিক রোগকে আলাদাভাবে তালিকাভুক্ত করেছেন। যেগুলো মানুষকে ঢেলে দেয় অপরাধের দিকে। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েসন প্রকাশিত ডায়গনোস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অব মেন্টাল ডিসওর্ডারসে। সংজ্ঞাটি সহজবোধ্য করে বললে বলা যায়, মানসিক রোগ হলো মানুষের এমন কতগুলো আবেগীয়, শারীরিক বা আচরণগত সমস্যার বা অস্বাভাবিকতার সমষ্টি, যা ব্যক্তিকে কষ্ট দেয় বা তাঁর সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলোকে ব্যাহত করে।
জানা যাক সেই সাতটি মানসিক ব্যাধির কথা । এসব রোগের লক্ষণ আপনার আশেপাশে কারো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নেক্রোফিলিয়া
‘নেক্রোফিলিয়া’ এক ধরণের মানসিক যৌন ব্যাধি। যারা এই ব্যাধিতে আক্রান্ত তাদের বলা হয় নেক্রাফাইল যারা মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে ১৯৮৯ সালে ১২২ জন নেক্রোফইল ব্যক্তির তথ্য পর্যালোচনা করে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গবেষণায় বলা হয়, ‘বাধা দেবে না বা প্রত্যাখ্যান করবে না’, মূলত এমন যৌন সঙ্গী পাওয়ার বাসনা থেকে মরদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করে থাকে নেক্রোফাইলরা। অনেক সময় তারা এমন পেশা নির্ধারণ করে, যেখানে মরদেহের আশেপাশে থাকার সুযোগ থাকে তাদের।
তবে গবেষণার জরিপে পর্যালোচনা করা ১২২ জনের কয়েকজন মরদেহের আশেপাশে থাকার সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও হত্যা করার পর মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন বলে উঠে আসে প্রতিবেদনে।
পেডোফিলিয়া
শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বা যৌন হয়রানি, নির্যাতন করার যৌন বিকৃতিকে ‘পেডোফিলিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই ব্যাধিতে আক্রান্তদের চিহ্নিত করা হয় পেডোফাইল হিসেবে। শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ তৈরি হওয়ার ফলে শিশুদের যৌন নির্যাতন করার সমস্যা এবং এরকম ঘটনার হার বৃদ্ধি পাওয়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জন্যই এখন চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে অনলাইনে শিশুদের সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক আচরণের হার সম্প্রতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
বর্তমান মহামারির মধ্যেই ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশে অনলাইনে শিশুদের সঙ্গে যৌন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনমূলক আচরণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে বলে এ বছরের মে মাসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ইউরোপোলের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনটিতে ধারণা প্রকাশ করা হয়, শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টির সুযোগ কাজে লাগাতে চায় পেডোফাইলরা।
যুক্তরাজ্যের পত্রিকা ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ এ বছরের মার্চ মাসে একটি খবর প্রকাশ করে, যেখানে শিশুদের যৌন হয়রানি ও নির্যাতন থেকে সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি সংস্থা ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনকোওয়ারি ইনটু চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ’এর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয় যে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের পুলিশ প্রতি মাসে গড়ে ‘৪০০ থেকে ৪৫০ জন’ অভিযুক্তকে ‘অনলাইনে শিশুদের সঙ্গে যৌন নির্যাতনমূলক আচরণ করায়’ গ্রেফতার করে।
আমাদের দেশেও এই রোগীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। গত মাসে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ‘শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি করে ছড়িয়ে’ দেয়ার। তবে শুধু অনলাইনে নয়, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের সঙ্গে যৌন সহিংসতা, যৌন হয়রানিমূলক আচরণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে।
পেডোফিলিয়ার সংজ্ঞা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত একাধিক গবেষণা প্রতিবেদনে ধারণা প্রকাশ করা হয় যে, শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চাওয়া সব ব্যক্তিকেই পেডোফাইল বলা যায় না, আবার সব পেডোফাইলরা শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় না।
অধিকাংশ গবেষণাতেই ধারণা প্রকাশ করা হয়, প্রাপ্তবয়সে পেডোফিলিয়ার উপসর্গ প্রকাশিত হওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগ শৈশবে শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সাধারণত পেডোফাইলদের অধিকাংশ পুরুষ হলেও ২০১০ সালে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এক রিপোর্টে প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের দ্বারা ছেলে বা মেয়ে শিশুর যৌন নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনাও তুলে ধরা হয়।
এক্সিবিশনিজম
অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিকে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করার মানসিক বিকৃতিকে ‘এক্সিবিশনিজম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘সেজ পাবলিকেশন জার্নালে’ ২০১৪ সালে প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, শহরাঞ্চলে মূলত গণপরিবহনে এই ধরণের ঘটনা ঘটে এবং মূলত নারীরা এর ভুক্তভোগী হয়ে থাকে। এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে নারীরা প্রায়ই এই ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হন।
ইংল্যান্ডের একটি প্রধান মেট্রোপলিটান শহরের ৪৫৯ জন শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ চালিয়ে গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়। ঐ প্রতিবেদনে আরো বলা হয় বয়স্ক নারীদের এই ধরণের ব্যবহারের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে।
আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত মানসিক অসুস্থতার মাত্রা যাচাইয়ের পদ্ধতি ‘ডায়গনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকাল ম্যানুয়েল অব মেন্টাল ডিজঅর্ডার’ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি আগের ছয় মাসের মধ্যে অনুমতি ছাড়া অন্য কাউকে নিজের যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করার তীব্র বাসনা অনুভব করেন এবং ঐ বাসনা উদ্রেক হওয়ার ফলে কর্মক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত জীবনে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে কষ্টের সম্মুখীন হন, তাহলে ঐ ব্যক্তি ‘এক্সিবিশনিজম’ সমস্যায় আক্রান্ত।
ফ্রটারিজম
অনুমতি ব্যতীত ভুক্তভোগীর দেহের সঙ্গে নিজের যৌনাঙ্গ ঘর্ষণের বিকৃতিকে ‘ফ্রটারিজম’ বা ‘টাচেরিজম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ ধরণের অপরাধ সাধারণত জনসমাগমের জায়গা বা ভিড় থাকা গণপরিবহনে বেশি সংঘটিত হয়ে থাকে।
২০১৭ সালে অক্সফোর্ড ক্লিনিকাল সাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে যৌন হয়রানিমূলক অপরাধগুলোর মধ্যে এটির বিষয়েই সবচেয়ে কম পরিমাণ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় ধারণা প্রকাশ করা হয় যে শারীরিক ও মানসিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের অপ্রাপ্তি থেকে এই ধরণের আচরণ করতে পারে অপরাধীরা।
আবার অনেক ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটনের সময় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ঘনিষ্ঠতা আছে বলে কল্পনা করে নেন অপরাধী – এমনটাও উঠে আসে প্রতিবেদনে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরণের অপরাধের ভুক্তভোগী হয়ে থাকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও মানসিক বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ধরণের অপরাধের অভিযোগ জানানো হয় না বলে এটির কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সেক্সুয়াল স্যাডিজম
আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সংজ্ঞা অনুযায়ী, অপর ব্যক্তির শারীরিক বা মানসিক যন্ত্রণার কারণে যৌন উত্তেজনা বা তৃপ্তি লাভ করার কল্পনা, বাসনা করা বা ঐ ধরণের কার্যক্রম করাকে ‘সেক্সুয়াল স্যাডিজম’ বলা হয়ে থাকে।
তবে সেক্সুয়াল স্যাডিজমের সংজ্ঞা নিয়েও বিশেষজ্ঞদের মতা পার্থক্য থাকায় অ্যামেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন এমন ব্যক্তিদেরই সেক্সুয়াল স্যাডিস্ট হিসেবে গণ্য করার কথা বলেছে, যাদের নির্যাতনের ভুক্তভোগীরা যৌন মিলনের সময় যন্ত্রণা গ্রহণে সম্মত থাকেন না।
এর কারণ অনেক ক্ষেত্রেই যৌন মিলনের সময় যার ওপর শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা হয়, তিনি নিজেকে যন্ত্রণা দেয়ার অনুমতি দেন সঙ্গীকে।
পাইরোমেনিয়া
পাইরোমেনিয়া একটি ‘ইমপালস কন্ট্রোল ডিজঅর্ডার’ বা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার এক ধরণের ব্যাধি। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি সবকিছুতে আগুন লাগিয়ে দেয়ার তীব্র ইচ্ছা অনুভব করেন।
পাইরোমেনিয়াকদের আচরণ পর্যালোচনা করে ১৯৫১ সালে লেখা বই ‘প্যাথলজিকাল ফায়ারসেটিং’ এ ১,১৪৫ জন পাইরোমেনিয়াকের তথ্য বিশ্লেষণ করে লেখকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এই ধরণের ব্যবহারের সরাসরি সম্পর্ক থাকতে পারে। গবেষণায় পর্যালোচনা করা ১,১৪৫ জন ব্যক্তির প্রায় ৭০ ভাগের বুদ্ধিমত্তা ছিল গড় বুদ্ধিমত্তার নিচে।
ক্লেপটোম্যানিয়া
কারণ ছাড়াই অন্যের জিনিস চুরি করার প্রবণতাকে ‘ক্লেপটোম্যানিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই রোগে আক্রান্তদের বলা হয় ক্লেপটোম্যানিয়াক।ক্লেপটোম্যানিয়াকরা প্রয়োজন না থাকলেও অন্যের জিনিস তাদের অনুমতি ব্যতীত নিয়ে নেয়।
ঠিক কী কারণে মানুষ ক্লেপটোম্যানিয়াক হয়, সে সম্পর্কে এখনও সুস্পষ্টভাবে কিছু জানতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। তবে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে যে যথাযথ চিকিৎসায় ক্লেপটোমেনিয়াকদের রোগ ভালো হয়।
সুত্র : ডয়েচে ভেলে
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে